বিনিয়োগকারীরা কেন শেয়ার বিক্রি করছে প্রশ্ন অর্থমন্ত্রীর

পুঁজিবাজার খারাপ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই- এমন ইঙ্গিত করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, বিনিয়োগকারীরা কেন কোন বিবেচনায় শেয়ার বিক্রি করছে তা আমার মাথায় ঢোকে না।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এসএমই প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারকে বাদ দিয়ে দেশের অর্থনীতি ভালো হবে না। উন্নয়নকে ধরে রাখতে হলে পুঁজিবাজারকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। পুঁজিবাজার খারাপ হবে কীভাবে? আমার মাথায় ঢোকে না।

তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি কিছুদিন পর একটি বাজেট আসবে। প্রত্যেক দেশেই যখন বাজেট হয় সেই বাজেটে কিছু প্রাধিকার থাকে। পুঁজিবাজারের সঙ্গে লাখ লাখ পরিবার জড়িত। এই লাখ লাখ পরিবারকে বাদ দিয়ে সরকার কখনও এগিয়ে যাওয়ার চিন্তা করে না। আপনারা সত্যিকারের যদি বিনিয়োগকারী হন তাহলে কিছু না কিছু ক্ষেত্র থাকবে যেখান থেকে আপনারা লাভবান হবেন।
‘কীভাবে কোন বিবেচনায় আপনারা এখন শেয়ার বিক্রি করছেন তা আমার মাথায় ঢোকে না। যখন শেয়ারের দাম বাড়বে তখন আপনাদের কাছে শেয়ার থাকবে না’ বলেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সরকারের যে অগ্রাধিকার জায়গাগুলো রয়েছে তার মধ্যে পুঁজিবাজার অবশ্যই রয়েছে। বাজেট থেকে পুঁজিবাজার অনেক সুযোগ-সুবিধা পাবে। কিন্তু শেয়ার তো বিক্রি করে ফেলেছেন। আমি আপনার ভালো চাই, শেয়ারবাজারের ভালো চাই। আমি ফেল করার মানুষ না।

দেশের পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী অবস্থায় যাওয়ার দরকার ছিল- এমন মন্তব্য করে তিনি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের পুঁজিবাজার ফলো করেন। ভারতকে ফলো করেন। আমরা মালয়েশিয়াকে ফলো করি, সিঙ্গাপুরকে ফলো করি, তাহলে বিপর্যয় আসার সম্ভাবনা থাকবে না। আমি বিশ্বাস করি আমাদের অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী অবস্থায় আছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন। ডিএসই চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে এতে সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বক্তব্য রাখেন।
খায়রুল হোসেন বলেন, স্মল ক্যাপ মার্কেট শেয়ারবাজারের গভীরতা বাড়াতে সহায়তা করবে। আর শেয়ারবাজারে লেনদেন বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া এই মার্কেটের মাধ্যমে কোম্পানির আয় ও কর্মসংস্থান বাড়বে। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে কাজ করবে এবং জিডিপিতে অবদান রাখবে।
তিনি বলেন, যারা স্মল ক্যাপের আওতায় শেয়ারবাজারে আসতে চান, তারা এমন উদাহরণ নিয়ে আসবেন-যা পরবর্তীতে এই মার্কেটে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
খায়রুল বলেন, শেয়ারবাজারে কিছু সমস্যা আছে। যেগুলো নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। যিনি শেয়ারবাজার শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে শেয়ারবাজার এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, শেয়ারবাজারের অব্যাহত পতনে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে এসেছে। কিন্তু কেন তাদেরকে রাস্তায় নামতে হলো। এর জন্য কারা দায়ী। তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। এটা কোনো ছেলেখেলা না।
তিনি বলেন, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার আন্তর্জাতিক মানের হবে বলে সাবেক অর্থমন্ত্রী বলতেন। কিন্তু তার কতটা হয়েছে। আর সেই ডিমিউচ্যুয়ারাইজেশনের মাধ্যমে আমাদেরকে ২৫ শতাংশ শেয়ার বেচতে বাধ্য করা হলো। প্রতিটি ২২ টাকা করে বিক্রিতেও বাধ্য করা হলো। পৃথিবীর কোন দেশে এভাবে শেয়ার বিক্রিতে বাধ্য করা করা হয়। এছাড়া শেয়ার বিক্রির সেই টাকাও এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে বাধ্য করা হচ্ছে। বাজারের বর্তমানে অবস্থায় বিনিয়োগ করলে, সেটা আবার হারিয়ে যাবে। এমনিতেই ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ করার উপায়।
তিনি বলেন, গত ৭ বছরে দুর্বল ও পচা কোম্পানি আনা হয়েছে। সেগুলো আবার বিনিয়োগকারীদের খাওয়ানো হয়েছে। সেসব কোম্পানিতে পুঁজি হারিয়ে গেছে। কিন্তু কারা এইসব পচা কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে এনেছে। কারা দায়ী। এদেরকে খুঁজে বের করার জন্য আপনি (অর্থমন্ত্রী) একটি কমিশন গঠন করুন। আর ভবিষ্যতে কোনো পচা কোম্পানি যাতে শেয়ারবাজারে না আসে, সেদিকে বিএসইসির চেয়ারম্যান নজর দিন।
(jagonews24)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget