বাসের জানালা দিয়ে চেইন ধরে টান, অল্পতে রক্ষা গৃহবধূর প্রাণ |
আসমানি বাসে সপরিবারে আব্দুল্লাহপুর থেকে খিলক্ষেত যাচ্ছিলেন হাফিজুর রহমান। বাসের ডান পাশেজানালার দিকে বসেছিলেন তার স্ত্রী মিথিলা আক্তার।
বাম পাশে হাফিজুরের কোলে ছিল ৫ বছরের ছেলে। বাস আজমপুর পৌঁছালে যাত্রী ওঠানোর প্রতিযোগিতায় জটে পড়ে। এরই মধ্যে হঠাৎ জানালার বাইরে থেকে কেউ একজন মিথিলার গলার চেইন ধরে টান দেন। তবে চেইন নিতে না পারলেও গলায় তৈরি হয় ক্ষত। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে রাস্তা অতিক্রম করে দৌড়ে পালিয়ে যায় ছিনতাই চক্রের ওই সদস্য।
এদিকে হঠাৎ এমন ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে যান মিথিলা। ভয়ে চিৎকার শুরু করেন তিনি ও তার ছেলে। এরপর বাসের যাত্রীদের মধ্যে শুরু হয় হইচই। পরে খিলক্ষেত নেমে একটি ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন মিথিলা। গত বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুর পৌনে বারোটায় এ ঘটনায় এখনো আতঙ্ক কাটেনি তার।
মিথিলা বলেন, এতো বছর ধরে ঢাকায় থাকি কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি। জানালা দিয়ে এভাবে ছিনতাই হতে পারে আমার ধারনাও ছিল না। তাই অনেক ভয় পেয়ে যাই। গলার চেইন ধরে টানার কারণে গলা ও ঘাড়ে জখম হয়েছে।
যেভাবে চেইন টান দিয়েছে তাতে আরও বড় কোনো ঘটনা ঘটে যেতে পারতো, অল্পের উপর দিয়ে বেঁচে গেছি।
শুধু উত্তরা-খিলক্ষেত নয়, গোটা রাজধানীতে বেড়েছে চলন্ত বাসে ছিনতাই। দিনে কিংবা রাতে, পথচারী ও বাসযাত্রীদের আতঙ্ক এই ছিনতাইকারীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেশার টাকা জোগাড় করতেই এ পথ বেছে নিচ্ছে রাস্তার পাশে বেড়ে উঠা কিশোররা।
গত ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর কমলাপুর এলাকায় মিতুল রায় রনি নামের এক নারী তার স্বামীর সঙ্গে কমলাপুর এলাকা থেকে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
হঠাৎ এক ছিনতাইকারী ওই নারীর গলা থেকে টান দিয়ে স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় টহলরত র্যাবের একজন সাহসী সদস্য এ ঘটনা দেখে ছিনতাইকারীর পেছনে দৌড়াতে থাকে। কিছুদূর যাওয়ার পরই ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন তিনি। পরে জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তি চেইন ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে।
জান গেছে, এসব ছিনতাইকারী যানজটে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়া বাসের জানালার পাশে বসে থাকা যাত্রীদের অনুসরণ করে। বাসটি থামতেই মুহূর্তের মাধ্যেই জানালা দিয়ে বাসের যাত্রীর মোবাইল, গলার চেইন ছোঁ মেরে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নিত্যদিনের চিত্র এটি। সামান্য অসাবধানতাতেই ছিনতাইকারীর খপ্পরে চলে যায় যাত্রীদের মোবাইল, গহনাসহ নানা মূল্যবান সম্পদ।
উত্তরা পূর্ব থানার ওসি জহিরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শুধু ছিনতাই চক্রের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালাচ্ছে উত্তরা পূর্ব, পশ্চিম ও বিমানবন্দর থানা। গত এক বছরে আমার এরিয়ায় প্রায় ১৫০ ছিনতাইকারী আটক করা হয়েছে, কোর্টে চালান করা হয়েছে। এছাড়া সিভিল টিম কাজ করছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজও পর্যবেক্ষণ করি।
তিনি আরও বলেন, ছিনতাইকারীদের বেশির ভাগ টঙ্গী এলাকা থেকে আসে। এরা মাদকসেবী। কেউ ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে অবশ্যই সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খিলক্ষেত থানার ওসি (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, গত ২-৩ মাসের মধ্যে আমাদের এরিয়ায় এমন ঘটনার খবর নেই। ফুট পেট্রোল, মোবাইল টিম নিয়মিত টহল দিচ্ছে।
আরো পড়ুন:
- বালিয়াডাঙ্গীতে এক পরিবারের চার সন্তানই প্রতিবন্ধী
- Afran Nisho: ভারতীয় ওয়েব সিরিজে আফরান নিশো
- জয়নাল হত্যা মামলার সব আসামি খালাস; পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ
- ফেনীর দাগনভূঁঞায় মোটরসাইকেল চোরাই চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার
- ফেনীর ফুলগাজীতে দুই মহিলা ছিনতাইকারী গ্রেফতার
- পুতিনের বেপরোয়া পদক্ষেপ ইউরোপকে সরাসরি হুমকি দিচ্ছে
- Russia Ukrain: বাংলাদেশি জাহাজে হামলার জন্য ইউক্রেনকে দুষছে রাশিয়া
- সাড়ে ১২ কোটি মানুষ টিকার আওতায়
- নিয়ন্ত্রণহীন ভোজ্য তেলের বাজার
- ইউক্রেনে নাজুক অবস্থায় পড়ে গেছি: প্রতিমন্ত্রী
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন