বিবেচনায় ফিরবেন এনামুল?



ক্রীড়া প্রতিবেদক : বাংলাদেশের ২০১৯ বিশ্বকাপের দল প্রায় ঠিকই হয়ে আছে। গত কিছুদিন ধরে এ কথাই বলে আসছেন নির্বাচকরা। সঙ্গে অবশ্য এ রকম একটি পাদটীকাও তাঁরা জুড়ে দিচ্ছেন যে, ‘বিশ্বকাপ দলের একটি রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েই আছে। তবে এর মধ্যে যদি কেউ দুর্দান্ত কিছু করে ফেলে, তাহলে ভিন্ন কথা।’ ভিন্ন সেই ভাবনায় তাঁদের নিয়ে যাওয়ার মতো পারফরম্যান্সও যে কেউ কেউ করছেন না, তাও নয়। চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেই (ডিপিএল) আছেন উল্লেখযোগ্য বেশ কয়েকজন পারফরমার। আপাতত সবার আগে আসছে এনামুল হকের নামই। গতকাল ফতুল্লায় আবাহনীর বিপক্ষে করেছেন আসরে তাঁর টানা তৃতীয় সেঞ্চুরি।
যে সেঞ্চুরি দিয়ে তিনি পাশে বসলেন মোহাম্মদ আশরাফুলেরও। ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেটের এক আসরে সর্বোচ্চ পাঁচটি সেঞ্চুরির রেকর্ড এখনো বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়কেরই আছে। যেটি গড়ার পথে গত আসরে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে ডিপিএল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা তিন ম্যাচেও সেঞ্চুরি করেছিলেন আশরাফুল। গত আসরে প্রথম পর্বের শেষ রাউন্ডে মোহামেডানের বিপক্ষে ১২৭ রান করা ব্যাটসম্যান রেলিগেশন লিগের দুই ম্যাচেও ছুঁয়েছিলেন তিন অঙ্ক। অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে ১০৩ রান করার পর ব্রাদার্স ইউনিয়ন ম্যাচেও খেলেছিলেন ১৩৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। তাঁর দল প্রথম বিভাগে অবনমিত হয়ে গেলেও রেকর্ডের পাতায় ঢুকে যাওয়া আশরাফুলের পাশে নিজের নামও টুকে নেওয়া এনামুলের ব্যাটেও এখন রানবন্যা। শেষ তিন ম্যাচে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়কের ইনিংসগুলো দেখুন—লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে অপরাজিত ১০০, শেখ জামাল ধানমণ্ডির বিপক্ষে ১০১ ও আবাহনীর বিপক্ষে ১০২!
আসরের প্রথম দুই ম্যাচে ভালো শুরু পেয়েও কাজে লাগাতে না পারা এনামুলের সবশেষ তিন ম্যাচের পারফরম্যান্স কি নির্বাচকদের ভাষ্যানুযায়ী ‘দুর্দান্ত কিছু’র মধ্যে পড়ছে? প্রশ্নটা শুনেই প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের জবাব, ‘অবশ্যই পড়ছে। টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরি অবশ্যই বড় অর্জন। ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সেও আমরা নজর রাখছি। যারা যারা পারফরম করছে, তারা কেউ আমাদের চোখের আড়ালে নেই।’ ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে অনেক আগেই জাতীয় দলের বিবেচনার বাইরে চলে যাওয়া ফরহাদ রেজার অন্তত বিশ্বকাপের ৩০ জনের প্রাথমিক দলে থাকার তথ্য দিয়ে মিনহাজুলরা সে দাবিকে জোরালোও করতে পেরেছেন। অবশ্য তিনি এটিও চান যে পারফরমারের সংখ্যাধিক্যে তাঁদের কাজটি কঠিনও হয়ে যাক, ‘আমরা তো বিশ্বকাপ দল নিয়ে বসিনি এখনো। চাইব এর আগে যেন অনেক পারফরমার থাকে। সবাইকে তো আর সুযোগ দেওয়া যাবে না। তবে পারফরমার বেশি থাকার সুবিধা হলো অনেক ক্ষেত্রে বিকল্পের দরকার হলে ফর্মে থাকা এদের মধ্য থেকেই বেছে নেওয়া যায়।’
সে রকম কোনো পরিস্থিতিতেও কারো কারো জন্য খুলে যেতে পারে বিশ্বকাপের দরজা। ২০১৫ বিশ্বকাপে এনামুলের ইনজুরিতেই যেমন উড়ে গিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। নিউজিল্যান্ডের নেলসনে স্কটল্যান্ড ম্যাচে ফিল্ডিংয়ের সময় কাঁধে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে ছিটকে পড়া এনামুলের অবশ্য এরপর জাতীয় দলে আবার জায়গা পেতে পেতে পেরিয়ে গেছে প্রায় তিন বছর। গত বছরের জানুয়ারিতে ঢাকা ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের চার ম্যাচে ৫৫ রান করা এনামুল তবু দ্বিতীয় সুযোগ পেয়েছিলেন জুলাই-আগস্টের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। সেখানেও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তাঁর রান—০, ২৩ ও ১০! যথেষ্ট সেই সুযোগেও পারফরম করতে না পারা এনামুলের টানা তিন সেঞ্চুরি যদি তাঁকে আবার বিবেচনার টেবিলেও অন্তত ওঠাতে পারে, তাও বা কম কী!
Label:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget