নিজস্ব প্রতিবেদক : শ্রীলংকায় ভয়াবহ বোমা হামলার প্রেক্ষাপটে ঢাকা মহানগর পুলিশের জঙ্গিবাদবিরোধী গণসংযোগ সপ্তাহ শুরু আজ রোববার থেকে। এর অংশ হিসেবে রাজধানীর ৫০ থানায় সংশ্নিষ্ট বিট অফিসার এলাকাবাসীকে নিয়ে উঠান বৈঠক করবেন ধারাবাহিকভাবে। এ ছাড়া কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে সভার আয়োজন করা হবে। পাড়া-মহল্লার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল-কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে উগ্রবাদবিরোধী প্রচারণা চালানো হবে।
শনিবার জঙ্গিবাদবিরোধী গণসংযোগের ব্যাপারে সার্বিক দিকনির্দেশনা দিয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ঢাকা মহানগর পুলিশের সব ইউনিটে চিঠি দিয়েছেন। পুলিশের গণসংযোগের এই কার্যক্রম তদারক করবেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার আট কর্মকর্তা। জানা গেছে, চলমান বাস্তবতায় দেশের বিভিন্ন জেলায় নতুনভাবে জঙ্গিবাদবিরোধী সচেতনামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করছে পুলিশ।
ডিএমপি কমিশনারের ওই চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি শ্রীলংকায় হামলা ও বাংলাদেশে এর আগের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, সন্ত্রাস ও জঙ্গি কার্যক্রমের পেছনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অনুষঙ্গ কার্যকর আছে। যার ব্যাপ্তি ও পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এ ধরনের একটি সমস্যা কেবল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিরসন করা সম্ভব নয়। জনগণের ব্যাপক ও সক্রিয় অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়েই সফলতা পাওয়া সম্ভব এ কাজে। বর্তমানে ডিএমপিতে ৩০২টি বিট সক্রিয় ও কার্যকর করে ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হবে। আজ রোববার এ কার্যক্রম শুরু হয়ে চলবে সপ্তাহব্যাপী।
এ ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ২০১৬-১৭ সালে জঙ্গিবাদবিরোধী যেসব কর্মসূচি নেয়া হয়েছিল নতুনভাবে তা আবার গ্রহণ করা হচ্ছে। উগ্রবাদ মোকাবেলায় পুলিশ সতর্ক রয়েছে। আগাম নিরাপত্তা প্রস্তুতিমূলক সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
শেরপুর জেলার পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিম বলেন, উগ্রবাদবিরোধী একটি বড় ধরনের কর্মসূচি তারা গ্রহণ করছেন। মে মাসে জেলার সব মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি সচেতনামূলক কর্মশালার আয়োজন করা হবে। যেখানে শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদসহ অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ থাকবেন। আলোচ্য বিষয় পরবর্তী সময়ে অন্যান্য মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশের এ কার্যক্রমে যেসব বিষয়ে আলোকপাত করা হবে, তা হলো- পরিবার ও সন্তানদের নৈতিকতা, সহনশীলতা ও সহাবস্থানের চর্চা শেখানো। দেশপ্রেম, বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তরুণদের উদ্বুদ্ধ করা। সব মাধ্যমের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা, ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে অন্তর্ভুক্ত করা। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং উগ্রবাদবিরোধী কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া। পাড়া-মহল্লায় ক্লাব, পাঠাগার এবং ক্রীড়ানুষ্ঠান ও বিনোদনমূলক কার্যক্রমের সুবিধা নিশ্চিত করা। প্রাপ্তবয়স্ক না হলে সন্তানদের ব্যক্তিগতভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের আচরণগত পরিবর্তনের দিকে খেয়াল রাখা। পরিবারের সদস্য, বিশেষ করে সন্তানদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ও ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনা এবং ধর্মের ইতিবাচক দিক তুলে ধরা।
(amadershomoy)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন