রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় ইউক্রেইনের রাজধানী কিয়েভের সুনির্দিষ্ট কয়েকটি নিশানায় হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে অধিবাসীদের সতর্ক করেছে এবং এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছে।
মঙ্গলবার বিকালে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, “রুশ বাহিনী কিয়েভে ইউক্রেইনের সিকিউরিটি সার্ভিসের (এসবিইউ) প্রযুক্তি কেন্দ্রগুলো এবং প্রধান সাই-অপস সেন্টারকে (সেন্টার ফর ইনফরমেশন এন্ড সাইকোলোজিক্যাল অপারেশনস) নিশানা করে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
“নির্ভুলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম অস্ত্র” দিয়ে ওইসব নিশানায় হামলা চালানো হবে জানিয়ে কাছাকাছি এলাকাগুলো থেকে অধিবাসীদেরকে সরে যেতে বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
এতে বলা হয়, “রাশিয়ার বিরুদ্ধে উস্কানিতে ইউক্রেইনীয় জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে যেসব নাগরিক জড়িত তাদেরকে এবং কিয়েভের অন্যান্য বাসিন্দা যারা এইসব রিলে-স্টেশনের কাছে বাস করছেন, তাদেরকে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
যদিও এই লক্ষ্যস্থলগুলো নগরীর কোন জায়গায় অবস্থিত সে সম্পর্কে কোনওকিছু জানানো হয়নি বিবৃতিতে। রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রচারণা বন্ধ করতেই এই হামলা শুরু করছেন তারা।
‘রিলে-স্টেশন’ শব্দটির ব্যাখ্যায় সিএনএন-এর সংবাদদাতা ক্ল্যারিসা ওয়ার্ড বলেছেন, এর মানে যোগাযোগ টাওয়ার, বড় বড় অ্যান্টেনা বা এই ধরনের নিশানাই বোঝাচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।
ওয়ার্ড বলেন, এখন পর্যন্ত কিয়েভের উপকণ্ঠের বিভিন্ন লক্ষ্যে হামলা হয়েছে। কিন্তু এখন হামলা কিয়েভের কেন্দ্রস্থলে হতে চলেছে বলে মনে হচ্ছে, যেরকমটি অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন।
মঙ্গলবারেই কিয়েভের দিকে এগুতে শুরু করেছে রাশিয়ার প্রায় ৪০ মাইল লম্বা একটি সাঁজোয়া বহর। সেই বহরের ছবি ধরা পড়েছে উপগ্রহচিত্রে। সেনাসদস্যর সঙ্গে ট্যাংক, সাঁজোয়া গাড়িও আছে এই বহরে।
স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, বহরটি উত্তর দিক থেকে কিয়েভে এগুচ্ছে। এই ছবি প্রকাশ্যে আসার পরই কিয়েভ-সংলগ্ন এলাকায় বোমা ফেলা শুরু করেছে রাশিয়া।
কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিতসকো মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “শত্রুরা রাজধানীর উপকণ্ঠে আছে। ইউক্রেইনের সেনাবাহিনী কিয়েভকে সুরক্ষিত রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নগরীর প্রবেশপথগুলোতে ব্যারিকেড এবং চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে।”
তিনি নগরবাসীর সবাইকে শান্ত এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। এর আগে এক বার্তায় ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, কিয়েভকে সুরক্ষিত রাখাকে সরকার সবার আগে প্রাধান্য দেবে। ‘শত্রুদের জন্য কিয়েভ গুরুত্বপূর্র্ণ টার্গেট’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা তাদেরকে রাজধানীর প্রতিরোধ ভাঙতে দেব না।”
“কিয়েভ এক বিশেষ স্থান। আমরা কিয়েভকে সুরক্ষিত রাখতে পারলে আমাদের রাষ্ট্রকে সুরক্ষিত রাখতে পারব। এটি আমাদের দেশের প্রাণকেন্দ্র। এখানে স্পন্দন চলমান রাখতে হবে।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন