Articles by "শিক্ষা"



করোনা মহামারির কারণে মানুষের চলাচলের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ প্রায় দেড় মাস পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে তুলে নিচ্ছে সরকার। এ দিন থেকেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে।

তবে যে শিক্ষার্থীরা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে তারাই কেবল শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে পারবে।


বিধিনিষেধ তুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও করোনা সংক্রমণ রোধে ঘরের বাইরে গেলে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরতে গুরুত্বারোপ করা হবে।


চলতি বছরের শুরুর দিকে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ১১ দফা দিয়ে ১৩ জানুয়ারি থেকে সরকারি বিধিনিষেধ শুরু হয়। সেই বিধিনিষেধ বাড়ানো হয় ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

বিধিনিষেধগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল-হোটেল-রেস্তোরাঁয় টিকা সনদ নিয়ে খাবার গ্রহণ, গণপরিবহনের চালক-সহকারীদের টিকা সনদ প্রদর্শন, সভা-সমাবেশ বন্ধ ইত্যাদি।


আর সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ২১ জানুয়ারি থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।


টানা এক মাস বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) খুলছে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলবে ২ মার্চ। কিন্তু প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এখনই খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুয়ার।

চলমান বিধিনিষেধ তোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাস্ক সর্বাবস্থায় পরতে নির্দেশনা দেন।


বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, স্কুল (মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়) খোলা হবে। সবাই যেন মাস্ক পরে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেখানে যাবে, যে অনুষ্ঠানে যাবে সবাই যেন মাস্ক পরে, এটা বার বার অনুরোধ করা হয়েছে। কেবিনেট মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, সবাইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমরা যেন আয়েসী না হই।


এদিকে, মধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল-কলেজ খোলার আগে ২০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।



নির্দেশনাসমূহ:

১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে সকল শিক্ষার্থী কোভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছে সে সকল শিক্ষার্থী সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখসহ অন্যান্য স্থানে কোডিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়সমূহ ব্যানার বা অন্য কোন উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা।

৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে সকল শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা করা।

৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফরমে শিখন-শেখানো কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

৫. শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণকৃত অ্যাসাইনমেন্টসমূহের কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে।

৬. শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন ইতোপূর্বে পাঠানো নির্দেশনা মোতাবেক প্রণয়ন করতে হবে।

৭. শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সবগুলো প্রবেশ/প্রস্থান মুখ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা। যদি কেবল একটি প্রবেশ/প্রস্থান মুখ থাকে সেক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশ/প্রস্থান মুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা।

৮. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা।

৯. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া আসা করবে সেই বিষয়ে তাদেরকে শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিং প্রদান করার ব্যবস্থা করা।

১০. প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখা।

১১. প্রতিষ্ঠানের সকল ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ এবং আঙ্গিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করা।

১২. প্রতিষ্ঠানের সকল ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখা।

১৩. প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কেউ প্রবেশ/অবস্থান/প্রস্থানের সময় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা।

১৪. প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং অন্য কেউ সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা।

১৫. প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা।

১৬. শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা। এক্ষেত্রে পারস্পরিক তিন ফুট শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা।

১৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা এবং কোথাও পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।

১৮. প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরুপণ করা।

১৯. প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত করা।

২০. প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সাথে সভা করে এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ বিতরণ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছেন, বন্ধের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেভাবে সংক্ষিপ্ত ক্লাল চলছিল, সেভাবেই শুরু হবে।

টানা এক মাস পর শুরু হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে পাঠদান। করোনা পরিস্থিতি নিম্নমুখী হওয়ায় স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে আনন্দমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও সন্তোষজনক। গড়ে প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।


তবে কেবল করোনা টিকার দুটি ডোজ নেওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকে নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত হচ্ছে। টানা একমাস বন্ধ থাকায় প্রথমদিনের ক্লাসে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন শিক্ষকরা।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শাখা প্রধান মুসতারি আহমেদ মঙ্গলবার সকালে জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। কোনো ছাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকলে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদের টিকার দুটি ডোজ দেওয়া হয়েছে তাদের শুধু ক্লাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান শুরু করা হয়েছে। ক্লাসে ছাত্রীদের উপস্থিতি প্রায় ৯০ শতাংশ।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রীদের মধ্যে যারা করোনার দুটি ডোজ নিয়েছে শুধু তারা যেন ক্লাসে উপস্থিত হয় এ ধরনের নির্দেশনা নোটিশ বোর্ডসহ অভিভাবকদের এসএমএসে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের অনলাইনে জুম ক্লাসে যুক্ত হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল থেকে পাঠদান শুরু হয়েছে।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে মঙ্গলবার সকাল থেকে পাঠদান শুরু করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি প্রায় ৮০ শতাংশ। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ক্লাস কার্যক্রম চলছে।

তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক যেসব শিক্ষার্থীর করোনার দুটি ডোজ নেওয়া হয়েছে শুধু তাদের স্কুলে আসতে নোটিশ দেওয়া হয়। যাদের দুটি টিকা নেওয়া হয়নি তাদের জুম ক্লাসে যুক্ত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ায় সরকারের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে সারাদেশে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে।

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও শিক্ষার্থীদের সশরীরে শ্রেণিকক্ষে পাঠগ্রহণের ক্ষেত্রে শর্ত আরোপ রয়েছে। যে শিক্ষার্থীরা করোনা প্রতিরোধী টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে শুধুমাত্র তারাই শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থেকে ক্লাস করতে পারবে। এক্ষেত্রে অন্য শিক্ষার্থীদের বাসায় থেকে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত থাকতে হবে।

সারাদেশে ওমিক্রনসহ করোনাভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের মুখে গত ২১ জানুয়ারি দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। আজ মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলবে আগামী ২ মার্চ। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কবে ক্লাসে ফিরতে পারবে, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

এদিকে করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর তা কীভাবে চলবে, এ বিষয়ে ২০ দফার গাইডলাইন দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এসব নির্দেশনা দিয়ে একটি আদেশ জারি করেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে পূর্বের গাইডলাইনও অনুসরণ করতে হবে। এর ওপর নতুন করে আরও ২০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি।


করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রার্দুভাব মোকাবিলায় গত ১০ জানুয়ারি সারাদেশে বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। নতুন বছরের প্রথম ওই বিধিনিষেধে ১১টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।


আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে সীমিত পরিসরে খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।এ দিন থেকে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হবে।


তবে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।


ডা. দীপু মনি বলেন, কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাসে অংশগ্রহণ করবে শিক্ষার্থীরা। করোনা টিকার ২ ডোজ নিলেই শ্রেণিকক্ষে করা যাবে ক্লাস।


শিক্ষামন্ত্রী জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। তবে প্রাথমিকের ক্লাস চলবে অনলাইনে। ১০ থেকে ১৪ দিন পর শ্রেণিকক্ষে প্রাথমিকের পাঠদান শুরু হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও সরকারের দেওয়া ১১ দফা বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানতে হবে। নতুন করে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হবে না।


এর আগে করোনা বেড়ে যাওয়ায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গত ২১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ আছে। এই ছুটি আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়।


উল্লেখ্য, দেশে প্রথমবার করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দেড় বছর পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও চালু হয়।



নতুন কারিকুলাম আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মাধ্যমিক স্তরে ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হলেও প্রাথমিকে তা মার্চ থেকে শুরু হবে।

আর নতুন কারিকুলামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন কাটাতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আগে ছুটি ছিল শুধু শুক্রবার, এখন শনিবারও ছুটি থাকবে।  


বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ তথ্য জানান।  

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানায়, ২০২২ সালে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং করার কথা। আর ২০২৩ সাল থেকে পরিমার্জিত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের কারিকুলাম বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা হচ্ছে।


সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন কারিকুলাম ট্রাইআউট ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। প্রাথমিকে মার্চ থেকে শুরু হবে। মাধ্যমিকে ৬২টি এবং প্রাথমিকেও একই সংখ্যায় করার কথা রয়েছে।

মহামারির ছুটির আগে ও পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছুটিগুলো এখনো আছে। সাপ্তাহিক ছুটিও দুই দিন। এ বিষয়ে দুষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকে শনিবার ছুটি রাখেন না। এখন থেকে রাখবেন সেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা মনে করি, একজন শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর সপ্তাহে দুটা দিন..., একটু যদি ব্রেক না হয়। এখন তো কম সময়ে ক্লাস করছিল তারপরও একটু ব্রেকটার দরকার আছে। সেটাকে যদি বাদ দিয়ে দিতে পারতাম, তাহলে কয়েকটা দিন বেশি পেতাম। মাসে চারটা দিন বেশি পেতাম সেটা ঠিক। আবার ধর্মীয় কিছু ছুটি আছে, নানা রকম বিষয় আছে।

তিনি বলেন, আমাদের যেগুলো জাতীয় দিবস, সেই দিনে খুলে রাখার কথা ভাবিনি। জাতীয় দিবসে অনেক সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষে পাঠদান হয় না। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রিকভারি প্ল্যানের মধ্যে যদি দেখি যেকোনো জায়গায় দিন কমালে আরও বেশি সুবিধা হবে, সেটা ভেবে দেখব। কিন্তু ঢালাওভাবে ভাবতে পারছি না। কারণ যারা কাজটি করেন তাদেরও তো সঠিকভাবে ডেলিভারি দিতে হবে। অনলাইনের চাপটাও আছে। শিক্ষকেরা ক্লাসেও পড়িয়েছেন আবার অনলাইনেও ক্লাস নিয়েছেন।


২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে যাচ্ছে। প্রথমে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। তবে ১২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের স্কুল খুলবে আরও প্রায় দুই সপ্তাহ পরে। বুধবার রাতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানান।


এর আগে গত রাত ১০টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রীসহ শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।



পরামর্শক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা প্রথম আলোকে বলেন, সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। সরকার চাইলে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারে।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।



করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও শ্রেণি কার্যক্রম চলছিল স্বল্প পরিসরে। সব শ্রেণির ক্লাস সব দিন হচ্ছিল না। কিন্তু নতুন করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। প্রথম দফায় এই ছুটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ৬ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু পরে তা আবার বাড়িয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়।



শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে গত রোববার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘এখন একটু খারাপ সময় গেলেও আমরা আশা করি, এ মাসের শেষের দিকে অবস্থার একটু পরিবর্তন হবে এবং সেই সময় আমরা স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার খুলে দিতে পারব।’


শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে নারীদের অংশগ্রহণে সমতা অর্জন হয়ে গেছে বা হচ্ছে, এ খবর পুরোনো। কিন্তু শুধু শিক্ষায় অংশগ্রহণেই নয়, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলেও এখন ছাত্রীরা এগিয়ে থাকছেন। উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলেও ছাত্রদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন ছাত্রীরা। শুধু পাসের হারেই নয়, ফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রেও এবার মেয়েরা এগিয়ে আছেন।

২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল আজ রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। বেলা ১১টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল হস্তান্তরের পর তিনি ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। পরে সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন শুধু এইচএসসি পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫৭।

ছাত্রছাত্রীদের ফলাফলের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষায় ছাত্রীদের পাসের হার ৯৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, যা গড় পাসের হারের চেয়েও বেশি। অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ, যা গড় পাসের হারের চেয়ে কম।

এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট ১১ লাখ ১৫ হাজার ৭০৫ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। অংশগ্রহণের দিক দিয়েও ছাত্রীরা এগিয়ে ছিলেন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রী ছিলেন ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৪, বাকিরা ছাত্র। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে পাস করেছেন ১০ লাখ ৬৬ হাজার ২৪২ জন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রী ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫২৯, আর ছাত্র ৫ লাখ ২০ হাজার ৭১৩।

অন্যদিকে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২২ জন, যাঁদের গড় নম্বর প্রতিটি বিষয়ে ৮০ থেকে ১০০–এর মধ্যে। তাঁদের মধ্যে ছাত্রী ৯৮ হাজার ৪০৩, আর ছাত্র ৮০ হাজার ১১৯।

শুধু এবারই ছাত্রীরা ভালো করেছেন তা নয়। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, পাসের হারে ছাত্রীরা এগিয়ে থাকছেন। ছাত্রীদের ভালো করার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞেরা বলে আসছেন, এখন পরিবারগুলোর মধ্যে আগের চেয়ে সচেতনতা বেড়েছে। এখন আগের মতো মেয়েদের আলাদা চোখে দেখা হয় না। আবার বাল্যবিবাহ বন্ধে সরকারের উদ্যোগ যেমন আছে, তেমনি উপবৃত্তিসহ বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করার চেষ্টাও আছে। তুলনামূলকভাবে পড়াশোনায় ছাত্রীরা যত্নবান বেশি। সবকিছুর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে পরীক্ষার ফলে।


২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশের সাধারণ ৯ টি শিক্ষাবোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে যশোর শিক্ষাবোর্ড প্রথম এবং কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে।


যশোর শিক্ষাবোর্ডে সবচেয়ে বেশি ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ এবং কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে।

এবারের পরীক্ষায় যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে মোট ১ লাখ ৩১ হাজার ৫শ’ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং ৩ হাজার ৩৩৭ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকে। অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে।

পাসের হারের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড। পাশের হার ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

আরো পড়ুনঃ শুধু পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি

কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে মোট ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৬৬ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তার মধ্যে ছাত্র ৫৩ হাজার ৩১ জন এবং ছাত্রী ৬৪ হাজার ৪৩৫ জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৫৯ জন শিক্ষার্থী। এই বোর্ডের অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২ হাজার ৯০৭ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ১১ হাজার ৬৮০ শিক্ষার্থী পাশ করেছে।


এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২ হাজার ৬২১ টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

স্বাভাবিক সময়ে গত বছরের এপ্রিলে এ পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়।


সূত্র : বাসস


 এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় নয় হাজার ১১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধু পাঁচটি এমন রয়েছে—যেখানে কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। আর, এক হাজার ৯৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে।

চট্টগ্রাম বোর্ডের দুটি, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের দুটি ও ময়মনসিংহ বোর্ডের একটি—মোট পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারেনি বলে জানা গেছে।


এবার সারা দেশে দুই হাজার ৬২১টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে শতভাগ পাস এসেছে—ঢাকা বোর্ডের এক হাজার সাতটির মধ্যে ১৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, রাজশাহী বোর্ডের ৭৫৯টির মধ্যে ১৬২টিতে, কুমিল্লা বোর্ডে ৪০৭টির মধ্যে ৭৫টিতে, যশোর বোর্ডে ৫৭৪টির মধ্যে ১১৬টিতে, চট্টগ্রাম বোর্ডে ২৬৭টির মধ্যে ১৬টিতে, বরিশাল বোর্ডে ৩৩০টির মধ্যে ৫৬টিতে, সিলেট বোর্ডে ২৯৯টির মধ্যে ৫৩টিতে, দিনাজপুর বোর্ডে ৬৬৭টির মধ্যে ৫৩টিতে, ময়মনসিংহ বোর্ডে ২৭৫টির মধ্যে ২৯টিতে, মাদরাসা বোর্ডে দুই হাজার ৬৯১টির মধ্যে এক হাজার তিনটিতে এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এক হাজার ৮৩৫টির মধ্যে ১৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

আরো পড়ুনঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সেকেন্ড টাইম’ ভর্তির পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী

আজ রোববার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন।


উচ্চ শিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে দ্বিতীয়বার শিক্ষার্থীকে ভর্তি করার সুযোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।  


এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে রোববার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ বন্ধে ভর্তিচ্ছুদের দাবির মধ্যেই ইতিবাচক মত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।


দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আমরা যদি একেবারে বৈশ্বিক পরিস্থিতি, বিশ্বমানের কথা চিন্তা করি তাহলে আসলে কোনো ‘বার’ থাকার কথা না। কিন্তু আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক করেছে একবারের বেশি না, আগে দুবার দেওয়া যেতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একবার দেওয়ার পর আরও সুযোগ ছিল। এখন সেই সুযোগ রাখা হচ্ছে না। এটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তারা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। 

আরো পড়ুনঃ শাহজালালে ভিসির পদত্যাগ আন্দোলন প্রত্যাহার

আমরা বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি ও ইউজিসির সঙ্গে কথা বলেছি। ‘আমরা মনে করি শিক্ষার্থীদের সুযোগ যদি বাড়াই তাতে তো অসুবিধা নেই। আপনি যে মেধার শিক্ষার্থী নেবেন আপনি তো সেই মেধার শিক্ষার্থী নিচ্ছেন। আপনি তো তার থেকে মেধার মান কমিয়ে নিচ্ছেন না। আপনি যদি একাধিক সুযোগ দিয়ে একই মেধার শিক্ষার্থীকে নেন তাহলে সেই ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আপত্তি থাকা উচিত না। আমরা যেমন কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে বয়সের যে বাধা ছিল সেটাও তুলে দিয়েছি। ’


তিনি বলেন, আমরা যারা বিশ্বে বিভিন্ন জায়গায় পড়ার সুযোগ পেয়েছি, বিভিন্ন বয়সে পড়েছি। সেখানে কোথাও কখনও বয়স, কতদিন মাঝখানে ব্রেক অব স্ট্যাডি আছে- এগুলোর কোনোটাই কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াইনি। আমাদেরও এক সময় হয়তো সেই জায়গায় যেতে হবে। এখন সেটা কি এখনই যেতে পারবো নাকি আরও কিছু সময় লাগবে সেটা হয়তো আমাদের বিবেচনার বিষয়। শিক্ষাকে সবার জন্য যেন আমরা যে কোনো পর্যায় থেকে যে কেউ একটা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পায় সেই সুযোগটা আমাদের করে দিতে হবে।   


এর আগে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ফলাফলের বিস্তারিত পরিসংখ্যান প্রকাশ করেন।


প্রকাশ পেলো ২০২১ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী এইচএসসিতে পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর নয়টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রসা ও কারিগরি বোর্ড মিলে সার্বিক পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২২ জন শিক্ষার্থী।


এবার সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে গড় পাশে হার ৯৫.৫৭ শতাংশ। এছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডে পাশে হার ৯৫.৪৫ শতাংশ ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাশের হার ৯২.৮৫ শতাংশ। পাশের হারের দিক থেকে প্রথম স্থানে আছে যশোর বোর্ড। তাদের পাশের হার ৯৮.১১ % শতাংশ।

ঢাকা বোর্ডে পাশের হার ৯৬.৫২ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৫৯ হাজার ২৩৩ জন শিক্ষার্থী।

বরিশাল বোর্ডে পাশের হার ৯৫.৭৬ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৯৭১ জন শিক্ষার্থী।

রাজশাহী বোর্ডে পাশের হার ৯৭.২৯ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৩২ হাজার ৮০০ জন শিক্ষার্থী।

কুমিল্লা বোর্ডে পাশের হার ৯৭.৪৯ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১৪ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী।

দিনাজপুর বোর্ডে পাশের হার ৯২.৪৩ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩৪৯ জন শিক্ষার্থী।

সিলেট বোর্ডে পাশের হার ৯৪.৮০ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৩১ জন শিক্ষার্থী।

যশোর বোর্ডে পাশের হার ৯৮.১১ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ২০ হাজার ৮৭৮ জন শিক্ষার্থী।

চট্টগ্রাম বোর্ডে পাশের হার ৮৯.৩৯ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১৩ হাজার ৭২০ জন শিক্ষার্থী।

ময়মনসিংহ বোর্ডে পাশের হার ৯৫.৭১ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৭ হাজার ৬৮৭ জন শিক্ষার্থী।


রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে ডিজিটালি এই পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে এইচএসসির ফলাফলের সারসংক্ষেপ গ্রহণ করেন। 

শিক্ষাথী‌র্রা যেকোনো মোবাইল থেকে এসএমএস, শিক্ষাবোর্ডসমূহের ওয়েবসাইট এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে ফল জানতে পারবেন।  বেলা ১২টা থেকে শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানা যাবে। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও ফল সংগ্রহ করা যাবে।

বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইটে (www.educationboardresults.gov.bd) পরীক্ষার্থীর রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে।


মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসেই ফল পাওয়া যাবে।


আলিমের ফল পেতে ALIM লিখে স্পেস দিয়ে Mad লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।


কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে HSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফলাফল জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়া হয় ২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৩ লাখ ৯৯ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফল প্রকাশের কথা থাকলেও দেশের বাইরের বিভিন্ন কেন্দ্রের খাতা মূল্যায়নে দেরি হয়। 


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ৬ ফেব্রুয়ারির পর আরও দুই সপ্তাহ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে গত ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এর আগে, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির পর আংশিকভাবে পুনরায় শিক্ষাকার্যক্রম শুরুর আভাস পাওয়া গিয়েছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরীক্ষাসংক্রান্ত বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তের কারণে ৬ ফেব্রুয়ারির পর আংশিকভাবে পুনরায় শিক্ষাকার্যক্রম শুরুর আভাস মেলে।

এর মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু স্থগিত পরীক্ষা ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অধিক প্রতিযোগিতাপূর্ণ ভর্তি পরীক্ষাগুলোর মধ্যে অন্যতম মেডিক্যাল ও ডেন্টালের ভর্তি পরীক্ষারও তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, জানুয়ারি মাসের পুরো সময়টাই মূলত শিক্ষার্থী ভর্তি ও বই বিতরণের কাজে চলে যায়। কিন্তু এ বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণায় অনেক কাজেই বিলম্বিত হচ্ছে।

তবে ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখের পর অনেক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম পুনরায় শুরুর অনুমতি চান প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। একই সঙ্গে আসন্ন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের স্বল্পপরিসরে ক্লাস শুরুরও দাবি জানান অভিভাবকদের অনেকে।




মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কখনো পুরোপুরি, কখনো বা আংশিক বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে। এতে প্রায় ৬১ কোটি ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে স্কুল খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ।

শুক্রবার ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, কোনো অজুহাত নয়। স্কুল খোলা রাখুন। স্কুলগুলো পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ থাকার কারণে বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৬১ কোটি ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত। কোভিড-১৯-এর ওমিক্রন ধরনটি সারা বিশ্বে যখন ছড়িয়ে পড়ছে, এটি যাতে শিশুদের পড়াশোনাকে ব্যাহত করতে না পারে, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে আমরা সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই।

পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিপর্যয় এড়াতে এবং শিশুদের শেখার পথে ফিরিয়ে আনতে ইউনিসেফ কিছু সুপারিশও করেছে। এগুলো হলো :

- শিক্ষক ও স্কুলকর্মীদের অবিলম্বে টিকা দিতে হবে। প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মী ও উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে কোভিড-১৯-এর টিকাদানের পরপরই এই টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও স্কুলকর্মীদের সম্পূর্ণরূপে সমর্থন ও অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

- স্কুল খোলা রাখুন। স্কুলগুলো পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ থাকার কারণে বর্তমানে প্রায় ৬১ কোটি ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা জানি, কোভিড-১৯ ঝুঁকি প্রশমনের ব্যবস্থাগুলোই স্কুলগুলোকে খোলা রাখতে সাহায্য করে। আমরা আরো জানি, ডিজিটাল সংযুক্তির পেছনে বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে পারলেই কোনো শিশু পেছনে পড়ে থাকবে না। 

প্রতিটি শিশুকে স্কুলে ফিরিয়ে আনতে আমাদের জরুরি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিটি কমিউনিটির প্রান্তিক শিশুদের ওপর বিশেষ লক্ষ্য রেখে কিছু বিষয়ে বিস্তৃত সহায়তা প্রদান করা। যেমন শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের ঘাটতি পূরণে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়া, মানসিক স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসহায়তা, সুরক্ষা ও অন্যান্য পরিষেবা প্রদান।

অগ্রাধিকারপ্রাপ্য জনগোষ্ঠীকে পুরোপুরি সুরক্ষিত করার পর এবং টিকার যথেষ্ট প্রাপ্তি নিশ্চিত হলে ইউনিসেফ শিশুদের টিকাদানকে সমর্থন করে। সশরীরে স্কুলে যাওয়ার জন্য টিকাদানকে পূর্বশর্ত করবেন না। কোভিড-১৯ টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে সশরীরে স্কুলে যাওয়ার শর্ত আরোপ করলে তা শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ না পাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইউনিসেফ শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের টিকাদান ছাড়াই স্কুলগুলো খোলা রাখার এবং কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ কৌশল যাতে পড়াশোনা ও সামাজিক জীবনের অন্যান্য দিকে শিশুদের অংশগ্রহণকে সহজতর করে, তা নিশ্চিত করার সুপারিশ করে।

সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে সব সময় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে শিক্ষাব্যবস্থায় যে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, তা আমরা স্বীকার করি। তবে এ ক্ষেত্রে ঝুঁকি খুবই বেশি। শিশুদের স্কুলে রাখার জন্য সম্মিলিতভাবে আমাদের পক্ষে সম্ভব সবকিছু করতে হবে।

এর আগে ইউনিসেফ এক বিবৃতিতে বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারীতে দেড় বছরের বেশি সময় স্কুল বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে তিন কোটি ৭০ লাখ শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। ইউনিসেফের এক জরিপ করে বলছে, মহামারীকালে বিশ্বজুড়ে স্কুল সম্পূর্ণ বা আংশিক বন্ধ থাকার কারণে ৬৩ কোটি ৫০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মহামারির কারণে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল। দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে খোলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এবার করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার ফলে সরকার নতুন করে ২৩ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

স্কুল বন্ধ থাকার কারণে এর নেতিবাচক প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। স্কুল বন্ধ থাকায় তা পড়াশোনার ক্ষতির পাশাপাশি শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করেছে, তাদের নিয়মিত পুষ্টি প্রাপ্তির উৎস কমিয়ে দিয়েছে এবং তাদের নিগ্রহের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়েছে। 

ক্রমেই উঠে আসা তথ্য এসব প্রমাণ দিচ্ছে, কোভিড-১৯ শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে উচ্চহারে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা সৃষ্টি করেছে; যেখানে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মেয়ে, কিশোর-কিশোরী এবং গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ অধিক হারে এ সমস্যাগুলোর সম্মুখীন। স্কুল বন্ধ থাকার সময় বিশ্বব্যাপী ৩৭ কোটির বেশি শিশু স্কুলের খাবার থেকে বঞ্চিত হয়, যা কিছু শিশুর জন্য খাবার ও দৈনিক পুষ্টি প্রাপ্তির একমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস।


শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাতদিন ধরে চলা অনশন ভাঙিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল। 

সঙ্কট সমাধানে বিভিন্ন পর্যায় থেকে শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এরই অংশ হিসেবে জনপ্রিয় এই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।


বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে একাত্তর টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান একাত্তর জার্নালে অংশ নিয়ে তিনি এমন কথা জানান। মিথিলা ফারজানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, এটিএন বাংলার বার্তা প্রধান জ ই মামুন ও বাংলা ট্রিবিউনের বার্তা প্রধান মাসুদ কামাল।


অনুষ্ঠানের শুরুতেই ড. জাফর ইকবাল যুক্ত হয়ে জানান, তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নিজেই সেখানে যেতে চাইছিলেন। পরে সরকারের ‘উপর মহলের’ ঘটনাক্রমে কথা হলে সেখান শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়। এরপর তিনি শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে সেখানে যান এবং শিক্ষার্থীরা তার কথা রেখেছে।

সরকার সঙ্কট সমাধানে আগে কেন পদক্ষেপ নিল না- এমন প্রশ্নে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘আমি মনে করি, সবকিছুর একটা উপযুক্ত সময় থাকে। আমরা এর আগে গেলে এটি (অনশন আন্দোলন) এভাবে সমাধান হতো কি না- সেটা বলতে পারি না। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, গতরাতে জাফর ইকবাল ভাই নিজে গিয়েছেন এবং আজ শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙিয়েছেন, আমরা মনে করি, ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি হয়েছে।’


একই প্রসঙ্গ টেনে জ ই মামুন শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, আজকে জাফর ইকবাল উপর মহলের নির্দেশে সেখানে গেলেন, তাহলে উপর মহল নিজেরাই কেন উদ্যোগ নিলেন না। এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। এরকম যে কোনও সংকটে অনেকরকম তৎপরতা সেখানে থাকে, অনেক ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিছু সামনে আসে, কিছু আড়ালে থাকে। এ সংকটটি সমাধানেও অনেক লোকই অনেকভাবে কাজ করেছে, সবার কথা বলেও শেষ করা যাবে না। 

সেরকম নানারকম প্রস্তুতির একটা পর্যায়ে গিয়ে মনে হয়েছে, জাফর ইকবাল ভাইয়ের হাতেই এটা হলে ভালো হবে এবং এটা সঠিকভাবে হবে। তারপর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ আমরা নিতে পারবো। এর আগে আমার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। পরে আরও কথা হওয়ার কথা ছিল। এর মাঝখানে অন্য একটি উদ্যোগ নিয়ে জাফর ইকবাল ভাইকে নিয়ে আসা হয়েছে এবং সেটাকে প্রয়োজন মনে করা হয়েছে বলেই নিয়ে আসা হয়েছে।’


শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী শাবির উপাচার্য পদত্যাগ কিংবা অপসারণ করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী জানান, আন্দোলনটা মূলত ভিসির অপসারণের দাবিতে ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানারকম সমস্যা থাকে। যদি সেসব সমস্যা সমাধান হয়ে যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি বড় কোনও সমস্যা না, যদি ভিসি নিজে কোনও বড় সমস্যার কারণ না হন।


শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঘটনার সবকিছু খতিয়ে দেখতে চাই। এতে যারই দায় বা দোষ পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর উপাচার্যের পদত্যা আচার্যের বিষয়, সেটা আচার্য দেখবেন। তার মানে এই নয় এই দাবি মানছি বা মানছি না।’


শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদে উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে খাবার নিয়ে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন কয়েকজন শিক্ষক। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। শিক্ষকদের ফিরে আসতে হয়েছে গেট থেকেই।

জানান গেছে, সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ কয়েকজন শিক্ষক উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের দেখতে যান। এ সময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের বলেন, তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবি জানিয়ে এলেও শিক্ষকেরা অনশনকারীদের সামনে বারবার খাবার নিয়ে আসছেন।


এসব কথা বলার পর শিক্ষকেরা উপাচার্যের বাসভবনের দিকে প্রবেশ করতে যান। এ সময় শিক্ষার্থীরা বাসভবনের সামনে মানব দেয়াল তৈরি করে প্রক্টরসহ শিক্ষকদের পথরোধ করে ভিতরে প্রবেশে বাধা দেন।


বাসভবনে ঢুকতে না পেরে প্রক্টর আলমগীর কবির সাংবাদিকদের বলেন, উপাচার্য হৃদ্‌রোগজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এর জন্য তিনি নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন। কয়েক দিন ধরে তিনি বাসভবনে থাকায় ওষুধপত্র শেষ হয়ে এসেছে। এ ছাড়া রোববার রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়ায় অন্ধকারে কাটিয়েছেন। বাসভবনের ভেতরে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তাদের জন্য কিছু খাবার নিয়ে দেখা করতে চেয়েছিলাম।

এর আগে রোববার সন্ধ্যা থেকেই উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পুলিশ ছাড়া কাউকে ভবনের ভিতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না তারা এবং ভবন থেকেও কাউকে বের হতে দিচ্ছেন না।


এ বিষয়ে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা রোববার থেকে ঘোষণা দিয়েছি পুলিশ কিংবা সংবাদকর্মী ছাড়া কাউকে উপাচার্যের বাসভবনে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। এদিকে আমরা এক দফা দাবি জানিয়ে প্রায় ১২৫ ঘণ্টা ধরে টানা অনশন করা আসছি। এরপরও শিক্ষকেরা বারবার খাবার নিয়ে আসছেন। এগুলো অমানবিক।


আন্দোলনের সূচনা

১৩ আগস্ট থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিও সামনে আসে আন্দোলনে।


গত রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।


এরপর ১৯ জানুয়ারি বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করে ২৩ জন শিক্ষার্থী। একই দাবিতে পরদিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকশো শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল বের করেন। ১২৭ ঘণ্টা টানা অনশনে এখন পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে ১৬ শিক্ষার্থী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়া বাকিদের স্যালাইন দেয়া হচ্ছে।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের জন্য জাবি শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে জাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কাছে মোবাইল ফোনে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান তিনি। জাবির জনসংযোগ কার্যালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাঁর বক্তব্য সম্পাদনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এতে জাবির শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে জাবির শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট সকলেই আহত হয়েছেন। তিনি এ বিষয়টি অনুধাবন করছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, জাবির উদার ও প্রগতিশীল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ তাঁকে ক্ষমা করে দেবেন। সোমবার বেলা ১১টা ৫৯ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কাছে মোবাইল ফোনে দুঃখ প্রকাশ করেন ও ক্ষমা চান তিনি।

এর আগে, শাবিপ্রবিতে মেয়েদের হল সারা রাত খোলা রাখার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই অডিও ক্লিপে তাঁকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়। অডিও ক্লিপটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এই ঘটনায় ক্ষোভ, প্রতিবাদ জানান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।


শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনশনের পাশাপাশি এবার কাফনের কাপড় পরে মৌন মিছিল করেছেন প্রায় ২ শতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী।

মৌন মিছিলের পূর্বে আন্দোলনকারীদের একজন মুখপাত্র বলেন, 'আমাদের সহযোদ্ধারা আমরণ অনশন করে যাচ্ছেন, কিন্তু কেউ অনশন ভাঙেননি। আমাদের অনশনরত ২৩ জনের প্রাণের বিনিময়ে কেউ যদি তার পদ ধরে রাখতে চান তবে তিনি স্বাভাবিক নন। রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাদের সহযোদ্ধাদের জীবন বাঁচান।'

তিনি আরও বলেন, 'এই উপাচার্যের জন্য যদি মরতে হয়, তাহলে শুধু এই ২৪ জন মরবে না। আমরা হাজারো শিক্ষার্থী তাদের সঙ্গে আছি, আমরাও তাদের সঙ্গে মরব ।'

অনশনের ৭২ ঘন্টা পর ১৫ জন শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং ৮ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন করছেন। অন্য এক শিক্ষার্থীর বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাকে দ্রুত বাড়ি যেতে হয়েছে। 

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget