আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির এক গ্রাহক অভিনয়শিল্পী তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, শবনম ফারিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছেন। ওই মামলায় এই তিন অভিনয়শিল্পী যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার এমনটাই জানিয়েছেন।
গত ৪ ডিসেম্বর সাদ স্যাম রহমান নামের ইভ্যালির এক গ্রাহক রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি করেন। তবে জানাজানি হয় গত বৃহস্পতার গভীর রাতে। এঁদের মধ্যে তাহসান ইভ্যালির শুভেচ্ছা দূত, মিথিলা ফেস অব ইভ্যালি লাইফস্টাইলের শুভেচ্ছা দূত আর শবনম ফারিয়া ছিলেন প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ইভ্যালির একজন গ্রাহক আদালতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন। ৯ আসামির মধ্যে তাহসান, শবনম ফারিয়া ও মিথিলা রয়েছেন। তাঁরা এই মামলার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর আসামি। মামলার তদন্ত চলছে। ৯ আসামিই পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন। যেকোনো সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
মামলার এজাহারে বাদী সাদ স্যাম রহমান অভিযোগ করেন, ইভ্যালিতে তিন লাখ ১৮ হাজার টাকায় মোটরসাইকেল কেনার অর্ডার করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে পণ্য সরবরাহ করা হয়নি, টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। এভাবে চটকদার বিজ্ঞাপন ও বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে হাজারো গ্রাহককে পথে বসিয়েছে ইভ্যালি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, তাহসান, মিথিলা ও শবনম ফারিয়া ইভ্যালির বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতি এবং বিভিন্ন প্রমোশনাল কথাবার্তায় আস্থা রেখে বিনিয়োগ করেন সাদ স্যাম রহমান। এসব তারকার কারণে মামলার বাদী প্রতারিত হয়েছেন।
পুলিশের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হোয়াটসঅ্যাপে তাহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলার বিষয়ে তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে আইনজীবীর সঙ্গেও তিনি কথা বলছেন। তিনি বলেন, প্রচারক কখনো প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক দায়ভার নেবেন না।
তাহসান দাবি করেন, প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তাঁর বিজ্ঞাপন করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি বিজ্ঞাপন করেননি। এর আগে দুটি লাইভ করে তিনি অনেক অভিযোগ পেয়েছেন। এ কারণে তিনি আর অগ্রসর হননি। চুক্তি বাতিল করেছেন।
তাহসান মানহানির মামলা করবেন জানিয়ে বলেন, ‘সাত মাস ধরে মানসিক-আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’
তাহসান বলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়, তাঁরা পুলিশের নজরদারিতে থাকতেই পারেন। মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। তদন্ত দোষ পাওয়া গেলে আইনানুযায়ী যা হওয়ার তাই হবে।
জানতে চাইলে অভিনেত্রী মিথিলা বলেন, ‘মামলার বিষয়ে এখনো আমি কিছু জানি না। আমরা তো হাজারের বেশি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করি। এখন একটি নিয়ে মামলা হলো। আমি তো কিছু করিনি। আমি তো ওখানে (ইভ্যালিতে) ছিলাম এক মাসের মতো।’
প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ফারিয়া বলেন, ‘আমাকে হয়রানির জন্যই এ মামলা করা হয়েছে।’ নিজেকে নিরপরাধ দাবি করে তিনি বলেন ‘আমাকে যে কয়েকটা কারণে অপরাধী দেখানো হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি এখনো ইভ্যালি থেকে এক টাকাও পাইনি।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন