অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে হত্যার পর তার লাশ বস্তাবন্দি করে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় ফেলে রাখা হয়। সেখান থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিমুর স্বামী ও তার বন্ধু ফরহাদকে ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তবে শিমুকে হত্যার কোনো পরিকল্পনা ছিল না বলে দাবি করেছেন তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল (৪৮)। ঝগড়ার একপর্যায়ে গলা চেপে ধরলে শিমু মারা যায়।
৩ দিনের রিমান্ডের প্রথমদিন জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এমন কথা জানিয়েছেন নোবেল। তবে, পুলিশের কাছে অকপটে স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে নোবেল জানিয়েছেন, শিমুকে হত্যা করা তার পরিকল্পনা ছিল না।
সকালে দুইজনের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে তিনি শিমুকে থাপ্পড় দেন। এতে শিমু তার ওপর চড়াও হন। ক্ষিপ্ত হয়ে শিমুর গলা চেপে ধরলে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এরপর বন্ধু ফরহাদকে বাসায় ডোকে স্ত্রীর লাশ গুমের পরিকল্পনা করেন নোবেল।
ঝগড়ার কারণ জানতে চাইলে নোবেল পুলিশকে জানায়, তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি চলছিল। কিছু বিষয় নিয়ে তিনি স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন, স্ত্রীও তাকে সন্দেহ করতেন। এছাড়া গাড়ির যন্ত্রাংশের পুরনো ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছু একটা করার চাপ ছিল তার ওপর। এসব নিয়েই তাদের মধ্যে দাম্পত্য ও পারিবারিক কলহ চলছিল।
মামলা তদন্তের বিষয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালাম বলেন, নোবেল ও তার বন্ধুকে তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নোবেল অকপটেই স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করছেন।
পুলিশ জানায়, রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৭টা-৮টার দিকে তিনি শিমুকে গলাটিপে হত্যা করেন। এরপর ফরহাদকে ফোনকলে করে ডেকে নেন। এরপর বন্ধু নোবেলের সহযোগিতায় শিমুর লাশ গুম করার চেষ্টা করেন।
এর অংশহিসেবে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ইউনিয়নের কদমতলী এলাকার আলীপুর ব্রিজের ৩শ গজ দূরে সড়কের পাশে ঝোপের ভেতর মরদেহ ফেলে চলে যান তারা। পরে পুলিশ সেখান থেকে বস্তাবিন্দি এক নারীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।
পরে লাশের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য ওইদিন রাতে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে তার নাম-পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সেদিন রাতেই শিমুর ভাই হারুনুর রশীদের করা মামলায় গ্রেফতার করা হয় শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু ফরহাদকে। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এরপর কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় দায়ের করা হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) চুন্নু মিয়া। শুনানি শেষে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম তাদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন