নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ১২ দিন। ২৭ ওয়ার্ডে পাঁচ লাখের অধিক ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেবেন আগামী ১৬ জানুয়ারি। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতিদিনই ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।
নগরীর সর্বত্রই দেয়ালে ও মাথার ওপর ঝুলছে মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন প্রার্থী ও তাদের প্রতিনিধিরা। অনেক প্রার্থী আবার নিজ লিফলেটের পেছনে ইভিএম ব্যবহারের প্রক্রিয়া চিত্রসহ ছবি ছাপিয়ে দিয়েছেন। যাতে কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের বিপাকে পড়তে না হয়। নির্বাচনে মূল দুই মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তৈমুর আলম খন্দকারের প্রচারেও ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে ভোটারদের মাঝে। বিশেষ করে সচেতন মানুষজন প্রতিদিনই খেয়াল রাখছেন দুই মেয়র প্রার্থী কী বলছেন?
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ও বিকাল ৩টায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নগরীর ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ পুল, ধনুহাজী রোড, আব্দুল আলী, কালুহাজী রোড, পাইনাধী নতুন মহল্লা, সিআইখোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে মানুষের কাছে নৌকায় ভোট চান তিনি।
গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী তৈমুর আলম খন্দকারকে অব্যাহতি দেওয়া দলটির একটি রাজনৈতিক কৌশল।
আর পরুনঃ- ঢাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
আইভী বলেন, ‘তিনি (তৈমুর) অন্য প্রার্থীদের মতো আমার একজন প্রতিদ্বন্দ্বী। স্থানীয় সরকারের কাজে সব ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকে। নির্বাচনটাও একটি চ্যালেঞ্জ।’
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনও বিভাজন নেই। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা সবসময় একত্রিত ছিল, এখনও আছে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতে পারে, আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনও বিভাজন নেই।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার আজ নগরীর ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শিমরাইল, সাইলোগেট, ওমরপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার, মুন্সিপাড়া, আজিবপুর, সরদারপাড়াসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ করেন।
পরে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দল আমাকে অব্যাহতি দিয়ে মঙ্গল করেছে। এটা আমার জন্য ভালো হয়েছে। কারণ, নৌকায় যারা ভোট দিতো তারাও এখন স্বাচ্ছন্দ্যে আমাকে ভোট দিতে পারবেন। এখন আমি দলীয় কোনও প্রার্থী না। যারা ধানে শিষে ভোট দিতো তারা তো কখনও নৌকায় ভোট দেবে না। সেই ভোটগুলো আমি পাবো।’
তিনি বলেন, ‘নাগরিকদের চাহিদার কারণে আমি প্রার্থী হয়েছি। নাগরিকরা আমার জন্য মাঠে নেমেছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরাও আমার জন্য মাঠে নেমেছেন। আমার আশপাশে যা দেখছেন সবাই বিএনপির নেতাকর্মী।’এক প্রশ্নের জবাবে তৈমুর আলম বলেন, ‘‘সরকারি দলের এক নেতার কিছু বক্তব্যে নির্বাচনে কিছু শঙ্কা দেখা দেবে। এক নেতা বলেছেন, ‘তৈমুরকে মাঠে নামতে দেওয়া হবে না’। অবশ্য এমন কথা আমি গায়ে মাখি না। তবে এ ধরনের কথাবার্তা উসকানিমূলক। এতে বিশৃঙ্খলার বীজ বপন করা হয়। নির্বাচন কমিশন আমার শোডাউনে বাধা দিয়েছে। আমি তা মেনে নিয়েছি। কিন্তু সরকারি দলের শোডাউনকে বাধা দিতে পারেনি। এমনকি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’
জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৯ ও নারী ভোটার দুই লাখ ৫৭ হাজার ৫১৭ জন। ইভিএমের মাধ্যমে ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ভোট হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন