ভারতে নতুন করে শতাধিক মুসলিম নারীকে বিক্রির উদ্দেশ্যে অনলাইনে ছবি প্রকাশের ঘটনায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। গ্রেপ্তার ওই যুবক দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ব্যাঙ্গালোরের একজন প্রকৌশল শিক্ষার্থী। তবে তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
গতকাল সোমবার মুম্বাই পুলিশের সাইবার ইউনিট ব্যাঙ্গালোর থেকে ওই প্রকৌশল শিক্ষার্থীকে আটক করে। পরে তাকে মুম্বাই নিয়ে যাওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া এই মামলায় উত্তরাখণ্ডের এক নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিবিসি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ওই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তবে, পুলিশ জানিয়েছে গ্রেপ্তার ওই যুবক সমালোচিত ‘বুল্লি বাই’ নামের অ্যাপটির ‘নিবিড় অনুসরণকারী’। বিবিসি মারাঠি জানিয়েছে, ‘বুল্লি বাই’ নামে ওয়েব প্লাটফর্ম গিটহাব এ হোস্টিং করা ওপেন সোর্স অ্যাপটি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, এই ঘটনা ভারতে মুসলিম নারীদের হয়রানি করতে অনলাইনে নিলামে তোলার দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। গত বছরের জুলাইতে ‘সুল্লি ডিলস’ নামের একটি অ্যাপ ও ওয়েবসাইট ৮০ জনের বেশি মুসলিম নারীর প্রফাইল তৈরি করে। এসব ছবি ওই নারীদের অনলাইন অ্যাকাউন্ট থেকে সংগ্রহ করা হয়।
দুটি ঘটনার কোনোটিতেই বাস্তবে নারী বিক্রির ঘটনা ঘটেনি। তবে এই নিলামে তোলার উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম নারীদের ব্যক্তিগত ছবি ছড়িয়ে তাদের হয়রানি ও মানহানি করা।
‘সুল্লি ডিলস’ অ্যাপের ঘটনায় তদন্ত এখনো চলছে। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বুল্লি বাই অ্যাপের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সুল্লি ডিলস মামলায় আক্রান্ত কবি নাবিয়া খান এক টুইট বার্তায় বলেন, দিল্লি পুলিশ এখনো তার অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ২০১৮ সালের একটি প্রতিবেদন বলছে, ভারতে একজন নারী বিভিন্ন বিষয়ে যতো বেশি সোচ্চার হন, অনলাইনে তার প্রতি নিপীড়নমূলক আচরণ ততো বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হন ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং সুবিধাবঞ্চিত নারীরা।
সমালোচকরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতীয় রাজনীতিতে মেরুকরণ বেড়েছে এবং এর সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মুসলীম নারীদের প্রতি নিপীড়নমূলক আচরণ।
এদিকে ‘সুল্লি ডিলস’ সম্পর্কে ভারতে অ্যামনেস্টির মুখপাত্র নাজিয়া ইরাম বিবিসি-কে বলেছেন, ‘যেসব শিক্ষিত মুসলিম নারী নিজের মত প্রকাশ করেন এবং ইসলাম ফোবিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদের মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে এটি পরিকল্পতি আক্রমণ।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন