মধুমতি নদী থেকে বালু উত্তোলনে আতংকিত গ্রামবাসী
Villagers panicked over sand extraction from Madhumati river
ফরিদপুরের মধুমতি নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কারনে বাগাট ইউনিয়নের মিটাইন ও গোমরাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নদী থেকে অবাদে বালু উত্তোলনের কারনে নদী ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া মধুমতি চরের কয়েকশ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। বর্তমানে চরের বিস্তির্ন এলাকাজুড়ে আবাদ করা বাদাম, মুসুরী, পিয়াজ খেত নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে মধুমতি নদী থেকে শক্তিশালী কয়েকটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে। বালু উত্তোলনের কারনে ইতোমধ্যেই নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। হুমকির মধ্যে রয়েছে বাড়ী-ঘর, স্কুল, মসজিদ-মাদ্রাসা, কবরস্থানসহ কয়েকশ একর ফসলী জমি। বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয়রা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার পাশাপাশি জেলা প্রশাসকসহ উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। ফলে অল্প কয়েকদিনের জন্য বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও ফের শুরু হয়েছে বালু উত্তোলন।
বাগাট ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের বাদশা শেখ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী একটি মহল নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে। নদী থেকে বড় আকারের পাইপ ধারা প্রায় ৪ কিলোমিটার দুরে নিয়ে বালু ফেলা হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু কাটার কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ফসলী জমি। চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে চরের কৃষকদের। তাছাড়া বড় আকারের পাইপের কারনে সরকারী রাস্তা, জনগনের বসত বাড়ী, ফল-সবজি বাগানের ক্ষতি হচ্ছে। হুমকির মুখে রয়েছে বেশকিছু স্থাপনা। এ বিষয়ে একাধিক বার জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পাওয়া যায়নি।
কৃষক আকমল শেখ, মহিউদ্দিন মোল্যা,সাহেব আলীরা জানান,নদী থেকে বালু তোলার কারনে তারা এখন দিশেহারা অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। মধুমতি চরে লাগানো বাদাম, মুসুরি, ধনিয়া, পিঁয়াজসহ নানা ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাইপের বালু মাঠে পড়ার কারনে সেখানে কোন চাষাবাদ করা যাচ্ছেনা। তাছাড়া বালু উত্তোলনের কারনে নদীর পাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারন করবে বলে জানান তারা। এ বিষয়ে কয়েকশ গ্রামবাসী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেবার পর তাদের নানাভাবে হয়রানী করছে বালু উত্তোলনকারীদের পক্ষে থাকা লোকজন। অবিলম্বে তারা মধুমতি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, বালু উত্তোলন না করতে প্রশাসনের লোকজন কয়েকদিন আগে বলে যায়। এরপর কয়েকদিন বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। কিন্তু ফের বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত জনৈক কুইন কাজী মোবাইল ফোনে জানান, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি নেওয়া আছে।
বাগাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মতিয়ার রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসিকুর রহমান চৌধুরী জানান, বালু উত্তোলনের কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর আগে অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছিল। এখন যদি বালু উত্তোলন করা হয়ে থাকে তাহলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন