প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ অভিযান ঝিমিয়ে পড়ায় বেড়েছে ইছামতী নদী থেকে বালু উত্তোলন। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার উত্তর রাঙ্গুনিয়ার রাজানগর ইউনিয়নের বগাবিলি সেতু।
অথচ সেতুর আশপাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানছে না বালু উত্তোলক চক্র। এ অবস্থায় বগাবিলি সেতুর ৩টি পিলারের গোড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেতু। এমনকি সেতুর ৩টি পিলারের নিচে স্কাউরিং সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় সেতুটি ধসে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের প্রাণঘাতির ঘটনা। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসন অবৈধ বালু উত্তোলনকারী হোতাদের নামের তালিকা তৈরি করেছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে বগাবিলি সেতু পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, অবৈধভাবে বালু তোলার ফলে সেতুটির ৩টি পিলারের চারপাশ থেকে মাটি সরে গেছে। এতে সেতুটি ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়েছে। এসব কারণে সেতুটির ভারবহণ ক্ষমতাও অনেকাংশে কমে গেছে। সেতুর উপর কোন মালবাহী গাড়ী উঠলেই সেতুটি কেঁপে উঠে এবং গাড়িগুলোকে পার হতে হচ্ছে খুব সাবধানে। এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেতুটি পরিদর্শন বা এসব পিলারকে বিপজ্জনক মর্মে কোন সতর্কবার্তা জারি করা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, ইছামতি নদী ওপর নির্মিত বগাবিলি সেতুর দুই পাশের আধা কিলোমিটার মধ্যে ৪টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এমনকি অনেকে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে ড্রেজারের সাহায্যে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন ইটভাটা, পুকুর, বসতভিটা ভরাটসহ বালু বিক্রি করছেন। এতে করে হুমকির মুখে পাড়েছে সেতুর পিলার। কোনোভাবেই সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানছেন না বালু উত্তোলনকারীরা। সেতুর এত কাছ থেকে বালু তোলা ঠিক হচ্ছে না। এ বিষয়ে স্থানীয় সাংসদ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এদিকে ইছামতি নদীর কারণে রাজানগর ইউনিয়নের বগাবিলি গ্রামটি উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন। ফলে উভয় পাড়ের মানুষকে একত্রিত করার জন্য এবং বগাবিলি গ্রামের মানুষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ২০০৯ সালে এক কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ইছামতি নদীর ওপর ১২৬. ২৫ মিটির দীর্ঘ বগাবিলি সেতুর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। চট্টগ্রামের কনসুনেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড বিল্ডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। ২০১৩ সালে বর্তমান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সেতুটি উদ্ভোধন করেন।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুস বলেন, ‘প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ অভিযান অব্যাহত আছে। ঘটনাস্থলে না গিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাইনা, তবে কেউ কেউ বেপরোয়া হয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন। বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাও করেছি। অনেককে আটক, জারিমানা, খননযন্ত্র পোড়ানো হয়েছে। বগাবিলি সেতুর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। সত্যতা পেলেই কোন ছাড় দেয়া হবেনা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন