শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাতদিন ধরে চলা অনশন ভাঙিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল।
সঙ্কট সমাধানে বিভিন্ন পর্যায় থেকে শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এরই অংশ হিসেবে জনপ্রিয় এই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে একাত্তর টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান একাত্তর জার্নালে অংশ নিয়ে তিনি এমন কথা জানান। মিথিলা ফারজানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, এটিএন বাংলার বার্তা প্রধান জ ই মামুন ও বাংলা ট্রিবিউনের বার্তা প্রধান মাসুদ কামাল।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ড. জাফর ইকবাল যুক্ত হয়ে জানান, তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নিজেই সেখানে যেতে চাইছিলেন। পরে সরকারের ‘উপর মহলের’ ঘটনাক্রমে কথা হলে সেখান শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়। এরপর তিনি শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে সেখানে যান এবং শিক্ষার্থীরা তার কথা রেখেছে।
সরকার সঙ্কট সমাধানে আগে কেন পদক্ষেপ নিল না- এমন প্রশ্নে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘আমি মনে করি, সবকিছুর একটা উপযুক্ত সময় থাকে। আমরা এর আগে গেলে এটি (অনশন আন্দোলন) এভাবে সমাধান হতো কি না- সেটা বলতে পারি না। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, গতরাতে জাফর ইকবাল ভাই নিজে গিয়েছেন এবং আজ শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙিয়েছেন, আমরা মনে করি, ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি হয়েছে।’
একই প্রসঙ্গ টেনে জ ই মামুন শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, আজকে জাফর ইকবাল উপর মহলের নির্দেশে সেখানে গেলেন, তাহলে উপর মহল নিজেরাই কেন উদ্যোগ নিলেন না। এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। এরকম যে কোনও সংকটে অনেকরকম তৎপরতা সেখানে থাকে, অনেক ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিছু সামনে আসে, কিছু আড়ালে থাকে। এ সংকটটি সমাধানেও অনেক লোকই অনেকভাবে কাজ করেছে, সবার কথা বলেও শেষ করা যাবে না।
সেরকম নানারকম প্রস্তুতির একটা পর্যায়ে গিয়ে মনে হয়েছে, জাফর ইকবাল ভাইয়ের হাতেই এটা হলে ভালো হবে এবং এটা সঠিকভাবে হবে। তারপর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ আমরা নিতে পারবো। এর আগে আমার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। পরে আরও কথা হওয়ার কথা ছিল। এর মাঝখানে অন্য একটি উদ্যোগ নিয়ে জাফর ইকবাল ভাইকে নিয়ে আসা হয়েছে এবং সেটাকে প্রয়োজন মনে করা হয়েছে বলেই নিয়ে আসা হয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী শাবির উপাচার্য পদত্যাগ কিংবা অপসারণ করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী জানান, আন্দোলনটা মূলত ভিসির অপসারণের দাবিতে ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানারকম সমস্যা থাকে। যদি সেসব সমস্যা সমাধান হয়ে যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি বড় কোনও সমস্যা না, যদি ভিসি নিজে কোনও বড় সমস্যার কারণ না হন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঘটনার সবকিছু খতিয়ে দেখতে চাই। এতে যারই দায় বা দোষ পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর উপাচার্যের পদত্যা আচার্যের বিষয়, সেটা আচার্য দেখবেন। তার মানে এই নয় এই দাবি মানছি বা মানছি না।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন