অভিজিৎ রায় ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পুরস্কার ঘোষণাকে বাংলাদেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘এই ঘোষণা খুনিদের ধরতে একটি ভালো উদ্যোগ। আমরা একে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) হোটেল রেডিসনে অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা বিষয়ক এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই পুরস্কার ঘোষণার বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রেই সফল হয়। আমি যতদূর শুনেছিলাম, ওসামা বিন লাদেনের খোঁজ তারা এভাবে পুরস্কার ঘোষণার মাধ্যমে পেয়েছিলো।’
তিনি বলেন, ‘আমাদেরও তো বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের ধরিয়ে দিতে পারলে বা খোঁজ দিতে পারলে পুরষ্কার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া আছে। কেউ যদি সঠিক তথ্য দিতে পারে, তাদের অবশ্যই সরকার পুরষ্কার দেবে।’
যুক্তরাষ্ট্র কি বাংলাদেশকে চাপে রেখেছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু লোকজন আছেন, তারা ক্রমাগত বিভিন্ন ইস্যুতে সেখানকার (যুক্তরাষ্ট্র) আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মিথ্যা তথ্য দেন। তারা বাংলাদেশে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্য অতিরঞ্জিত আকারে উপস্থাপন করেন। ওখানে এসব করার জন্য কিছু লোক আছেন, এখানেও (দেশে) কিছু লোক আছেন এ রকম।’
মন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশে কেউ মারা গেলে বলে যে ‘এক্সট্রা জুডিসিয়ারি কিলিং (বিনাবিচারে হত্যা) আর আমেরিকায় কেউ মারা গেলে বলা হয় ‘লাইন অব ডিউটি’। ’’
বাংলাদেশ কোনো চাপ অনুভব করছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘তারা তাদের নিয়মে চলছে। সরকারিভাবে তারা আমাদের এ বিষয়ে বিশেষ কিছু চাপ দেয়নি। তারা তাদের কাজ করছে, আমরা আমাদের কাজ করছি। একটা বিষয় হলো, কেউ যদি ভালো করে তখন তাদের এমনিতেই কিছু শত্রু তৈরি হয়।’
উল্লেখ্য, বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাসহ নানা জঙ্গি হামলায় দণ্ডিত চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেনকে ধরিয়ে দিলে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তর। সোমবার অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের সন্দেহভাজন পরিকল্পনাকারীদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণাসহ একটি পোস্টার প্রকাশ করে আমেরিকান স্টেট ডিপার্টমেন্ট। পরে এই পোস্টারটি সোমবার রাত ৮টার দিকে টুইটারে পোস্ট করা হয় ‘রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস’ নামে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে সংযুক্ত একটি অ্যাকাউন্ট থেকে।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়কে। এ সময় তার স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদও গুরুতর আহত হন। অভিজিৎ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ইতিপূর্বে ‘মেজর জিয়া’ নামে পরিচিত সৈয়দ জিয়াউল হক এবং আকরাম হোসেনের নাম উঠে এসেছে বিভিন্ন অনুসন্ধানে।
জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা করছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন