শনি-রবিবার দেশে পৌঁছাতে পারে ইউক্রেনে নিহত নাবিকের লাশ
The body of a sailor killed in Ukraine may reach the country on Saturday-Sunday
ইউক্রেইনে যুদ্ধের মধ্যে রকেট হামলায় প্রাণ হারানো বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ শুক্রবার রাতেই রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে পৌঁছাবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশের কূটনীতিকরা।
পোল্যান্ডের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভোরে ইউক্রেইন থেকে রোমানিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় হাদিসুরের মরদেহবাহী গাড়ি। মলদোভা হয়ে সেটি রোমানিয়ায় পৌঁছাবে।
আরো পড়ুন: সন্তানের সামনে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় আদালতে মামলা
মরদেহ বুখারেস্টে পৌঁছালে তারপর দেশে পাঠানোর বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন রোমানিয়ায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী।
ইউক্রেইনে যুদ্ধের মধ্যে ওলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা অবস্থায় ২ মার্চ রকেট হামলার মুখে পড়ে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। তাতে নিহত হন ওই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর।
আতঙ্ক ও ক্ষোভের মধ্যে পরদিন ৩ মার্চ জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নাবিকদের বাংলার সমৃদ্ধি থেকে নামিয়ে আনা হয়। সেখান থেকে একটি শেল্টার হাউজের বাংকারে ঠাঁই নেন নাবিকরা। হাদিসুরের মরদেহও রাখা হয়েছিল বাংকারের ফ্রিজারে।
উদ্ধার পাওয়ার তিন দিন পর মলদোভা হয়ে ২৮ নাবিক রোমানিয়ায় পৌঁছান। সেখান থেকে বুধবার বিমানে দেশে ফেরেন এই জাহাজিরা।
তাদের দেশে ফেরার খবরে ওইদিন বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন হাদিসুরের পরিবারের সদস্যরা। তারা আকুতি জানান দ্রুত তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ইউক্রেইনের ওলভিয়া এলাকা থেকে রওনা করে হাদিসুরের মরদেহবাহী গাড়ি। মলদোভা হয়ে বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে মরদেহ বুখারেস্টে পৌঁছাতে পারে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তা মরদেহ রোমানিয়ায় নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “রোমানিয়ায় দূতাবাসের কাছে তা হস্তান্তর করা হবে। সেখান থেকে দেশে আসতে দুই-তিন দিন লাগতে পারে।”
আরো পড়ুন: যা থাকছে নিপুণের ওয়েব সিরিজ ‘সাবরিনা’য় (ভিডিও)
বরগুনার বেতাগীর হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুর রাজ্জাকের চার ছেলেমেয়ের মধ্যে হাদিসুর ছিলেন মেজ। চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে পড়ালেখা শেষ করে ২০১৮ সালে এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে ওঠেন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে।
জাহাজের চাকরিতে বছরের একটি বড় সময় থাকতে হয় বাইরে। সবশেষ বাড়ি এসেছিলেন মাস ছয়েক আগে। তবে পরিবারের সঙ্গে কথা হত নিয়মিত। যেদিন জাহাজে রকেট পড়ল, সেদিনও ফোনে মা আমেনা বেগম আর ছোট ভাই গোলাম রহমান তারেকের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল।
তার মৃত্যুর খবর আসার পর তারেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, দেশে ফিরলেই বাড়ির কাজে হাত দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল হাদিসুরের, স্বপ্ন ছিল পরিবারের জন্য আরও অনেক কিছু করার; সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন তিনি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন