অধিকাংশ রুশ নাগরিকের দৃষ্টিতে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ হলেন ‘সংবাদমাধ্যমের মুক্তির জন্য লড়াকু’ এক সৈনিক। জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়ে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাজ্যের আদালতে দোষী সাব্যস্ত করার এক সপ্তাহের মাথায় প্রকাশিত এক জনমত জরিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। রাষ্ট্রীয় তহবিলে জরিপটি পরিচালনা করেছে দ্য অল রাশিয়ান পাবলিক অপিনিয়ন রিসার্চ সেন্টার (ভিটিএসআইওএম)। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) উইকিলিকসের টুইটে বলা হয়, ইকুয়েডর সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দু’টি সূত্র থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছে, কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিনের মধ্যে অ্যাসাঞ্জকে দূতাবাস থেকে তাড়ানো হতে পারে। সেই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে ১১ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) তাকে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর। জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়ে ব্রিটিশ আদালতে অ্যাসাঞ্জকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতারের এক সপ্তাহের মাথায় মঙ্গলবার একটি জনমত জরিপের ফল প্রকাশ করেছে দ্য অল রাশিয়ান পাবলিক অপিনিয়ন রিসার্চ সেন্টার।
জরিপে অংশ নেওয়া রুশ নাগরিকদের ৪৫ শতাংশ মনে করে গোপন নথি প্রকাশের মধ্য দিয়ে অ্যাসাঞ্জ ‘মুক্ত মত ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা’ নীতির পক্ষে কাজ করেছেন। ৪০ শতাংশ মনে করেন অ্যাসাঞ্জ বিশ্ব সম্প্রদায়ের স্বার্থে কাজ করেছেন। ৫৭ শতাংশ রুশ নাগরিক বিশ্বাস করেন: বিভিন্ন রাষ্ট্রের দুর্নীতি, অপরাধ ও কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের চোখ খুলে দিয়েছেন অ্যাসাঞ্জ।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২৭ শতাংশ মনে করেন, তথ্য ফাঁসের মধ্য দিয়ে অ্যাসাঞ্জ আইন লঙ্ঘন করেছেন। ১৭ শতাংশ রুশ মনে করেন, উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা ব্যক্তিগত স্বার্থ ও লক্ষ্যে কাজ করেছেন। আরও ১৬ শতাংশ বিশ্বাস করেন, সুনির্দিষ্ট রাষ্ট্র ও রাজনীতিবিদদের স্বার্থে কাজ করেছেন অ্যাসাঞ্জ। আবার ১৭ শতাংশ রুশ নাগরিক মনে করেন গোপন তথ্য প্রকাশের মধ্য দিয়ে শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নিতে এবং মনোযোগ আকর্ষণ করতে চেয়েছিলেন তিনি।
২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত সাড়া জাগানো বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকস বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয় ২০১০ সালে। মার্কিন কূটনৈতিক নথি ফাঁসের মধ্য দিয়ে তারা উন্মোচন করে মার্কিন সাম্রাজ্যের নগ্নতাকে। ২০১২ সাল থেকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের আইনি পদক্ষেপ শুরু হয়। ওই বছরই অ্যাসাঞ্জ ইকুয়েডর সরকারের রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন। ১১ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) আশ্রয় প্রত্যাহার করে তাকে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর। জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়ে ব্রিটিশ আদালতে অ্যাসাঞ্জকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রে তার বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের মামলা হয়েছে। তাকে সেখানে প্রত্যর্পণের চেষ্টা চলছে।
(banglatribune)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন