পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরো উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৪.৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৫.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) ঘূর্ণিঝড় 'জাওয়াদ' এ পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এটি আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১০৫ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫৫ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯৫ কিমি দক্ষি-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৯০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, এটি আগামীকাল নাগাদ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশ্যা উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি শেষ পর্যন্ত ওড়িশ্যা উপকূলে আঘাত করলে এর প্রভাবে বাংলাদেশের খুলনাসহ কিছু এলাকায় ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিপাত হতে পারে। এখন যে অবস্থায় আছে তাতে বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কিছু দেখছি না। কিন্তু আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে নিশ্চিত মন্তব্য করা কঠিন। তাই আমরা সতর্কভাবেই পর্যবেক্ষণ করছি।'
তবে ভারতীয় উপকূলে আঘাত করলেও বাংলাদেশে এর প্রভাবে অন্তত দু'দিন বৃষ্টিপাত কিংবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এদিকে, ঘূর্নিঝড় জাওয়াদ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে এটির নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ায় আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তর সাইক্লোনের জন্য সতর্ক সংকেতও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এখন দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্য বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিশাখাপত্তম থেকে ৭৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে নিম্নচাপটির সৃষ্টি হয়, যা এখন উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হচ্ছে।
এটি আরও পরের দিকে ঘনীভূত হয়ে শুক্রবার সকাল নাগাদ বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমে এসে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর এটি শেষপর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন