চীনের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার অর্থায়নপুষ্ট হুয়াওয়ে: সিআইএ

চীনভিত্তিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম ও ডিভাইস নির্মাতা হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের অভিযোগের তালিকা দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। এ তালিকায় নতুন সংযোজন ঘটিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ)। সংস্থাটির অভিযোগ, চীনের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংস্থা হুয়াওয়েকে অর্থের জোগান দেয়। অবশ্য এ অভিযোগ তাত্ক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে হুয়াওয়ে। খবর রয়টার্স।

প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সিআইএ অভিযোগ করেছে চীনের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিশন, পিপলস লিবারেশন আর্মি এবং দেশটির রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটি তৃতীয় শাখা থেকে অর্থ পেয়ে থাকে হুয়াওয়ে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ইন্টেলিজেন্স-শেয়ারিং গ্রুপ ফাইভ আইজের সঙ্গে নিজেদের এমন ধারণা বিনিময় করে সিআইএ। ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডের গোয়েন্দা বিভাগ ফাইভ আইজের বাকি সদস্য।
বিবৃতিতে নিজেদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে হুয়াওয়ে। প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ন্যূনতম প্রমাণ ছাড়া কোনো বেনামি সূত্রের অনর্থক অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করবে না হুয়াওয়ে। হুয়াওয়ে ছাড়াও সিআইএ এবং চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। তবে হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে এমন একসময় নতুন অভিযোগ উত্থাপিত হলো, যখন কিনা ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ চলছে ও হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এর ফলে পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে পড়বে। অবশ্য হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
হুয়াওয়ের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ও এর প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেইয়ের কন্যা মেং ওয়ানঝুকে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে গত ডিসেম্বরে কানাডায় গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। যদিও ওয়ানঝুর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিনি কোনো ধরনের অন্যায় করেননি এবং তার বাবাও বারবার বলেছেন, গ্রেফতারের এ ঘটনা পুরোপুরি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নানা অভিযোগ ওঠার পর প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সম্পর্ক রাখা নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সতর্ক হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, কেন্দ্রীয় তহবিল হারানোর ভয়ে হুয়াওয়ের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বিভিন্ন শীর্ষ পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান। আরেক চীনা প্রতিষ্ঠান জেডটিইও যুক্তরাষ্ট্রের একই ধরনের রোষানলের শিকার।
জেডটিই চুক্তি ভঙ্গ করেছে এবং ইরান ও উত্তর কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পণ্য অবৈধভাবে পাচারের সময় ধরা পড়েছে, এমন অভিযোগ উত্থাপন করে কোম্পানিটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞার জের ধরে গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই এ সময়ের মধ্যে জেডটিইকে বেশির ভাগ ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছিল। মোট ১৪০ কোটি ডলার জরিমানা দেয়ার বিনিময়ে এ নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পায় জেডটিই।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাগে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এক বৈঠকে মিত্র দেশগুলোকে বিনিময়যোগ্য নিরাপত্তা ও নীতিমালা-বিষয়ক পদক্ষেপ গ্রহণে চাপ দেবে যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে ফাইভজি টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কে আধিপত্য করা হুয়াওয়ের জন্য আরো কঠিন হয়ে উঠবে।
(bonikbarta)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget