ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের ভর্তি এক রোগীর স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) রাত ৮ টার দিকে নারী ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
দায়িত্বরত নার্সের সাথে কথা কাটাকাটির জেরে ওই নার্স সন্ত্রাসীদের ডেকে এনে তার স্বামীকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ করেছেন রোগী।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় , শহরের টেপাখোলা বৃন্দাবনের মোড় এলাকার বাসিন্দা রাসেল তার স্ত্রী হীরাকে নিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারী থেকে ভর্তি আছেন ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে। স্ত্রী হীরাকে চিকিৎসক প্রতিদিন দুবার রক্ত পরীক্ষার নির্দেশনা দেন। রাতে জেনারেল হাসপাতালের প্যাথালজি ল্যাব বন্ধ থাকায় বাইরের বেসরকারী ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য সিস্টারকে সিরিঞ্জে রক্ত টেনে দিতে বলেন হীরার স্বামী রাসেল। দায়িত্বরত সিস্টার ইলা সিকদার রক্ত টেনে দেয়া তার দায়িত্ব না জানিয়ে রাসেলের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এই সময়ে রাসেল ওই সিস্টারকে উদ্যেশ্য করে বলেন, ‘সরকারী বেতন খান, রক্ত টানবেন না কেন?’।
এর পরে সিস্টার ইলা শিকদার নার্স সুপারভাইজার এর কাছে রাসেলের নামে নালিশ জানান এবং একই সাথে শহরের খাবাসপুর এলাকার যুবলীগ কর্মী দেবাশীষ নয়নকে ফোন করে ডেকে আনেন।রাসেল নার্স সুপারভাইজার এর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বের হওয়ার পর পরই দেবাশীষ নয়ন ও তার সাথে থাকা আরো ২/৩ জন রাসেলকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে চলে যায়।
খবর পেয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
আহত রাসেলের স্ত্রী হীরা জানান, তার শরীরের এক সাইড প্যারালাইজড। প্রতিদিন দুই বার তাকে রক্ত পরীক্ষা করতে হয়। কাল সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করলে দেরী হয়ে যাবে বিধায় সিস্টারকে অনুরোধ করা হয়েছিল রক্ত টেনে দিতে। তিনি অভিযোগ করেন, সিস্টার ইলা শিকদারই দেবাশীষ নয়নকে ডেকে এনে তার স্বামীকে কুপিয়েছে।
নার্স সুপারভাইজার জহুরা বেগম জানান, রুগী ও নার্সের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, সেটা মিটমাট করেছি, কিন্ত এই ঘটনায় নার্স ইলা জড়িত কিনা সেটা আমার জানা নেই।
এ ঘটনায় নার্স ইলা রানী আত্মগোপনে থাকায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে দেবাশীষ নয়নের ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইফুজ্জামান বলেন, আহত রুগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার প্রচুর পরিমানে ব্লিডিং হয়েছে। এখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সুমন রঞ্জন সরকর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামীদের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান জানান, আমি বিষয়টি উদ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এ ঘটনার পর ঐ নার্স আত্মগোপনে আছেন। ঘটনার তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আমি আহত রোগী ও তার স্ত্রীর খোজ খবর নিচ্ছি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন