পুরান ঢাকার মতো নতুন ঢাকা অর্থাৎ গুলশানেও ইফতারির নানা বাহারি আয়োজন রয়েছে। হালিম, চপ, গরুর কালা ভুনা, খাসির লেগ রোস্ট থেকে শুরু করে বটি কাবাব, শিক কাবাব, স্পেশাল জিলাপি, সাসলিক, নাগেটস, তন্দুরি কী নেই এখানে? সবই পাওয়া যায়। তবে এখানকার আয়োজনটা একটু ভিন্ন রকমের। নেই বিক্রেতার হাঁকডাক। আছে সুন্দর করে সাজানো গোছানো এবং খাবারের উপস্থাপনায় একটু ভিন্নতা। সব মিলিয়ে আয়োজনে আছে অভিজাত্য আর নতুনত্বের ছোঁয়া।
গুলশান এলাকায় ইফতার বিক্রির ধরণটা একটু ভিন্ন। এ এলাকায় পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট ও হোটেল। এসব রেস্টুরেন্টে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ইফতারি পরিবেশন করা হয়। যে কোনো রেস্টুরেন্টে গেলেই এগিয়ে দেয়া হচ্ছে ম্যানু, প্যাকেজ লিস্ট। এছাড়াও শুধু ইফতার আয়োজনের জন্যই অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠেছে একাধিক রেস্টুরেন্ট। পাশাপাশি অলিগলি, রাস্তাতেও রয়েছে ইফতারির নানা আয়োজন নিয়ে অস্থায়ী সব দোকান।
গুলশানে ফখরুদ্দিন, ফ্রাইডে ইফতার বাজারসহ বেশ কয়টি ইফতার আয়োজন নিয়ে গড়ে ওঠা রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখা গেছে এই এলাকায় খাসির হালিম ২০০ থেকে ৬০০ টাকা, খাসির চাপ, কোর্মা প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা, গরুর চাপ ৮০০ টাকা, গরুর কালাভুনা ১ হাজার টাকা কেজি, কাচ্ছি বিরিয়ানি ৩০০ টাকা, আস্ত মুরগির রোস্ট ৪৮০ টাকা, খাসির লেগ রোস্ট ৫০০ টাকা পিস, চিকেন রোস্ট ১২০ টাকা, চিকেন বটি কাবাব ১৪০ টাকা, শিক কাবাব গরু ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি, জালি কাবাব-শামি কাবাব, মুঠিয়া কাবাব ৪০ টাকা পিস, ঘুমনি কেজি ২০০ টাকা, আলুর দমের বক্স ১০০ টাকা, ফিরনি ২০০ টাকা, রেশমি জিলাপি ৪০০ টাকা কেজি, বাসমতি জর্দা ২০০ টাকা বক্স, আলু বোখারার চাটনক ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা।
ফ্রাইডে ইফতার বাজারের ব্যবস্থাপক খালিদ আহমেদ ইফতারির আয়োজন সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের ইফতারিতে বিভিন্ন আইটেমের পাশাপাশি সেট ম্যানু বা প্যাকেজও পাওয়া যায়। প্রতিদিন নানা জায়গা থেকে মানুষ এখানে ভিন্ন স্বাদের সব ইফতারি সংগ্রহ করতে আসেন।
সেখানে ঘুরে দেখা গেছে, শাহী হালিম বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, বম্বে জিলাপি ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, চিকেন সাসলিক ১২০ ফ্রাইড চিকেন ১২০ টাকা। এছাড়াও পাওয়া যাচ্ছে তন্দুরি উইংচ, থাই ফ্রাইড চিকেন, চিকেন টোস্ট, চিকেন সরমা, ফিশ ফিঙ্গার, পাকুরা ফিন্নিসহ নানা পণ্য।
এদিকে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন প্যাকেজে ইফতারি পাওয়া যাচ্ছে। এসব প্যাকেজের মূল্য রেস্টুরেন্ট ভেদে বিভিন্ন রকমের। এর মধ্যে ফখরুদ্দিনে পাওয়া যাচ্ছে ইফতার এবং ডিনার মিলে ৪৫০ টাকার একটি বিশেষ প্যাকেজ। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের অস্থায়ী ইফতার প্যাকেজের মধ্যে ৪০০ থেকে ৭০০ বা তার চেয়েও বেশি টাকা দামের বক্স আইটেম পাওয়া যাচ্ছে।
রাজধানীর মহাখালী থেকে গুলশানে ইফতারি কিনতে এসেছেন হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারের সবাই মিলে বাসায় ইফতার করব। যে কারণে বিভিন্ন স্বাদের ইফতার কিনতে গুলশান এসেছি। এখানে নানা পদের নানা আয়োজনের ইফতার পাওয়া যায়, সে কারণেই এখানে আসা। তবে অন্য জায়গার তুলনায় এখানে ইফতার সামগ্রীর দাম কিছুটা বেশি। তবুও সবাই এখানে ইফতার কিনতে আসেন, কারণ এখানে নানা ধরনের, বাহারি স্বাদের ইফতার পাওয়া যায়।
(jagonews24)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন