নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে আজ রোববার সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। ভোটগ্রহণ শেষে এখন ফলাফলের অপেক্ষা। তবে ভোট চলাকালে দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরুষ কেন্দ্রে গোপন বুথে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
দুপুর পৌনে ১২টায় পুরুষ কেন্দ্রটির ২ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখা যায় কক্ষটির গোপন বুথে একই সঙ্গে দুজন প্রবেশ করেছেন। সংবাদকর্মীরা পরিচয় দিয়ে সেখানে তাদের প্রবেশের কারণ জানতে চাইলে বুথে থাকা দুজন বের হয়ে আসেন। তাদের একজন নিজেকে কক্ষের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘মানুষ ভোট দিতে পারছে না। দেখিয়ে দিতে হচ্ছে। ভোটারেরা লাইনে দাঁড়িয়ে বিরক্ত।’
গোপন বুথে প্রবেশ উচিত কি-না জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বলেন, ‘মানুষের সাহায্য করলেও দোষ নাকি?’
এ ওয়ার্ডের ঠেলাগাড়ি প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কাউসার কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে ইভিএমে ধীরগতির কারণে শেষ পর্যন্ত ভোটারদের ভোট না দিয়েই ফিরে যেতে হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘সবগুলো কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি ভালো। কিন্তু সে অনুযায়ী ভোট কাস্ট হচ্ছে না। কারো আঙ্গুলের ছাপ মেলে না, কেউ চোখে দেখে না আবার অনেক বয়স্ক মানুষ পদ্ধতিটাই বুঝে উঠতে পারছে না।’ এ ছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে আঙ্গুলের ছাপ না মেলার অভিযোগ করেছেন অনেক ভোটার।
পুরো সিটির নির্বাচনই এবার ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হয়েছে। বড় ধরনের অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ছাড়াই শেষ হয় ভোটগ্রহণ। তবে কয়েকটি কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রোববার বিকেলে ৪টা ২৩ মিনিটে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার ভোটগ্রহণ শেষ এবং ভোট গণনা শুরুর তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘নাসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সমাপ্ত হয়েছে বিকেল ৪টায়। তারপর থেকে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোট গণনা শুরু হয়েছে। কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত ফলাফল রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রার্থী ও ভোটাররা ফলাফল জানতে পারবেন।’
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে তৈমুর আলমের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে নির্বাচনে মেয়রপদে আওয়ামী লীগ দলীয় গত দুবারের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে। মেয়রপদে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি প্রতীক), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাছুম বিল্লাহ্ (হাতপাখা), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ) এবং স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া প্রতীক)।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন