বাংলাদেশে গত বছরের জুলাই অগাস্টের আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে 'শাহবাগ ব্লকেড ও গণজমায়েত' কর্মসূচি পালন করছে সদ্যগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি সহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যে ক্ষমতাচ্যুত করার নয়মাস পরে এই দাবি নিয়ে তারা রাস্তায় নেমেছে কেন?
জুলাই গণ অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনের পতন হয় গত বছরের পাঁচই অগাস্ট। পরে সেই অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্ব গঠন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি নামের রাজনৈতিক দল।
শুরু থেকেই তারা ছাত্র জনতার আন্দােলনে হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধের বিচার ও তার দায়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছে।
সেই দাবিতেই বৃহস্পতিবার অনেকটা আকস্মিকভাবে বৃহস্পতিবার থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে তাদের লাগাতার কর্মসূচি পালনের প্রেক্ষাপটে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন।
পরবর্তীতে যমুনার সামনে থেকে সরে গেলেও ঢাকার শাহবাগে জমায়েতের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।
তাদের কর্মসূচি শুরুর আগের দিন বুধবার মধ্যরাতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সময়ের সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ থাইল্যান্ড যান। তার দেশ ছাড়ার ঘটনার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার দিনভর সামাজিক মাধ্যমে নানা রকম বক্তব্য তুলে ধরতে দেখা যায় এনসিপি'র নেতাদের।
এরপর বৃহস্পতিবার মধ্য রাতেই এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে কয়েকশাে নেতা-কর্মী নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়। পরে গভীর রাতে সেই অবস্থান কর্মসূচিতে এনসিপির শীর্ষ নেতারা এবংইসলামপন্থী বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা যােগ দেন।
বৃহস্পতিবার রাতেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপােরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা সেলিনা হায়াত আইভীকে গ্রেফতারের জন্য তার বাসায় পুলিশ যায়। শুক্রবার ভোরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
একইসঙ্গে এনসিপিসহ বিভিন্ন দল যখন অবস্থান বা জমায়েত অব্যাহত রেখেছে, এ পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকেএকটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তাাতে বলা হয়,আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।
আবার দাবি পূরণে রাস্তায় নেমে আসতে যারা আহবান করেছেন তারা সরকারেরই ঘনিষ্ঠ হিসেবে জনমনে পরিচিত, এমনকি সরকারে অন্তত দুজন উপদেষ্টা আছেন যারা জুলাই অগাস্টের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়াদেরই অংশ ছিলেন। বাকীরাও সেই আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থন যুগিয়েছিলেন। এনসিপির প্রধান নেতাও কিছুদিন আগে সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন