Latest Post


টাইগারদের নিউজিল্যান্ড সফর থেকে সাকিব আল হাসান ছুটি নেওয়ায় দলে ডাক পেয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান ফজলে মাহমুদ রাব্বি। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় ক্রিকেট লিগের পারফরম্যান্স বিবেচনায় তাকে দলে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহক রাব্বি। ৬ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬০৩ রান। ৫ ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন রাব্বি। একটি সেঞ্চুরিও করেছেন রাব্বি।

শুধু এবারই প্রথম না এর আগেও ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ডাক পেয়েছিলেন ফজলে রাব্বি। শুধু ডাকই পাননি, অভিষেকও হয়েছিল তার। তবে অভিষেকটা রাঙাতে পারেনিনি রাব্বি। দুটি ওয়ানডে খেলে দুটিতেই শূন্য রানে আউট হন তিনি। তবে এবার ফজলে রাব্বির অভিষেক হতে যাচ্ছে টেস্ট ম্যাচে। জাতীয় ক্রিকেট লিগে তার ভালো পারফরম্যান্সের বিবেচনায় বিসিবি নির্বাচন করেছে ৩৩ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়কে। 

এদিকে পারিবারিক কারণে নিউজিল্যান্ড সফরে খেলতে চাননি সাকিব। সে জন্য বিসিবিকে লিখিত চিঠি দিয়েছিলেন দেশসেরা এ অলরাউন্ডার। বিসিবি তার ছুটি মঞ্জুরও করে। ৬ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের ছুটি মঞ্জুরের কথাটি নিশ্চিত করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এর আগে বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফরও করেননি সাকিব। 


এবারের সফরের জন্য সাকিবকে অন্তর্ভুক্ত করেই শনিবার ১৮ সদস্যের দল ঘোষণা করেছিল বিসিবি। সেই দলে সাকিব ছাড়াও ছিলেন তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম, ইয়াসির আলি রাব্বি,  নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, নুরুল হাসান সোহান, ইয়াসির আলি রাব্বি, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেনরা। তবে সাকিব ছুটি নেয়ায় তার বদলি হিসেবে দলে জায়গা করে নিয়েছেন ফজলে রাব্বি। 


পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ধবলধোলাই হওয়ার রাতেই নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয়েছে বাংলাদেশ দল। সেখানে এক সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইনের পর মাঠে অনুশীলনের সুযোগ পাবে তারা। দুই টেস্টের প্রথমটি শুরু হবে আগামী বছরের প্রথম দিন। দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ৯ জানুয়ারি। 

বাংলাদেশ স্কোয়াড | 

মুমিনুল হক (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, নুরুল হাসান সোহান, ইয়াসির আলি রাব্বি, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, শরিফুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ, শহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয় ও নাঈম শেখ।


লিওনেল মেসিবিহীন বার্সেলোনা যে কতোটা বিবর্ণ সেটি প্রমাণ হলো আরও একবার। এবারও দলটির সর্বনাশ করে ছেড়েছে বায়ার্ন মিউনিখ।

লেওয়ানডস্কির দলের কাছে ৩-০ গোলে হেরে গ্রুপের ‘তৃতীয় সেরা’ দল হয়ে কাতালান ক্লাবটির জায়গা হয়েছে ইউরোপা লিগে।

শেষবার বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোতে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল ২০০০-০১ মৌসুমে। ২১ বছর পর একই ভাগ্যবরণ করতে হলো কাতালানদের। ইউরোপা লিগে শেষবার তারা খেলেছিল ২০০৪ সালে। ফ্র্যাঙ্ক রাইকার্ড তখন বার্সার কোচ। 

সে হিসেবে ১৭ বছর পর জাভির বার্সা খেলবে ইউরোপা লিগে।

চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বার্সার বিদায়ের মধ্য দিয়েই নিশ্চিত হয়ে যায় উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর ১৫ দল।


বৃহস্পতিবার রাতে আটালান্টাকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোয় জায়গা করে নেয় ভিয়ারিয়াল। 

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বের প্রথম লেগের ম্যাচের তারিখও নির্ধারিত হয়ে গেছে। 

২০২২ সালের ১৫, ১৬, ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি হবে প্রথম লেগ। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ টুর্নামেন্টের নকআউট পর্বের দ্বিতীয় লেগ ৮, ৯, ১৫ ও ১৬ মার্চ।

শেষ ষোলোতে পা রেখেছে যারা-

লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার সিটি, পিএসজি, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, আয়াক্স, স্পোর্টিং সিপি, ইন্টার মিলান, বায়ার্ন মিউনিখ, বেনফিকা, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিঁল, রেড বুল সলসবুর্গ, চেলসি, জুভেন্টাস ও ভিয়ারিয়াল।


ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়ার একদিন পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কাছ থেকে ‘ধন্যবাদ’ পেয়েছেন বিরাট কোহলি। এ নিয়ে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীর ওপর চটেছেন কোহলির ভক্ত-সমর্থকরা। তার বলছেন, এটা কোহলির জন্য অসম্মানজনক।

কোহলিকে ওয়ানডে ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি বিসিসিআই একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এক লাইনে জানিয়ে দিয়েছিল। বুধবার সেই বিবৃতি দেয়ার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে টুইট বার্তায় কোহলিকে ধন্যবাদ জানায় ভারতীয় বোর্ড।

বৃহস্পতিবার রাতে করা ওই টুইটে লেখা হয়েছে, ‘একজন নেতা যে দৃঢ়তা, একাগ্রতা, আবেগ দিয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে। ধন্যবাদ ক্যাপ্টেন কোহলি।’ সঙ্গে একদিনের ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে কোহলির পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয়েছে।


এদিকে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী বৃহস্পতিবার কোহলির অধিনায়কত্ব হারানো বিষয়ে বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত বোর্ড এবং নির্বাচকদের তরফে যৌথভাবে নেয়া হয়েছে। বোর্ড এর আগে কোহলিকে অনুরোধ করেছিল টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব থেকে না সরতে। কোহলি রাজি হয়নি।


এর পরেই নির্বাচকরা সিদ্ধান্ত নেন, দুটো সাদা বলের ফরম্যাটে দু’জন আলাদা অধিনায়ক রাখার মানে নেই। তাই ঠিক করা হয় কোহলিকে টেস্ট অধিনায়ক রাখা হবে এবং সাদা বলের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেবে রোহিত। আমি নিজে সভাপতি হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে কোহলির সঙ্গে কথা বলেছি। নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানও ওর সঙ্গে কথা বলেছেন।’


মুরাদের অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ৯৪টি ভিডিও লিংক সরিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

মুরাদ হাসানের ২৬৮টি ভিডিও লিংক ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সেসব ভিডিওর মধ্যে ১৭৪টি লিংক এখনো সরানো বাকি আছে বলে বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ জানিয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় বিটিআরসির কার্যালয়ে  অনুষ্ঠিত বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সঙ্গে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) এক মতবিনিময় সভায় নাসিম পারভেজ এ কথা বলেন। 

এর আগে মুরাদ হাসানের অডিও-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলতে গত মঙ্গলবার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পরে বিটিআরসির ডিজিটাল নিরাপত্তা দলের সদস্যরা লিংকগুলো শনাক্ত করেন। 

তবে ‘ধর্ষণ’ শব্দ যে কনটেন্টগুলোতে (আধেয়) আছে, সেগুলো বিটিআরসি বলার আগেই ফেসবুক সরিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মহাপরিচালক মো. নাসিম পারভেজ। 

এদিকে, ইউটিউব থেকে বিটিআরসির পাঠানো মুরাদের ১২০টি কনটেন্টের মধ্যে দুটি সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মো. নাসিম পারভেজ। 

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে পত্র পাঠান ডা. মো. মুরাদ হাসান। রাতে সেটি গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর পর এ বিষয়ে সরকারি গেজেট প্রকাশিত হয়।

বিএনপির এক শীর্ষ নেতার মেয়েকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার মধ্যেই ডা. মুরাদ হাসানের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।  

ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপের ওই অডিওতে মুরাদ হাসানকে অশ্লীল কথাবার্তা ও নায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দিতে শোনা যায়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।  

এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার।  

এর পর সোমবারই মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেন মুরাদ।  

বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রকাশিত গেজেট বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। এ পদত্যাগ অবিলম্বে কার্যকর হবে।


তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান কানাডার উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন। এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে-৮৫৮৫ ফ্লাইটে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিটে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।

এর আগে গতকাল রাত ৯টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে পৌঁছান সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। তিনি বিমানবন্দরের রজনীগন্ধা লাউঞ্জে অপেক্ষা করেন। এরপর বোর্ডিং ও ইমিগ্রেশন শেষ করে ৭ নম্বর গেট দিয়ে তিনি উড়োজাহাজে ওঠেন।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে মুরাদ হাসানের যাওয়ার কথা থাকলেও ফ্লাইটটি ছেড়ে যায় দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিটে। যাত্রীদের চাপ থাকায় ফ্লাইটটি ঢাকা ছাড়তে দেরি হয়। মুরাদ হাসান দুবাই হয়ে কানাডার টরন্টোয় পৌঁছাবেন।

ডা. মুরাদ হাসানের দেশত্যাগের খবর এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক। তিনি জানান, মুরাদ কানাডার উদ্দেশে দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিটে দেশ ছেড়েছেন।

দেশ ছাড়ার সময় মুরাদ হাসানের পরনে কালো রঙের ব্লেজার, টি–শার্ট, নীল রঙের জিনস, মাথায় কালো ক্যাপ, মুখে কালো মাস্ক ও চোখে চশমা ছিল। তাঁর কোনো সফরসঙ্গী ছিল না।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মুরাদ হাসানের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন (৭ ডিসেম্বর) নিজের হাতে নিয়ে গেছেন তিনি।


এদিকে, ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে এরই মধ্যে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটও দায়ের হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মুখে বিতর্কিত এ নেতা দেশত্যাগ করলেন।

এর আগে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হলেও তাঁর দেশত্যাগে কোনো বাধা নেই জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, মুরাদ হাসান বিদেশে যেতে চাইলে সরকার বাধা দেবে না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মুরাদ হাসান বিদেশে যাবেন কি না, সেটা তাঁর সিদ্ধান্ত। এখানে আমাদের কিছু করার নাই। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় তিনি যেকোনো দেশে যেতে পারেন।’

অশালীন ও নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ মুরাদ হাসান। গত সোমবার (৬ ডিসেম্বর) মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেন মুরাদ। ওইদিন বিকেলেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রকাশিত গেজেট বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।

মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য। মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের পর জামালপুর আওয়ামী লীগ থেকে মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দলের আগামী কার্যনির্বাহী সংসদীয় বৈঠকে।


ভয়ংকর ব্যাপার!

চলতি অ্যাশেজ সিরিজের ব্রিসবেন টেস্টে আজ দ্বিতীয় দিনে এমন ঘটনা ধরা পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘চ্যানেল সেভেন’-এর ক্যামেরায়। গুরুতর কারিগরি ত্রুটি হিসেবে দেখা হচ্ছে বিষয়টিকে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্কও।

চ্যানেল সেভেনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘স্টোকসের প্রথম ৫ ওভারে ১৪ বার “ওভারস্টেপের” ঘটনাটি ধরেছেন চ্যানেল সেভেনের ট্রেন্ট কোপল্যান্ড।’ এর মধ্যে দুটি ডেলিভারি ‘নো বল’ ধরেছেন আম্পায়ার।


ওয়ার্নার ১৭ রানে ব্যাট করার সময় টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার পর প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আসেন ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। চতুর্থ ডেলিভারিতে ওয়ার্নারকে বোল্ড করলেও টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় ডেলিভারিটি ‘নো বল’ ছিল। এর বাইরে স্টোকসের আরেকটি অবৈধ ডেলিভারি ‘নো বল’ হিসেবে ধরতে পেরেছেন আম্পায়ার।

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারকে তখন বেশ খেপে যেতেও দেখা গেছে। কিছুক্ষণ পরই চ্যানেল সেভেনের ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ওভারে স্টোকসের আগের তিনটি ডেলিভারিই ‘নো বল’ ছিল। প্রতিবারই ‘ওভারস্টেপ’ করেন ইংল্যান্ড তারকা। কিন্তু একটিও আম্পায়ার কিংবা টিভিপ্রযুক্তি ধরতে পারেনি!

বেশ কিছুক্ষণ পর সেভেনের ভিডিওতে দেখানো হয়, স্টোকস প্রথম সেশনে এমন ১৪টি ‘ওভারস্টেপ’ ডেলিভারি করেছেন, যার প্রতিটিতে তিনি বোলিং ক্রিজের দাগ পেরিয়ে গেছেন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এরপর হঠাৎ করেই জানায়, টেস্ট ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই আইসিসির লাইভ রিভিউ প্রযুক্তি ঠিকমতো কাজ করেনি।

ব্রিসবেন টেস্টের প্রথম দিনে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের ‘নো বল’ ধরা পড়েনি। তবে এর মানে এই নয় যে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা নো বল করেছিলেন ঠিকই, প্রযুক্তির ব্যর্থতায় তা ধরা পড়েনি। কামিন্স-স্টার্করা নো না–ও করতে পারেন। কিন্তু আজ এক বোলারেরই ১২টি ডেলিভারি চোখ এড়িয়ে যাওয়ার পর ‘নো বল’ ছাড়া প্রথম দিন নিয়ে ভ্রুকুটি জাগতেই পারে।

অস্ট্রেলিয়ার সংবাদকর্মী ও ধারাভাষ্যকার অ্যালিসন মিচেল চ্যানেল সেভেনকে বলেন, ‘এই টেস্ট শুরুর আগে আইসিসিকে যে প্রযুক্তি সরবরাহ করা হয়েছে, তা ঠিকমতো কাজ করেনি। অর্থাৎ এই টেস্ট ম্যাচ ২০২০ সালের আগের কন্ডিশনে খেলা হচ্ছে, যেখানে শুধু উইকেট নেওয়ার ডেলিভারিতেই দেখা হতো বোলারের পা দাগ পেরিয়ে গেছে কি না।’


অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের কাছে, টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সিরিজে এমন ঘটনা ‘হতাশার’ এবং সাবেক ওপেনার ম্যাথু হেইডেনের চোখে ‘অবিশ্বাস্য ব্যাপার।’ হেইডেন বলেন, ‘খেলা থেকে এ বিষয় পরিহার করতে হবে। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে পুরো সেবাই পেতে হবে। কারণ, প্রযুক্তি থাকলে মাঠের আম্পায়াররা খুব স্বাভাবিকভাবেই এটার ওপর ভরসা রাখবেন।’


ব্রিসবেন টেস্টে মাঠে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করছেন পল রেইফেল ও রড টাকার। টিভি আম্পায়ার হিসেবে আছেন পল উইলসন।

আম্পায়ারদের সমালোচনা করেন পন্টিং, ‘কিছু নো বল মোটেও ছোটখাটো ছিল না। (দাগ থেকে) ৬ ইঞ্চিও পরিমাণও (পা) বেরিয়ে গেছে। এখনকার আম্পায়াররা কি অলস হয়ে যাচ্ছেন? ভালোমতো দেখেন না? আগে বৈধ ডেলিভারিতে উইকেট পড়লেও তাঁরা নো বল ডাকার কারণেই এ প্রযুক্তি এসেছে।’


গত বছর আগস্টে পাকিস্তান-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে আইসিসি জানায়, টিভি আম্পায়ার এখন থেকে বোলারের প্রতিটি ডেলিভারি বৈধ কি না (শুধু নো বলের ক্ষেত্রে), তা পর্যবেক্ষণ করবেন।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, সদ্য বিদায়ী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বিদেশে যাবেন কিনা, এটা তার সিদ্ধান্ত। তিনি বিদেশে যেতে চাইলে সরকার বাধা দেবে না।

বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বিদেশে যাবেন কিনা, এটা তার সিদ্ধান্ত। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।

ডা. মুরাদ হাসান বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এ কথা জানানোর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, এগুলো আমার জানা নেই, তিনি বিদেশে যাবেন না স্বদেশে থাকবেন এটা উনার ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।

এদিকে একটি ভার্চ্যুয়াল টকশোতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ডা. মুরাদ। এরপর তার সমালোচনা করেন অনেকে। এরপর সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীর ফোনালাপের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নোংরা ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে তাকে হুমকিও দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

সমালোচনার মুখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর গত মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন ডা. মুরাদ হাসান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশক্রমে পদত্যাগপত্রটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠান। এদিন রাতেই সেটি গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

এরপর ডা. মুরাদ হাসান তার ফেসবুক আইডিতে লিখেন, ‘আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা দেশরত্ন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সব সিদ্ধান্ত মেনে নেব আজীবন। ’


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশালীন ও শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্যের জেরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসান বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।  

বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) রাতে কানাডায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি টিকিট কেটেছেন।

সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস সূত্রে জানা গেছে বুধবার (০৮ ডিসেম্বর) তিনি একটি টিকিট কাটেন।

প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ডা. মুরাদের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন মঙ্গলবার তার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুরাদ হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুরাদ হাসানের অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ৩৮৭টি লিংক চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

মন্ত্রিত্ব হারানো মুরাদ হাসানের নাম তথ্য মন্ত্রণালয়ের নামফলক থেকেও মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিমন্ত্রীর তালিকাও তার নামটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও তার নাম নেই।

বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে মুরাদ হাসান আলোচনা-সমালোচনায় এসেছেন। গত সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে ডা. মুরাদ হাসানের নারী বিদ্বেষী বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। এরপর ওই দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

পরদিন মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সকালেই পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান মুরাদ হাসান। পরে মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একজন কর্মকর্তা পৌঁছে দেন। সেই পদত্যাগপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সন্ধ্যায়  প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বিষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।

এর আগে মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।


অসৌজন্যমূলক বক্তব্য ও অশালীন কথোপকথনের জেরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে এবার বিদেশ যাওয়ার চেষ্টায় আছেন বলে জানা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে দেশের বাইরে যেতে বিমানের টিকিটও সংগ্রহ করেছেন তিনি।

জানা গেছে, গত সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মধ্যেই চট্টগ্রামে চলে যান ডা. মুরাদ। নারীর প্রতি শিষ্টাচারবহির্ভূত অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর মঙ্গলবার বিকেলে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এর পর থেকেই সপরিবারে বাইরের দেশের চেষ্টা শুরু করেন। পরে চূড়ান্তভাবে কানাডা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ডা. মুরাদ। 

প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ডা. মুরাদের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের কিছুক্ষণ আগে  মঙ্গলবার তার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

যদিও লাল পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও অন্য দেশে যেতে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। লাল পাসপোর্টধারী ব্যক্তি সরকারি আদেশ (জিও) ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে সদ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ জিও না থাকায় বিদেশগমনে জটিলতায় পড়তে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া তিনি এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। এ অবস্থায় তার বিদেশগমন অনিশ্চিত হতে পারে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।

এর আগে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে পাঠান ডা. মুরাদ। পরে বিকেল ৩টায় তার পক্ষে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদসচিবের দপ্তরে জমা দেন তথ্য প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।

এদিকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নামফলক থেকেও মুরাদ হাসানের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিমন্ত্রীর তালিকা থেকেও তার নামটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও তার নাম নেই।

পরদিন মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সকালেই পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান মুরাদ হাসান। পরে মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একজন কর্মকর্তা পৌঁছে দেন। সেই পদত্যাগপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বিষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদের করা নারীবিদ্বেষী মন্তব্য ঘিরে কদিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছিল। এরই মধ্যে সোমবার রাতে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর ফোনালাপের একটি কল রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে নায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নোংরা ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে তাকে আপত্তিকর প্রস্তাব ও হত্যার হুমকিও দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এমনকি মুরাদের শাস্তিরও দাবি ওঠে।

২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে মুরাদ হাসানকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ডা. মুরাদ জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের এমপি। তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। মুরাদ জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।


ই-মেইলযোগে মঙ্গলবার একটি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন সমালোচিত তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ মুরাদ হাসান। একই সঙ্গে বেলা দুইটার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি 'ক্ষমা' চেয়েছেন। যদিও তার স্ট্যাটাসটি শুরু হয়েছে, যদি "ভুল করে থাকি"।

স্ট্যাটাসে মন্ত্রী পরিষ্কার করে বলেননি তিনি 'ভুল' করেছেন কি করেননি। শুরুতেই "যদি" শব্দটি ব্যবহার করার একটা অর্থ হতে পারে, তিনি ভুল করেছেন কি না, সেটা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। ফেসবুকে কমেন্ট করে অনেকেই প্রশ্নও তুলছেন এ ব্যাপারে।

ফেসবুক লাইভে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যার উদ্দেশ্যে অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য এবং ফাঁস হওয়া টেলিফোন কথোপকথনে একজন চিত্রনায়িকার সাথে অত্যন্ত অশালীন ও অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলা নিয়ে প্রচণ্ড সমালোচনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বলেন মুরাদ হাসানকে।

এর একদিন বাদেই মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে ই-মেইলযোগে পদত্যাগপত্র পাঠান মি. হাসান। সোমবার যখন বাংলাদেশে তাকে নিয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছিল, এমনকি আওয়ামী লীগের অনেক নেতারাও তাকে নিয়ে বিব্রত বলে জানাচ্ছিলেন, তারই এক পর্যায়ে তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যান বলে জানা যাচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন যে, মি. হাসান পদত্যাগপত্রটি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছিল।

সোমবার রাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবারের মধ্যে মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশ রাতেই মুরাদ হাসানকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী জানিয়েছিলেন।

অবশ্য পদত্যাগপত্রে মি. হাসান লিখেছেন, "ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক" তিনি। মঙ্গলবার থেকেই যেন তাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে "অব্যহতি" দেয়া হয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন তিনি।

স্বীকার করলেন, নাকি করলেন না?

রবিবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেও, সোমবার থেকে আড়ালে থেকেছেন সমালোচনার মুখে থাকা মুরাদ হাসান।

তবে মঙ্গলবার বেলা একটা নাগাদ তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, "আমি যদি কোন ভুল করে থাকি, অথবা আমার কথায় মা-বোনদের কষ্ট দিয়ে থাকি, তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন"।

সেখানে তিনি আরো লেখেন, "শেখ হাসিনার সকল সিদ্ধান্ত" আজীবন মেনে নেবেন।

স্ট্যাটাস দেয়ার পর বহু মানুষ সেখানে কমেন্ট করে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। দু ঘণ্টার মধ্যে স্ট্যাটাসটিতে ত্রিশ হাজারের বেশি কমেন্ট পড়তে দেখা যায়।

কাব্য সৌরভ নামে একজন কমেন্টে লিখেছেন, "যদি বলতে আপনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন, আপনি যে অপরাধ করেছেন এটা কি জ্ঞাত নয় এখনো"? প্রশ্ন করেন মি. সৌরভ।

ভীর সাহাবি নামে আরেকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী সেখানে লিখেছেন, "এখনো যদি?? মানে ভুল স্বীকার করতে রাজি না।"

যেভাবে এলো প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকএবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সোমবার রাত সোয়া নয়টার দিকে ঢাকায় তার বাসভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন।

সেখানেই মি. কাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ তিনি রাত আটটার দিকে মুরাদ হাসানকে জানিয়ে দিয়েছেন।

এ ধরনের পরিস্থিতি বা সমালোচনার মুখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মন্ত্রিসভা থেকে একজন প্রতিমন্ত্রীর বিদায় বাংলাদেশে এক বিরল ঘটনা।

যা ঘটেছে

বিরোধীদল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যাকে নিয়ে মি. হাসানের নারী বিদ্বেষী ও বর্ণবাদী মন্তব্য নিয়ে প্রবল সমালোচনার মাঝেই একটি ফাঁস হওয়া টেলিফোন আলাপের সাথে মি. হাসানের নাম যুক্ত হয় - এই দু'টি ঘটনা আওয়ামী লীগ এবং সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে।

এ নিয়ে মুরাদ হাসান রোববার রাতে বিবিসিকে বলেছিলেন, তিনি মন্তব্য প্রত্যাহার করবেন না এবং তিনি কোন ভুল করেননি।

কিন্তু একটি ইউটিউব ভিডিওতে প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই ফেসবুকে একটি ফাঁস হওয়া টেলিফোন আলাপ ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একজন চিত্রনায়িকাকে অশোভন কথাবার্তা ও হুমকি দিতে শোনা গেছে এক ব্যক্তিকে।

ওই ব্যক্তির কণ্ঠ শুনে তাকে মুরাদ হাসান বলে মনে হচ্ছে।

অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ার পর একটি ফেসবুক বার্তায় চিত্রনায়িকা জানিয়েছেন, দুই বছর আগের ওই টেলিফোন আলাপে তার সঙ্গেই প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের কথা হয়েছিল।

এই বিষয়ে কিন্তু মি. হাসানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পর পর দু'টি ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গন, নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীসহ বিভিন্ন মহল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমন সমালোচনার ঝড় ওঠে, তেমন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও প্রবল প্রতিক্রিয়া হয়।

আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকে বলেন, এই দু'টি ঘটনায় মুরাদ হাসানের আচরণ নিয়ে যে সব অভিযোগ উঠেছে তা আওয়ামী লীগ এবং সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে।

বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, রাজনীতির মধ্যে শিষ্টাচার থাকা বাঞ্ছনীয়।

"যারা জনগণকে নিয়ে সব সময় ভাববে, জনগণের জন্য কথা বলবে তাদের মধ্যে যদি শিষ্টাচার না থাকে তাহলে তাদের দিয়ে জনগণের কোন কল্যাণ আসতে পারে না," বলছিলেন তিনি।

"রাজনৈতিক মত-পার্থক্য থাকতে পারে, চেতনার পার্থক্য থাকতে পারে, তাই বলে কারো বিষয়ে অশালীন কথাবার্তা বলা, কুৎসিত কোন আচরণ করা - এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।"

মি. হানিফ জানান, সোমবার সকালেই দলের পক্ষ থেকে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নেয়ার জন্য দলের শীর্ষ পর্যায়ে সুপারিশ করা হয়েছিল।

মুরাদ হাসান এখনও এমপি পদে আছেন, কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ে দলীয় পদেও আছেন, তাহলে তার কী হবে - বিবিসির এই প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জানান, সেসব ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেয়া হবে।

"আমাদের পক্ষ থেকে তাকে সর্বোচ্চ শান্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত থাকবে," জানান মি. হানিফ।


তারেক রহমানের কন্যাকে নিয়ে অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য করায় বাংলাদেশের তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ মুরাদ হাসানের পদত্যাগ দাবি করেছে বিরোধী দল বিএনপি।

তবে মি. হাসান বিবিসিকে বলেছেন, তিনি এসব বক্তব্য দিয়ে কোন ভুল করেননি।

এদিকে, চলমান এই সমালোচনার মধ্যেই ফেসবুকে একটি ফাঁস হওয়া টেলিফোন আলাপ ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে একজন চিত্রনায়িকাকে নানা অশোভন কথাবার্তা ও হুমকি দিতে শোনা গেছে এক ব্যক্তিকে।

ওই ব্যক্তির কণ্ঠ শুনে তাকে মুরাদ হাসান বলে মনে হচ্ছে। তবে এ নিয়ে মি. হাসানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

যেসব বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা:

জাইমা রহমানকে নিয়ে মি. হাসান অশালীন ও বর্ণবাদী বক্তব্য দেন এক ফেসবুক লাইভে। বেশিরভাগই প্রকাশযোগ্য নয়।

তবে সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, ''আমার মুখ ভীষণ খারাপ।''

পরে গত শনিবার এক টিভি টকশোতে আরেক বিএনপি নেত্রীকে আক্রমণ করে কথা বলেন মি. হাসান।

সেখানে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়াকে আলোচনার এক পর্যায়ে 'মানসিক রোগে আক্রান্ত' এবং তার 'চিকিৎসা দরকার' বলে মন্তব্য করেন মুরাদ হাসান। সেই সময় দুইজনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া লেগে যায়।

এই দুটি ঘটনা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। এমনকি মি. হাসানের দল, আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক বলে পরিচিত অনেকেই ফেসবুকে মি. হাসানের সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

বিবিসিকে মুরাদ হাসান যা বলেছেন:

এর আগেও নানা রকম বক্তব্যের জন্য আলোচনা উঠে এসেছেন জামালপুর-৪ আসনের এমপি মি. হাসান।

বিবিসিকে তিনি বলেন, তিনি বক্তব্য দেয়ার আগে তাকে 'নোংরা ভাষায়' আক্রমণ করে কথা বলেছেন তারেক রহমানের কন্যা।

''আমার মেয়ের বয়সের চেয়ে সে এক বছরের বড়। আমার কন্যার মতো বয়সী হয়ে যে নোংরা ভাষায় আমাকে নিয়ে ট্রল করেছে, সেটা তো কুচিন্তনীয়। এটা আমার কাছে খুব দুঃখজনক মনে হয়েছে। তার সম্পর্কে সামাজিক মাধ্যমের অনেক ছবি আমার কাছে চলে এসেছে।''

আর টকশোতে হাজির হয়ে বিএনপি নেত্রী সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়াকে আক্রমণ করে মন্তব্য করা প্রসঙ্গে মি. হাসান বলেন, ''আপনি যদি ওই টকশোটা দেখেন, তাহলেই বুঝতে পারবেন আমি কেন বলেছি"।

"আমি একজন চিকিৎসক। সেই হিসাবে তার সম্পর্কে আমার যে অবজারভেশন, সেটা আমি বলেছি। সেটা ভুল হলে আমি দুঃখিত।''

তবে সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়ার বক্তব্য, মুরাদ হাসান যদি সত্যিকার অর্থে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হতেন, তাহলে তিনি "দায়িত্বশীল জায়গা থেকে এ ধরনের মন্তব্য তিনি করতে পারতেন না।''

সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া

পেশায় চিকিৎসক মুরাদ হাসান আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে প্রথমে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়।

যেসব বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, সেগুলোকে ভুল বলে স্বীকার করেন কি না কিংবা প্রত্যাহার করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ''প্রশ্নই ওঠে না।''

মি. হাসান বিবিসিকে আরো বলেন, তার বক্তব্য নিয়ে নানারকম সমালোচনা হলেও তার ওপর দল বা সরকারের তরফ থেকে বক্তব্য প্রত্যাহারের কোন চাপ নেই।

মুরাদ হাসানের পদত্যাগ দাবি

তারেক রহমানের কন্যাকে নিয়ে অশালীন ও বর্ণবাদী বক্তব্য দেয়ায় তীর্ব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিরোধী দল বিএনপি।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, তাকে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে।

বেসরকারি সংগঠন নারীপক্ষ এবং ৪০ নারী অধিকার কর্মী আলাদা বিবৃতিতে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

নারীপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'বর্তমান সরকার দাবি করেন যে তারা নারীবান্ধব। নারীর প্রতি ন্যূনতম সম্মান রেখে কথা বলতে পারেন না সেই ব্যক্তি তারপরও কি করে পদে বহাল থাকেন?'

এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নারীপক্ষের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

এর আগে এরকম একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে একজন আলোচককে উদ্দেশ্য করে কটু মন্তব্য করে কারাগারে যেতে হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে।

তবে প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হোসেনের এসব বক্তব্যের বিষয়ে দল বা সরকারি তরফ থেকে প্রকাশ্যে এখনো কোন প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি।

'জনগোষ্ঠীর কাছে তাদের দায়বদ্ধতা না থাকাই প্রধান কারণ'

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরোধী দল বা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে কটু মন্তব্য নতুন বা অভিনব কিছু নয়। বিশেষ করে প্রধান দলগুলোর নেতাকর্মীদের একে অপরকে উদ্দেশ্য করে কাঁদা ছোড়াছুড়ি অনেকটাই নিয়মিত ব্যাপার।

কিন্তু সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ পদধারী ব্যক্তিদের এরকম বিষয়ে জড়িয়ে পড়াটা রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য কতটা ভালো?

জানতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''বাংলাদেশের সমাজটাই আসলে নারীবিদ্বেষী এবং বর্ণবাদী। আমাদের রাজনৈতিক দলের নেতারা এর ঊর্ধ্বে নন। সে কারণে তাদের মধ্যে প্রায়ই আমরা কট্টর নারীবিদ্বেষী মন্তব্য শুনি। আমাদের অনেকের মধ্যে বর্ণবাদী মনোভাবও রয়েছে।''

''কিন্তু এখানে সরকারের একজন মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, যিনি সরকারকে প্রতিনিধিত্ব করছেন, যিনি সংবিধান মেনে শপথ নিয়েছে, সেখানে এই ধরনের কথা বলা সংবিধানের বরখেলাপ। এই ধরনের কথা বলার সাহস তখনি তারা পান, যখন এসব কথা বলার জন্য তারা তিরস্কৃত হন না, বরং পুরস্কৃত হন।'' মি. আহমেদ বলছেন।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলছেন, ''আমার কাছে অনেক সময় মনে হয় এগুলো বেফাঁস মন্তব্য, আসলে তা নয় । এটা শুধু যে আওয়ামী লীগের লোকজনই করেন, তা নয়। বিএনপি নেতাদের মুখেও আমরা এ ধরনের মন্তব্য অতীতে বা বর্তমানে শুনেছি। আসলে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে তাদের দায়বদ্ধতা না থাকার কারণে তারা একেবারেই বেপরোয়া হয়ে গেছেন।''


 


পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় 'জাওয়াদ' গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। রোববার এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রোববার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি রোববার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটে সাগর উত্তাল রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে এবং বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।



বিশ্বজুড়ে যখন ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্ক তখন দক্ষিণ আফ্রিকার একজন  স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলছেন, ওমিক্রন হলো করোনা শেষের ইঙ্গিত। নেটকেয়ার গ্রুপের সিইও ফ্রিডল্যান্ড এমন মন্তব্য করেছেন, যিনি ৫০টিরও বেশি হাসপাতাল পরিচালনা করেন। 

বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অনেক দেশ এরই মধ্যে সীমান্তে কড়াকড়ি করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, লেসোথো, ইসওয়াতিনি, মালাউই এবং মোজাম্বিকের সঙ্গে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। অনেক দেশে টিকাগ্রহণকারীদেরও সীমান্তে যাওয়া-আসার বিষয়ে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

নিউজিল্যান্ড বলছে, দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, লেসোথো, ইসওয়াতিনি, সেশেলস, মালাউই এবং মোজাম্বিক থেকে শুধু তাদের নাগরিক যাওয়া-আসা করতে পারবে। তবে তাদেরকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে এবং করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।

করোনার  চতুর্থ তরঙ্গের মধ্য অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের তিনটি ওয়েভে ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়।

 ফ্রিডল্যান্ড বলছেন, ওই ভয়ংকর পরিস্থিতি আবার সৃষ্টি হবে বলে মনে হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘যদি দ্বিতীয় ও তৃতীয় তরঙ্গের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো, তাহলে ওই সময়ের মতো হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ত। সুতরাং আমি মনে করি, এখানে একটি রুপালি আস্তরণ তৈরি হয়েছে, যা করোনা সমাপ্তির সংকেত হতে পারে। নতুন ধরনটি গুরুতর মনে হলেও তা গুরুতর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে না। স্প্যানিশ ফ্লুর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।’

১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লুতে আনুমানিক আড়াই থেকে পাঁচ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল। ১৯২০ সালের মধ্যে এটি কম মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং পরবর্তী সময়ে নিয়মিত ফ্লুতে রূপ নেয়।

ফ্রিডল্যান্ড বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি টিকা নেওয়া মানুষরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, তবে সে সংক্রমণগুলো দেখছি তা হালকা থেকে মাঝারি।’ তিনি বলেন, ‘যদি আমরা এমন একটি ভ্যারিয়েন্ট পাই, যা ডেল্টাকে ছাড়িয়ে যায় এবং যা গুরুতর অসুস্থতার কারণ না হয়, তাহলে আমরা একে ওই স্প্যানিশ ফ্লুর সঙ্গে তুলনা করতে পারি। ওই ফ্লুর ক্ষেত্রে আমরা একই অবস্থা দেখেছি।’

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার উইটওয়াটারসরান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিশেষজ্ঞ ইমিউনোলজিস্ট শাবির মাধী ফ্রিডল্যান্ডের সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা থাকলেও রোগীর সংখ্যা কম। বেশির ভাগ ওমিক্রন রোগীর লক্ষণ মৃদু।

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget