বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্ধারিত সময়ে শপথ না নেয়ায় বগুড়া-৬ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। ওই আসনে উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত থাকলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় দলটির নেতাকর্মীরা।
দলের একটি সূত্রের দাবি, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে মির্জা ফখরুল ফের ওই আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন। অন্য একটি সূত্রের দাবি, বিএনপি উপ-নির্বাচনে অংশ নেবে না। উপ-নির্বাচনেই যদি অংশ নেয় তাহলে শপথ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার কোনো দরকার ছিল না ফখরুলের।
সূত্র মতে, আগামীকাল শনিবার দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডন থেকে বৈঠকে যুক্ত হবেন। এই বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হবে।
এ বিষয়ে বিএনপির বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ মো. মোশারফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্থানীয় নেতাকর্মীরা তো নির্বাচনে যেতে চায়। কিন্তু সেটা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নয়। দল এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির কেন্দ্রীয় একজন নেতা বলেন, ‘উপ-নির্বাচনেও অংশ নেয়া উচিত। কারণ এ আসনটি বেগম খালেদা জিয়ার। তিনি এমন একজন নেত্রী যিনি কখনও নির্বাচন করে পরাজিত হননি। সে কারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসনটি ছাড়া উচিত হবে না। জয়লাভ করে প্রয়োজনে শপথ নেয়া থেকে বিরত থেকে প্রতিবাদ জানানো যাবে। তাই নির্বাচনে অংশ নেয়া উচিত এবং স্থানীয়ভাবে যারা জনপ্রিয় তাদের মধ্যে থেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করা উচিত।’
রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘বগুড়া- ৬ আসন নিয়ে এখনও দলের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা থাকতে পারে। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে নির্বাচনের বিপক্ষে। আমি শপথেরও বিপক্ষে। কেননা হাসিনার অধীনে আবার কিসের নির্বাচন?’
যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারও উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে।
তিনি বলেন, আমরা তো উপজেলা নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করি নাই। এই উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়া উচিত হবে না ।
তিনি বলেন, আমরা তো উপজেলা নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করি নাই। এই উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়া উচিত হবে না ।
নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য বলেন, ‘দলের ক্রান্তিকালে এসব নিয়ে দলীয় ফোরামের বাইরে কথা বলা উচিত হবে না। সুযোগ পেলে দলীয় ফোরামে বলতে চাই।’
ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাজাহান বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এটা নিয়ে দলে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
ব্যক্তিগত মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে আমার সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে সেখানে আমি আমার ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করবো।
ব্যক্তিগত মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে আমার সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে সেখানে আমি আমার ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করবো।
স্থায়ী কমিটির আরেক নেতা বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে চারজন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন। উপ-নির্বাচনে দল যাবে কি-না সে বিষয়েও তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ বিষয়ে তাকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের অধিনে কী নির্বাচন হবে, তা জাতি ৩০ ডিসেম্বর দেখেছে। সেই নির্বাচন নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা এখন চিন্তিত এ দেশ নিয়ে। দেশ এখন গণতন্ত্রবিহীন দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। কোথাও গণতন্ত্রের চিহ্ন নেই।
তিনি বলেন, আমি দলে একা কেনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আমাদের স্থায়ী কমিটি আছে, সেখানে বিষয়টি তুলবো, তারপর দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেব এই নির্বাচন সম্পর্কে। আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি নির্বাচনে অংশ নেব কি-না।
উল্লেখ্য, বগুড়া-৬ আসনে ২৪ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ আসনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ২৩ মে, বাছাই ২৭ মে, প্রত্যাহার ৩ জুন ও প্রতীক বরাদ্দ ৪ জুন।
(jagonews24)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন