ইউক্রেন-রাশিয়া ইস্যুতে নিয়ে মার্কিন মিডিয়া, ন্যাটো ও জো বাইডেন সরকারের মাতামাতিতে মেজাজটা ঠিক রাখতে পারলেন না ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
সংবাদ সম্মেলন ডেকে পশ্চিমাদের উদ্দেশে সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘আমাদের সীমান্তে রুশ সেনার উপস্থিতি নিয়ে অযথা আতঙ্ক ছড়াবেন না। ইউক্রেনে যেকোনও সময় হামলা হতে পারে, এ ধরনের কথা বলায় আমাদের অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে।’
কিয়েভে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি আরও বললেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা বলেই যাচ্ছেন, আগামীকালই যুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে। এমন কথা শুধু প্যানিক ছড়ায়। এটা আমাদের কত বড় ক্ষতির কারণ তা কি তারা জানেন?’
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া সরকারের রাষ্ট্রদূত ও তাদের পরিবারকে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়েও সমালোচনা করেন তিনি। জেলেনস্কি বলেন, ‘দেশের ভেতরের এমন অস্থিতিশীলতাই এখন ইউক্রেনের জন্য বড় হুমকি।’
গত বৃহস্পতিবার মার্কিন জো বাইডেন বললেন, তিনি বিশ্বাস করেন রাশিয়া আগামী মাসেই ইউক্রেনে হামলা চালাবে। আবার এর মাঝে জার্মানির পররাষ্ট্র গোয়েন্দা দফতর জানালো, তাদের তথ্য বলছে, ইউক্রেনে হামলা চালাতে রাশিয়ার সব প্রস্তুতি থাকলেও তারা এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ন্যাটো মহসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ জানালেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পূর্ব ইউরোপে তাদের জোট আরও সেনা মোতায়েনে প্রস্তুত। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাশিয়া এরইমধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া হাজারো সেনা মোতায়েন করেছে এবং বেলারুশে ক্ষেপণাস্ত্রও বসিয়েছে।
এদিকে মস্কো এখনও ইউক্রেনের বিষয়ে ‘সিরিয়াস’ কোনও সিদ্ধান্তে না এলেও ন্যাটোর প্রতি তারা তাদের দাবির ব্যাপারে সোচ্চার। রাশিয়ার নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে ন্যাটোকে নাক না গলাতেও বলে চলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁকে তিনি বলেছেন, কিছু করার আগে তিনি (পুতিন) আগে দেখে নেবেন যুক্তরাষ্ট্র কী প্রতিক্রিয়া দেখায়। আবার পুতিনকে প্রতিবেশী দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেও বলে এসেছেন মাখোঁ।
এদিকে, ইউক্রেন তাদের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নিয়ে যতই আত্মবিশ্বাসের গড়া চড়াক না কেন, তাদের ওপর রাশিয়ার হামলার ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ায় রুশ আগ্রাসনে মারা গিয়েছিল প্রায় ১৪ হাজার জন। সেখানকার একটি বড় এলাকা দখলে রাখা বিদ্রোহীদের সমর্থনও দিয়ে আসছে পুতিন সরকার।
এর আগে কিয়েভে আক্রমণের পরিকল্পনা নেই বলে রাশিয়া জানালেও তাদের কাছে এমন দাবির প্রমাণ চেয়েছিলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।
একইদিন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ক্রেমলিন কিয়েভের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চায় না। রাশিয়া যুদ্ধ চায় না।
সূত্র: বিবিসি
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন