প্রাতিষ্ঠানিক চাপ আর প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার কবলে পড়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনার খবর রোজ আমাদের চোখে পড়ে। কিন্তু ভারতে গত এক সপ্তাহে একই প্রদেশের ২১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে সামান্য প্রাযুক্তিক ভুলের কারণে পাস করতে ব্যর্থ হওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আত্মহত্যাকারী সেই ২১ শিক্ষার্থী দক্ষিণ ভারতের তেলেঙ্গানা প্রদেশের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে একজন তরুণ চলন্ত ট্রেনের সামনে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। অপর এক তরুণী নিজের শরীরে আগুন দিয়েছিলেন।
দেশটির মন্ত্রীরা স্বীকার করেছেন, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে তাদের কিছু বড় ভুল ছিল। সম্প্রতি প্রণীত নতুন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিক্ষার খাতাগুলো মূল্যায়ন করা হয়। তাছাড়া এর পেছনে মানব সৃষ্ট কিছু ভুলও ছিল বলে জানান তারা।
যারা আত্মহত্যা করেছেন তারা সবাই ছিলেন ভালো ফল করা শিক্ষার্থী। কিন্তু এবারের পরীক্ষার পর তাদের প্রাপ্ত নাম্বার এত কমে যায় যে তারা পাস করতে ব্যর্থ হন। আর এমন হতাশা থেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেন তারা।
এক সপ্তাহের মধ্যে ২১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার কারণ সবার সামনে উন্মোচিত হওয়ায় শত শত অভিভাবক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন। রাজনৈতিক নেতারা অবশ্য সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যদি কারো মনে হয় তার পরীক্ষার খাতায় কোনো সমস্যা আছে তাহলে অভিযোগ জানাতে হবে।
বিক্ষোভরত এক অভিভাবক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রথম বছরের পরীক্ষায় আমার ছেলে প্রথম হয়েছিল কিন্তু এখন সে এত কম নাম্বার পেয়েছে যে পাস করতে পারেনি। আমি জানি না আমি এখন কি করবো।’
তেলেঙ্গানার সেই পাবলিক পরীক্ষায় আনুমানিক ১০ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো যান্ত্রিক ত্রুটিতে ভুলভাবে খাতা মূল্যায়নের কারণে সেই ১০ লাখ পরিক্ষার্থীর মধ্যে ৩ লাখেরও বেশি পাস করতে পারেনি।
তেলেঙ্গানা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘পরীক্ষায় ফেল করা মানে জীবন থেকে সবকিছু হারিয়ে যাওয়া নয়। জীবন খুব সুন্দর। এমনকি যদি কেউ ফেলও করে তারও অনেক সুযোগ আসবে জীবনে।’
(jagonews24)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন