নারাইনের খুনে ব্যাটিংয়ে ফাইনালে কুমিল্লা | Comilla in the final with Narain's murderous batting


লক্ষ্যটা বিশাল নয়। তবে আগের ম্যাচে ভুল স্রোতে হাঁটার শিক্ষা থেকে এদিন  শুরু থেকেই ঝড়ের পরিকল্পনা এঁটেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সেই চিন্তা থেকেই সুনিল নারাইনকে পাঠানো হয় ওপেনিংয়ে। এই সিদ্ধান্তের ফল রান তাড়ায় চার-ছক্কার বৃষ্টিতে দেন নাইরাইন। তার রেকর্ডময় ফিফটিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। অনায়াসে ফাইনালে পৌঁছে যায় কুমিল্লা। 


মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার নারাইনের বিস্ফোরক হওয়ার দিনে  উইকেটে চট্টগ্রামকে ৭ হারিয়ে বিপিএলের ৮ম আসরের ফাইনালে উঠেছে কুমিল্লা। আগে ব্যাট করে ১৪৮ রানে অলআউট হয়েছিল চট্টগ্রাম। ওই রান ৪৩ বল আগেই পেরিয়ে যায় দুই বারের বিপিএল চ্যাম্পিয়নরা। ১৮ ফেব্রুয়ারি ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ফরচুন বরিশাল। 

দলের জয়ে মাত্র ১৬ বলে ৫৭ করে নায়ক নারাইন। যার মধ্যে আছে ৬ ছক্কা আর ৫ চার। অর্থাৎ ১১ বলই তিনি পাঠান বাউন্ডারিতে। দৌড়ে নিয়েছেন কেবল ১ রান। ১৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির দ্রুততম ফিফটিতে যুবরাজ সিংয়ের ১২ বলে ফিফটির পরেই স্থান হয়েছে তার। বিপিএলে নিশ্চিতভাবেই হয়েছে রেকর্ড। আহমেদ শেহজাদের ১৬ বলে ফিফটি ছাপিয়ে গেছেন এই ক্যারিবিয়ান।

রান তাড়ায় শরিফুল ইসলামের প্রথম বলেই ফিরে গিয়েছিলেন লিটন দাস। তার বাড়তি বাউন্সের বল গ্লাভসে লাগিয়ে ক্যাচ উঠান লিটন। কিপার আকবর আলি অনেকখানি ছুটে লুফেন দারুণ ক্যাচ।


এরপরের সময়টা নারাইনের। ইমরুল কায়েসকে একপাশে রেখে পাওয়ার প্লের মধ্যে করতে থাকেন বিস্ফোরক ব্যাটিং। পাওয়ার প্লের মধ্যেই কুমিল্লা এনে ফেলে ৮৪ রান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ইমরুলের সঙ্গে ৩৩ বলে নারাইন আনেন ৭৯ রান। যাতে ৫৭ রানই তার। ১৭ বলে তখন কেবল ১৬ ইমরুলের।

রেকর্ড ফিফটি করেই মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বলে ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন নারাইন। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচের সমস্ত উত্তাপই হাওয়া। ইমরুল ফিরে গেলেও বাকি পথে কাজ সারতে কোন সমস্যা হয়নি ফাফ দু প্লেসির। দলকে জিতিয়ে ২৩ বলে ৩০ করে অপরাজিত থাকেন ফাফ। মাত্র ১৩ বলে ৩০ করে কাজ দ্রুত সারেন মঈন আলি। 

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিল চট্টগ্রাম। টুর্নামেন্টে তাদের সেরা ব্যাটার উইল জ্যাকস একাদশে ফিরে দিয়েছিলেন ঝড়ের আভাস। কিন্তু তার ডানা এদিন খুব একটা মেলতে দেননি শহিদুল ইসলাম। ৯ বলে ১৬ করে থামেন জ্যাকস। আগের ম্যাচের হিরো চ্যাডউইক ওয়ালটনও এদিন ব্যর্থ। মাত্র ২ রান করেই তিনি শিকার তানভীর ইসলামের।

জাকির হাসান সময় নিয়ে থিতু হয়েছিল, বাজে শটে ১৯ বলে ২০ করে থামেন তিনিও। সবচেয়ে হতাশ করেন অধিনায়ক আফিফ হোসেন ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি। শামীম প্রথম বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে স্টাম্পিং হয়ে বিদায় নেন। আফিফ ১০ বলে ১০ করে দেন সহজ ক্যাচ।

মেহেদী হাসান মিরাজ আর আকবর আলি মিলে লড়াইয়ে ফেরান চট্টগ্রামকে। ৬ষ্ঠ উইকেটে তাদের জুটিতে আসে ৪০ বলে ৬১ রান। আকবর ২০ বলেই করেন ৩৩। মিরাজ ছিলেন কিছুটা মন্থর। দ্রুত রান আনার চেষ্টায় আকবরের বিদায়ের পর পথ হারায় চট্টগ্রাম। ভুল সময় বেনি হাওয়াল রান আউট হলে শেষে আসেনি পর্যাপ্ত রান। মিরাজ ফেরেন ৩৮ বলে ৪৪ করে। ৯ নম্বরে নেমে ৯ বলে ২ ছক্কায় মৃত্যুঞ্জয় ১৫ করলে দেড়শোর কিনারে যেতে পেরেছিল চট্টগ্রাম। তবে এই পুঁজি কুমিল্লার কাছে হয়েছে মামুলি।


সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভার ১৪৮  (জ্যাকস ১৬, জাকির ২০, ওয়ালটন ২, আফিফ ১০, শামীম ০, মিরাজ ৪৪, আকবর ৩৩, হাওয়েল ৩, মৃত্যুঞ্জয় ১৫, শরিফুল ০*, নাসুম ০ ; হায়দার ১/২১, মোস্তাফিজ ১/১৩, নারাইন ০/২৪, শহিদুল ৩/৩৩, তানভীর ১/৩৩, মঈন ৩/২০)


কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১২.৫ ওভারে ১৪৯/৩ (লিটন ০, নারাইন ৫৭, ইমরুল ২২, ফাফ ৩০*, মঈন ৩০* ; শরিফুল ১/৩১, মিরাজ ০/২৩, আফিফ ০/১৬, নাসুম ০/৩০, মৃত্যুঞ্জয় ১/৩২, হাওয়েল ১/১১)


ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৭ উইকেটে জয়ী। 


ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সুনিল নারাইন। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget