Latest Post


করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করবে সরকার। সোমবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় এ বৈঠক হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব। অন্যান্যরা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে অংশ নেবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ওমিক্রম পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া ভার্চুয়ালি সারাদেশ কানেকটেড থাকবে। ডিসি, এসপি, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার, স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক, সিভিল সার্জনরা ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন। আমাদের একটা নেটওয়ার্ক আছে, মিটিংয়ের সময় সেটা কানেক্টেড থাকবে। স্বাস্থ্য, প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্রের লোকজন সবাই এই মিটিংয়ে থাকবেন।

বৈঠকে ওমিক্রন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই কর্মকর্তা।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ওমিক্রন দ্রুত ছড়াচ্ছে। প্রতিবেশি দেশ ভারতে প্রতিদিনই ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা সাতজন।

গত ১১ ডিসেম্বর জিম্বাবুয়ে ফেরত বাংলাদেশি দুই নারী ক্রিকেটার ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায়। ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জানায়, ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়া বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের দুই খেলোয়াড় ভালো আছেন এবং তারা করোনা নেগেটিভ হয়েছেন।

এরপর ২৯ ডিসেম্বর তিনজন ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানায় গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিআইএসএআইডি)। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর দেশে আরও দুজন ওমিক্রনে আক্রান্ত হন।


ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে আক্রমণ করে, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা সুনির্দিষ্টভাবে জবাব দেবে। স্থানীয় সময় রবিবার হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রেডিও ফ্রি ইউরোপ এবং রেডিও ফ্রি লিবার্টি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বাইডেন। ওই সময় তিনি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিত করেছেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন পিসাকি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

পিসাকি বলেছেন, নেতারা কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সামনের সপ্তাহে দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত স্থিতিশীলতা নিয়ে সংলাপ হবে। 

জানা গেছে, তিনটি উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন ও রুশ আলোচনার প্রথমটি ৯-১০ জানুয়ারি জেনেভায় অনুষ্ঠিত হবে। 

এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেন ইস্যুতে সতর্ক করে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাইডেন। এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সরাসরিই সমর্থনের কথা জানিয়ে দিলেন।
সূত্র: রেডিও ফ্রি ইউরোপ।


আবারও কমলো তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ও পরিবহনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত এলপিজির (অটোগ্যাস) দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে আরও কমায় দেশেও আবার দাম কমানো হলো। 

চলতি জানুয়ারি মাসের জন্য বেসরকারি পর্যায়ে মূসকসহ প্রতি কেজি এলপিজি ১০২ টাকা ৩২ পয়সা থেকে কমিয়ে ৯৮ টাকা ১৭ পয়সা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। ফলে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ২২৮ টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার ১৭৮ টাকা করা হয়েছে। সেই হিসেবে সিলিন্ডার প্রতি কমলো ৫০ টাকা। আজ ৩ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে এই দাম কার্যকর হবে।
 
আজ সোমবার (৩ জানুয়ারি) সোমবার অনলাইনে বিইআরসি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই দাম ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে কমিশন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, সচিব আবু সায়িদ, সদস্য মকবুল ই ইলাহিসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ডিসেম্বর মাসের জন্য বেসরকারি পর্যায়ে মূসকসহ প্রতি কেজি এলপিজি ১০৯ টাকা ৪২ পয়সা থেকে কমিয়ে ১০২ টাকা ৩২ পয়সা করা হয়। এতে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৩১৩ টাকা থেকে কমে হয় ১ হাজার ২২৮ টাকা।  


নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাসাবাড়িতে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত (রেটিকুলেটেড) এলপিজির দামও কমানো হয়েছে। প্রতি কেজি ৯৯ টাকা ০৮ পয়সা থেকে থেকে কমিয়ে ৯৪ টাকা ৯৪ পয়সা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একইসঙ্গে কমেছে পরিবহনে ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের দামও, যা অটোগ্যাস নামে প্রচলিত। জানুয়ারি মাসের জন্য অটোগ্যাসের দাম প্রতি লিটার ৫৪ টাকা ৯৪ পয়সায় আদেশ দেওয়া হয়, যা ডিসেম্বর মাসে ছিল ৫৭ টাকা ২৪ পয়সা। লিটারে কমেছে প্রায় ২ টাকা ৩০ পয়সা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সৌদি সিপি অনুসারে জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম যথাক্রমে প্রতি টন ৭৯৫ থেকে কমে ৭৪০ এবং ৭৫০ ডলার থেকে কমে ৭১০ ডলারে নেমেছে। প্রোপেন ও বিউটেনের মিশ্রণ অনুপাত ৩৫:৬৫ বিবেচনায় জানুয়ারি মাসের জন্য এই নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

শুধু ১২ কেজি নয়, সাড়ে ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত সব সিলিন্ডারের দামই কমানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।


মোবাইল জগতের একসময়ের রাজা ব্ল্যাকবেরি ফোনের অধ্যায় শেষ হচ্ছে চলতি মাসের ৪ জানুয়ারি। এদিন ব্ল্যাকবেরি নিজস্ব সফটওয়্যার চালিত ফোন বা ট্যাবলেটে অপারেটিং সিস্টেম ৭.১ এবং তার আগের সংস্করণ, একইসাথে ওএস ১০ ডিভাইসগুলোতে প্রধান প্রধান সেবা বন্ধ হয়ে যাবে।

একইদিনে কোম্পানির ট্যাবলেট ‘প্লেবুক’ এর অধ্যায়ও শেষ হচ্ছে। ব্ল্যাকবেরি ফোনের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম বন্ধ হওয়ার ফলে জনপ্রিয় ফিচার যেমন জরুরি কলিং, ফোন কল, ডেটা চালু থাকবে- এমন গ্যারান্টিও দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। যার ফলে গ্রাহকের ব্যবহার করা ফোনটি অকেজো হয়ে যাবে।

অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। ২০১৯ সালেই ব্ল্যাকবেরি তাদের অ্যাপ স্টোর এবং জনপ্রিয় মেসেঞ্জার বিবিএম বন্ধ করে দেয়। ফলে ব্ল্যাকবেরির আর ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনাই নেই।

একের পর এক ব্যর্থতায় বন্ধ হতে চলেছে ব্ল্যাকবেরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক প্রযুক্তিতে নিজেদের মানিয়ে নিতে না পারায় বাজার হারিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।


গত চল্লিশ বছরে চীনে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। দেশটি পরিচিত হয়ে উঠেছে বিশ্বের মেগা কারখানা হিসাবে। চীনের এই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে অনেকে 'অলৌকিক অর্থনীতি' বলে থাকে। যার মূল চালিকাশক্তি বিশাল এক অভিবাসী কর্মী বাহিনী। এই শক্তি দেশটির গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে কাজ করতে যাওয়া লাখো লাখো মানুষের জনবল।

কিন্তু এর জন্য চীনের গ্রামীণ জনপদগুলোকে কী মূল্য দিতে হয়েছে? চীনের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সেই প্রতিচ্ছবিকে ফুটিয়ে তুলেছেন এক চীনা লেখিকা তার নিজের গ্রামের আয়নায়।

শাংহাই পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত পরিবর্তনশীল শহরগুলোর একটি। কিন্তু যারা এই শহরের আকাশচুম্বী অট্টালিকাগুলো তৈরি করছেন, যাদের শ্রমে তৈরি নানাধরনের পণ্যসামগ্রী এই শহরেরই বন্দর থেকে পাড়ি জমাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তে, তারা চীনের গ্রাম ছেড়ে শহরে কাজ করতে যাওয়া মানুষের ঢল।

চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যেভাবে ঘটেছে তা দ্রুততা এবং বিশালতার দিক দিয়ে এতটাই যুগান্তকারী যে, প্রায়ই একে ব্যাখ্যা করা হয় একটা অলৌকিক ঘটনা বা 'মিরাকল' হিসাবে।

বহু বছরের অর্থনৈতিক স্থবিরতা আর দারিদ্রের মধ্যে দিয়ে সময় পার করার পর একদলীয় কম্যুনিস্ট এ রাষ্ট্রটি ১৯৭০ এর শেষ দিক থেকে অর্থনীতি উন্মুক্ত করতে ও সংস্কারের পথে হাঁটতে শুরু করে।


চীনের প্রাচীন হুকো পদ্ধতি
এর আগে পর্যন্ত চীনের মানুষ ছিল হুকো পদ্ধতিতে বন্দি। এই হুকো-র আওতায় মানুষের স্বাধীনভাবে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় যাওয়ার অধিকার ছিল না।

চীনা লেখিকা লিয়াং হং বিবিসিকে বলছিলেন এই হুকো হল মানুষকে এলাকা ভিত্তিতে নথিভুক্ত করার বহু প্রাচীন একটা পদ্ধতি। এতে পরিবারগুলোকে এলাকা ভিত্তিতে নথিবদ্ধ করা হয় এবং পরিবারের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিয়ন্ত্রিত হয় এই ব্যবস্থার অধীনে।

‘১৯৫০ থেকে ৭০ এর দশকের শেষ পর্যন্ত চীনের ভেতরে মানুষের চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ ছিল। এলাকা থেকে বেরনোর জন্য প্রত্যেককে অনুমতি নিতে হতো। নিজের শহর বা গ্রাম থেকে অন্য এলাকায় যেতে হলে ভ্রমণের জন্য বিশেষ অনুমতিপত্র লাগত,’ বলছেন লিয়াং হং।

কিন্তু ৮০’র দশক থেকে এই বিধিনিষেধ উঠে যেতে শুরু করে। ফলে দেশের ভেতরে যেখানে ভাল কাজের সুযোগ সুবিধা আছে সেখানে মানুষের স্বাধীনভাবে যাওয়ার পথ খুলে যায়।

আর এ কারণেই চীনের ভেতরেই হঠাৎ করে শহরমুখী অভিবাসনের একটা ঢল নামে বলে বলছেন বেইজিংএ রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা সাহিত্যের অধ্যাপক লিয়াং হং।

তিনি বড় হয়েছেন চীনের হুবেই প্রদেশে লিয়াং নামে এক গ্রামে। ওই গ্রামে ছিল তাদের বড় পরিবার। তারা ছিলেন ছয় ভাইবোন।

লিয়াং বলছিলেন, শহরে অভিবাসী কর্মীদের কাজ করার অনুমতি যখন ছিল না, তখন গ্রামে তার মত পরিবারের বাপমায়েরা গোটা পরিবারের ভরনপোষণ করতে হিমশিম খেতেন।


‘এরপর হঠাৎই অর্থনীতিতে একটা জোয়ার এলো, বিশেষ করে উপকূলবর্তী এলাকায়। গ্রামের মানুষদের জন্য এসব শহরের কারখানাগুলোয় গিয়ে কাজ করার বিরাট একটা সুযোগ তৈরি হল। তাদের জন্য ভাল আয়-রোজগারের পথ খুলে গেল। তারা গ্রামে উপার্জনের অর্থ পাঠাতে শুরু করল, তাদের পুরো পরিবারের জীবনের মান উন্নত হতে শুরু করল।’


ভাসমান কর্মশক্তি
লিয়াং হং যে উপকূল এলাকার কথা বলছেন, সেটি দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশে এবং পরিচিত পার্ল নদীর বদ্বীপ এলাকা নামে।

এটি পৃথিবীর অন্যতম সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ একটি শহর এলাকা, যে এলাকা কারখানায় ঠাসা। সেখানকার অসংখ্য কারখানায় তৈরি পোশাকআশাক ও অন্যান্য পণ্য সামগ্রী সেখান থেকে চালান যায় সারা বিশ্বের নানা দেশে।

কিন্তু সেখানকার লাখ লাখ মানুষ এসেছেন বিভিন্ন গ্রাম থেকে, যাদের বসতি হুকো ব্যবস্থায় নথিভুক্ত তাদের গ্রামে।

এরাই চীনের ভাসমান কর্মশক্তি - অভ্যন্তরীণ অভিবাসী।

ধারণা করা হয়, চীনে ২৫ কোটির বেশি মানুষ কাজের জন্য নানা শহরে গিয়ে বসতি গড়েন। এরা দেশটির মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩০ শতাংশ।

লেখিকা লিয়াং হং বলছেন, এই অভিবাসী জনগোষ্ঠীর শহরে কাজ করার সুযোগ তৈরি হওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিতেও প্রবৃদ্ধির ছোঁয়া লেগেছে, কিন্তু গ্রামীণ জীবনে এর ফলে ঘটে গেছে ব্যাপক ওলটপালট।


মানসিক একাকীত্বে তরুণ সমাজ
লিয়াং হং বলছেন, গ্রাম থেকে বিশাল সংখ্যক মানুষ কাজের সন্ধানে শহরে গেছেন, কিন্তু রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার কারণে পরিবার ও সন্তানদের তারা গ্রামেই রেখে আসতে বাধ্য হয়েছেন। পরিবারগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়েছে তাদের শিক্ষার কারণে। যারা গ্রামের বাসিন্দা, শহরের হুকো ব্যবস্থায় তাদের নাম নথিভুক্ত নেই, কারণ তারা শহরের স্থায়ী বাসিন্দা নন। ফলে যে শহরে বাবার কর্মস্থল, সেখানে তাদের ছেলেমেয়েদের সরকারি স্কুলে ভর্তি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই তারা পড়ে থাকছে গ্রামে- বড় হচ্ছে দাদী, নানীর কাছে। তারাও সাধ্যমত তাদের মানুষ করার চেষ্টা করছেন,’ বলছেন লিয়াং।

পড়াশোনার ফাঁকে লিয়াং হং হুবেই প্রদেশে নিয়মিত তার পূর্বপুরুষের গ্রামে যেতেন। তিনি দেখতেন বৃদ্ধ দাদা, নানারা তখনও খেতখামারে কৃষিকাজ করছেন, পাশাপাশি একাধিক শিশুর লালনপালনের গুরুদায়িত্বও পালন করছেন তারা।

‘বুড়ো বয়সে কঠিন জীবন টানছেন তারা, যে জীবন এমনকি একটা তরুণ দম্পতির জন্যও কঠিন।’

লিয়াং বলছেন, দাদা বা নানারা তাদের দেখাশোনা করলেও, মা-বাবা সাথে না থাকার ফলে এসব ছেলেমেয়ের জন্য নানাধরনের সামাজিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

তিনি বলছেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো গ্রামভিত্তিক এই সংসারগুলোয় পারিবারিক বন্ধন তৈরি হচ্ছে না।

‘এসব ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শেষ করে হয়ত বাবার পদাঙ্কই অনুসরণ করবে- নিজেও শহরে কাজের খোঁজে ছুটবে। কিন্তু বেড়ে ওঠার বছরগুলোতে তারা একা। বাপ-মায়ের সাথে তাদের কোনো বন্ধন নেই- বরং তৈরি হচ্ছে একটা বিশাল মানসিক দূরত্ব। পরিবারের স্বাভাবিক কাঠামো ভেঙে যাচ্ছে। একটা গোটা প্রজন্ম একাকীত্বের শিকার।

‘আমি অবশ্য এটা বলছি না যে গ্রাম এলাকার সব তরুণই মানসিকভাবে একাকী, তাদের সবারই আবেগ অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে, তারা গভীর নিঃসঙ্গতায় ভুগছে। কিন্তু আমি বলছি এদের সংখ্যাও কিন্তু নেহাত কম নয়,’ বলেছেন লিয়াং হং।

চীনের বিভিন্ন গ্রামে এ ধরনের লাখো লাখো তরুণ-তরুণী মা-বাবার সান্নিধ্য না পেয়ে বড় হচ্ছে। তাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

লিয়াং হং বলছেন, এটা বিশাল একটা সমস্যা। ‘সন্তানদের জীবন সম্পর্কে শিক্ষা দেয়ার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টাতে মা-বাবা তাদের পাশে থাকতে পারছেন না। কারণ সরকারি ব্যবস্থার বাইরে এসব বাবা-মায়ের শহরে সন্তানকে কাছে রেখে বড় করার আর্থিক সামর্থ্য নেই।’


'এক গ্রামে গোটা চীন'
চীনের গ্রামীণ জীবন কীভাবে বদলে যাচ্ছে তার একটা খতিয়ান রাখতে শুরু করেছিলেন লিয়াং হং। ২০১০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তার বই 'চায়না ইন ওয়ান ভিলেজ'- এক গ্রামে গোটা চীন।

গ্রামে তারা বাবার প্রতিবেশি ও যেসব পরিবারের সান্নিধ্যে তিনি বড় হয়ে উঠেছিলেন তাদের কাহিনী, তাদের অভিজ্ঞতা যা তিনি সংগ্রহ করেছিলেন, সেসবই তার এই বইয়ের উপজীব্য। চীনে বইটি বেস্ট সেলার হয়েছে, কারণ চীনের অসংখ্য মানুষ বইয়ের পাতায় নিজেদের জীবনের প্রতিফলন দেখেছেন।

‘সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এই বইয়ে যিনি গল্প বলছেন - অর্থাৎ আমি- কোনো কল্পিত চরিত্র নই- আসল রক্তমাংসের মানুষ। ওই গ্রামের সাথে জড়িয়ে আছে আমার আবেগ। তাই ওই গ্রামের স্মৃতি আমার বইয়ের পাতায় পাতায় - সেখানে আমি বড় হয়েছি, খুব কাছ থেকে গ্রামটাকে দেখেছি। গ্রামের পরিবর্তন আমি নিজের চোখে দেখেছি।’

শুধু সামাজিক আর অর্থনৈতিক পরিবর্তনই নয় এমনকি উন্নয়নের ফলে যেসব ভৌগলিক পরিবর্তন ঘটেছে তাও উঠে এসেছে লিয়াং হংএর বইয়ে।

তিনি বলেছেন ছোটবেলায় যে নদী ছিল তার জীবনের সঙ্গী- তার কিশোরী বয়সে যে নদীর পাড়ে গ্রীষ্মের সন্ধ্যায় সারা গাঁয়ের মানুষ জড়ো হতেন, আনন্দ করতেন, নদীতে নেমে তারা সাঁতার কাটতেন, নব্বইয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে সে নদী এখন চরম দূষণের শিকার।

‘দুর্গন্ধের কারণে সেখানে আজ যাওয়া যায় না। নদীর রং বদলে গেছে। নির্মাণ কাজের জন্য নদী থেকে বালু তোলা শুরু হয়েছে। গোটা নদী এলাকা আজ ধ্বংসের শিকার।’

লিয়াং হং বলেন, তিনি পাঠকদের সরাসরি তার গ্রামে নিয়ে যেতে চান, গ্রামের মানুষের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে দেখাতে চান চীনের এই বিশাল অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গ্রামগুলোকে কী মাশুল দিতে হয়েছে।

তিনি বলছেন, তিনি প্রাচীনপন্থী নন। পুরনোকে আঁকড়ে ধরে থাকার আবেগের বিষয় এটা নয়।

‘গ্রাম যদি টিকে থাকার উপযুক্ত না হয়, সে কারণে যদি গ্রামীণ জনপদের মৃত্যু ঘটে, আমি সেটা মেনে নেব। কিন্তু মানুষের আরো সৃজনশীল হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ভাবা উচিত গ্রামীণ অর্থনীতিকে কীভাবে আরো চাঙ্গা করা যায়, কীভাবে গ্রামগুলোতে বা তার ধারেকাছে আরো কর্মসংস্থান করা যায়,’ বলছেন লিয়াং হং।

তিনি বলছেন, সব কারখানা যদি দেশের দক্ষিণে উপকূলের শহরগুলোতে গড়ে তোলা হয়, তাহলে মানুষকে কাজের সন্ধানে শতশত মাইল পাড়ি জমাতে হবে।

তার মতে, গ্রামের আশপাশের শহরগুলোতে কাজের সুযোগ তৈরি হলে মানুষ ঘনঘন গ্রামে ফেরত যেতে পারবে - সন্তানদেরও অনেক বেশি সান্নিধ্য দিতে পারবে। গ্রামের অর্থনীতি একদিকে সমৃদ্ধ হবে, অন্যদিকে, গ্রামের জীবনের সঙ্গে তাদের একটা যোগসূত্রও তৈরি হবে। এতে গ্রামও বাঁচবে, পরিবারও বাঁচবে।

লিয়াং হং তার গ্রামের বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে আরো দুটি বই লিখেছেন। তিনি এখন অনেক বেশি সময় কাটান নিজের গ্রামে।

চীনে উন্নয়ন ও নগরায়নের প্রভাব নিয়ে তিনি তার গবেষণার কাজ চালিয়ে যেতে চান। চীনা সমাজে বিশাল এই পরিবর্তনের প্রতিফলন তিনি ধরতে চান একটি গ্রামের আয়নায়।

হুবেই প্রদেশের লিয়াং গ্রামের চরিত্রগুলো এরপর কী করবে, তার মধ্যে দিয়ে চীনের সমাজ জীবনের ভবিষ্যত যাত্রাপথের ঠিকানা পাঠককে জানানো তার দায়িত্ব বলে মনে করেন লেখিকা লিয়াং হং।

সূত্র : বিবিসি


করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপটের মধ্যে ভারতে দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ। দেশটিতে একদিনে শনাক্ত হয়েছে ২৭ হাজার ৫৫৩ জন নতুন রোগী।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার জানিয়েছে, নতুন রোগীদের নিয়ে ভারতে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে তিন কোটি ৪৮ লাখে। আগের দিন আরও ২৮৪ জনের মৃত্যুতে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৮১ হাজার ৭৭০ জনে।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতার মত ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে মহামারি পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে দ্রুত। গত নভেম্বরে ভারতে ওমিক্রনের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৫২৫ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ৫৬০ জনই মহারাষ্ট্র আর দিল্লির বাসিন্দা।

ভারতের ২৩টি রাজ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। দৈনিক সংক্রমণের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৫৫ শতাংশে।

কেবল দিল্লিতেই রোববার দুই হাজার ৭১৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে দ্বিগুণ। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার সেখানে ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। 

ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় দিল্লির পাশের শহর হরিয়ানায় সিনেমা হল আর গুরগাঁওয়ের ক্রীড়া কমপ্লেক্সগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে স্কুলে।

কেন্দ্রীয় সরকার এরই মধ্যে রাজ্য সরকারগুলেকে অস্থায়ী হাসপাতাল আর বিশেষ মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা করতে বলেছে, যাতে রোগীর চাপ আরও বেড়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়।

প্রথম দিনের শেষটা যেখানে করেছিল বাংলাদেশ, দ্বিতীয় দিনের শুরুটা করেছে ঠিক সেখান থেকেই। বোলিংয়ে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে খুব বেশি বড় হতে দেয়নি নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ। পরে ব্যাটিংয়েও বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা হয়েছে আশা জাগানিয়া।

শনিবার ম্যাচের প্রথম দিনে ৮৭.৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। আজ (রোববার) তাদের বাকি ৫ উইকেট তুলে নিতে বাংলাদেশের লেগেছে ২০.৪ ওভার। আগেরদিনের স্কোরের সঙ্গে আরও ৭০ রান যোগ করে ৩২৮ রানে অলআউট হয়েছে কিউইরা।

জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ৩১ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৭০ রান। বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম আউট হয়েছেন ২২ রান করে। তরুণ ডানহাতি ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় খেলছেন ৩২ রান নিয়ে। তিন নম্বরে নেমে নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত ১২ রানে।

আজ দিনের প্রথম সাফল্য পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। দিনের পঞ্চম ওভারের শেষ বলে রাচিন রবীন্দ্রকে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচে পরিণত করেন শরিফুল ইসলাম। আউট হওয়ার আগে রাচিন করতে পেরেছেন কেবল ৪ রান।


সপ্তম উইকেটে মাঝারি প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন হেনরি নিকলস ও কাইল জেমিসন। এবাদত হোসেনের করা ৯৮তম ওভারে পরপর তিন বাউন্ডারি হাঁকান নিকলস। যার প্রথমটিতে ব্যক্তিগত পঞ্চাশে পৌঁছে যান এ বাঁহাতি ব্যাটার।

তবে বিপদ বেশি বাড়তে দেননি বাংলাদেশের অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ইনিংসের ১০০তম ওভারে আক্রমণে এসে তৃতীয় বলেই সুযোগ তৈরি করেন তিনি। কিন্তু শর্ট লেগে দাঁড়ানো মাহমুদুল জয় সেটি হাতে রাখতে পারেননি, বেঁচে যান জেমিসন।

অবশ্য জীবন পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি জেমিসন। মিরাজের পরের ওভারেই লং অন বাউন্ডারিতে দাঁড়ানো সাদমানের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। তাসকিন আহমেদের করা পরের ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাল্টা জবাব দেওয়ার আভাস দেন টিকে থাকা একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটার নিকলস।

একপ্রান্তে নিকলস টিকে থাকলেও অন্যপ্রান্তে টপাটপ আরও দুই ব্যাটারকে সাজঘরে পাঠান মিরাজ। ইনিংসের ১০৬তম ওভারের চতুর্থ বলে শর্ট মিডউইকেটে মুমিনুলের হাতে ধরা পড়েন টিম সাউদি, পরের বলে কট বিহাইন্ড হন নেইল ওয়াগনার। দারুণ রিভিউ নিয়ে ওয়াগনারের বিদায় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

উইকেটের কলামে মিরাজের নামের পাশে সংখ্যা আরও বাড়তে পারতো। কিন্তু এবার তার বলে লংঅন থেকে ছুটে যায় ক্যাচ, হয়ে যায় বাউন্ডারি, বেঁচে যান ট্রেন্ট বোল্ট। তবে পরের ওভারের প্রথম বলেই ৭৫ রান করা নিকলসকে সাজঘরে পাঠিয়ে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস গুটিয়ে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক।


বল হাতে বাংলাদেশের পক্ষে তিনটি করে উইকেট নেন শরিফুল ও মিরাজ, মুমিনুলের শিকার দুই উইকেট। ফিল্ডিংয়ে সাদমান নেন ৪টি ক্যাচ। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ফিল্ডার হিসেবে টেস্টের এক ইনিংসে ৪ ক্যাচ নিলেন তিনি। এর আগে সৌম্য সরকার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৭ সালে নিয়েছিলেন ৪ ক্যাচ।

নিউজিল্যান্ডকে অলআউট করার পর প্রথম সেশনে তিন ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ৫ রান করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ও মাহমুদুল জয়। দ্বিতীয় সেশনেও দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা দুজন। বিশেষ করে টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্টের বিপক্ষে বেশ ভালো জবাব দিয়েছেন তারা।

গড়বড় হয়ে যায় বাঁহাতি নেইল ওয়াগনার আক্রমণে আসতেই। নিজের প্রথম ওভার মেইডেন করেন ওয়াগনার। পরে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই সাদমানকে ফিরতি ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। অবশ্য আগেই ব্যাটের ফেস বন্ধ করে ফেলায় সামনের কানায় লাগার বড় দায় সাদমানের নিজেরই।

আউট হওয়ার আগে সাদমানের ব্যাট থেকে ৫৫ বলে ২২ রানের ইনিংস। তার বিদায়ে ৪৩ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। অন্যপ্রান্তে তরুণ মাহমুদুল জয় শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। যখনই রানের সুযোগ পেয়েছেন তা দুই হাতে লুফে নিয়েছেন।

তবে খানিক ভাগ্যের ছোঁয়াও পেয়েছেন মাহমুদুল জয়। ব্যক্তিগত ২০ ও দলীয় ৪৪ রানের মাথায় তার বিপক্ষে লেগ বিফোরের জোরালো আবেদন করেন ওয়াগনার। আম্পায়ার সাড়া দেননি। ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগেছে ভেবে নিউজিল্যান্ডও রিভিউ নেয়নি।

কিন্তু রিপ্লে'তে দেখা যায়, বল ব্যাটে লাগেনি এবং সেটি আঘাত হানতো মিডল-লেগ স্ট্যাম্পে। অর্থাৎ রিভিউ নিলে সাজঘরে ফিরতে হতো মাহমুদুল জয়কে। ভাগ্যের ছোঁয়ায় বেঁচে যাওয়ার পর আর ভুল করেননি তিনি। নাজমুল শান্তকে নিয়ে দেখেশুনে পার করে দেন দ্বিতীয় সেশনের বাকি সময়।

প্রথম সেশনে বিনা উইকেটে ৫ রান করা বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় সেশনে ২৮ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে করেছে ৬৫ রান। নিউজিল্যান্ডের চেয়ে এখনও ২৫৮ রানে পিছিয়ে রয়েছে তারা।


স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যকার প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা দুর্দান্ত কাটাল বাংলাদেশ। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে আজ প্রথমে বল হাতে ও পরে ব্যাট হাতে দাপট দেখিয়েছে টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডকে ৩২৮ রানে অলআউট করে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম  করেছে মুমিনুলবাহিনী। নিজের দ্বিতীয় টেস্টেই অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ফিফটি করেছেন নাজমুল হোসেন শান্তও।

২ উইকেটে ১৭৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। মাহমুদুল হাসান জয় ৭০ ও অধিনায়ক মুমিনুল হক ৮ রানে অপরাজিত আছেন। নিউজিল্যান্ডের চেয়ে আর ১৫৩ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ, হাতে আছে আরো ৮টি উইকেট।

সাজঘরে ফিরেছেন ওপেনার শাদমান ইসলাম ও তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। শাদমান ২২ ও শান্ত ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন। কিউইদের পক্ষে দুটি উইকেটই শিকার করেছেন বাঁহাতি পেসার নিল ওয়াগনার।

এর আগে ৫ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশি বোলারদের তোপে আজ ৭০ রান তুলতে গিয়ে শেষ ৫ উইকেট হারায় কিউইরা। আগের দিন ১২২ রান করে কনওয়ে ও ৫২ রান করে উইল ইয়ং আউট হয়েছিলেন। আজ ৭৫ রান করেছেন হেনরি নিকোলস। ‍শরিফুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৩টি করে উইকেট দখল করেছেন। মুমিনুল হক শিকার করেন ২টি উইকেট।


চলার পথ যতই অন্ধকারাচ্ছন্ন, বন্ধুর কিংবা কণ্টকাকীর্ণ হোক, তাতে না থেমে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি উদযাপনের অনুষ্ঠানে রবার্ট ফ্রস্টের কবিতা থেকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “দ্য উডস আর লাভলি, ডার্ক অ্যান্ড ডিপ, বাট আই হ্যাভ প্রমিজেস টু কিপ, অ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ, অ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ।”

রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন শেখ হাসিনা।  

তিনি বলেন, “আমি জানি, স্বাধীনচেতা হলে অনেক বাধা আসে। আর দেশকে ভালোবেসে শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে যারা পথ চলে, তাদের পথ চলা কখনো সহজ হয় না। অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়। চলার পথ যতই অন্ধকারাচ্ছন্নই হোক না কেন, যত বন্ধুর হোক না কেন, যত কণ্টকাকীর্ণ হোক, সেখানে আমরা থেমে থাকব না। অন্তত আমি এই প্রতিজ্ঞা করছি থেমে থাকব না।


“চলার পথ যত কণ্টকাকীর্ণ হোক, যত রক্তক্ষরণ হোক, সব পদদলিত করে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাব- এটাই হচ্ছে আমার প্রতিজ্ঞা।”

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ গত নভেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অনুমোদন পায়। উত্তরণের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর প্রস্তুতির সময় পাবে। অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে।   

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে কোনো সময় আমি জানি অনেক বুলেট, বোমা, গ্রেনেড আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। আমি কখনো সেগুলো নিয়ে পরোয়া করি না। আমি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করি।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যে লক্ষ্য স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তার মেয়ে শেখ হাসিনা।

নতুন প্রজন্মই বাংলাদেশকে সেই পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “সেভাবেই তাদেরকে তৈরি করতে চাই যে ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন এই চলার গতিটা ধরে রাখতে পারে। সেই লক্ষ্যটা সামনে নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।


“আমরা বিজয়ী জাতি। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। বিশ্ব দরবারে বিজয়ী জাতি হিসেবে সম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে আমরা চলব।”

নতুন প্রজন্মের কাছে নিজের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অন্তত আমি তাদেরকে এটুকু আহ্বান করব যে- দেশকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে।… সেখানেই শান্তি, সেখানেই অগ্রগতি, সেখানেই উন্নতি, সেখানেই স্বস্তি।”

দেশকে এগিয়ে নিতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং পরিকল্পনার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “চিরদিন কেউ বাঁচে না। কিন্তু যেই কাজ আমরা করে গেলাম, সেই গতি যেন হারিয়ে না যায়, চলার গতি যেন অব্যাহত থাকে, বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়- সেটাই আমরা চাই।”

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও গণভবন থেকে এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন।


মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এলিট ফোর্স র‌্যাব এবং বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা পুনর্বিবেচনা করতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

ইংরেজী নববর্ষ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দেন ড. আব্দুল মোমেন। সেখানে র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের স্বাক্ষর সংবলিত একটি চিঠি মেইলে ওয়াশিংটনে গেছে বলে জানা গেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রশ্নে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে ব্লিনকেনকে আনুষ্ঠানিক জবাব পাঠানো হয়েছে। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম স্টেট ডিপার্টমেন্টে চিঠিটি হস্তান্তর করবেন।


চিঠিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। এছাড়া সন্ত্রাস, জঙ্গি, মাদক বিরোধী কর্মকাণ্ডে র‍্যাবের ভূমিকাও তুলে ধরা হয়।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর র‌্যাব এবং বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ।


বরিশালের মুলাদী উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তিন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। রোববার (০২ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে মুলাদী-মীরগঞ্জ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন মুলাদী উপজেলার কাজীরচর ইউনিয়নের বড়ইয়া এলাকার মৃত খালেক হাওলাদারের ছেলে ইদ্রিস হাওলাদার (৬০), কালাই নলীর ছেলে হারুন নলী (৪৫) ও মোনসেফ নলীর ছেলে রাজিব নলী (২৩)।

রাজিবের স্বজনরা জানান, রাজিব ওমান প্রবাসী। এক মাস আগে ওমান থেকে বাড়িতে আসেন। সকালে রাজিব বিয়ে করার জন্য ঘটক ইদ্রিস হাওলাদার ও তার চাচা হারুন নলীকে নিয়ে মেয়ে দেখতে বের হন। মেয়ে দেখে তারা বাড়ি ফিরছিলেন।


ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাকসুদুর রহমান প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানান, ওই তিন ব্যক্তি দুপুর ১২টার দিকে মুলাদী শহর থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন রাজিব নলী। মুলাদী সদর ইউনিয়নের কাজীরহাট ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকা অতিক্রমকালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।

ওসি এসএম মাকসুদুর রহমান বলেন, মোটরসাইকেলের গতি অনেক বেশি ছিল। এ কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে। নিহত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।


নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই দেশে বইতে শুরু করেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। আগামী দুই দিনে এটি দেশের অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পঞ্চগড় ও মৌলভীবাজার জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। বিস্তারও লাভ করতে পারে। গতকাল শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদরা জানান, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এই শৈত্যপ্রবাহ বিস্তার লাভ করতে পারে। প্রথমে মৃদু হলেও পরে তাপমাত্রা আরো কিছুটা কমে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে। বিশেষ করে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ এবং শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা বেশি কমতে পারে।

গতকাল সন্ধ্যা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়,  আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে বলা হয়, জানুয়ারি মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এ মাসে দেশে দুই থেকে তিনটি মৃদু- অর্থাৎ ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অথবা মাঝারি- অর্থাৎ ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে দুটি তীব্র- অর্থাৎ ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। এ ছাড়া এ মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি বা ঘন কুয়াশা এবং অন্য এলাকায় হালকা বা মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।


নব নিযুক্ত বাংলাদেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে সংবর্ধনা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়।  

রোববার (২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতির এক নং বিচার কক্ষে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এসময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, দুর্নীতির বিষয়ে নো কম্প্রোমাইজ। আঙ্গুলে ক্যান্সার হলে যেমন কেটে ফেলতে হয়, দুর্নীতিও তেমনি।  

অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষে সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সংবর্ধনা দেন।

সংবর্ধনার জবাবে প্রধান বিচারপতি বক্তব্য দেন।

এর আগে ৩০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় বঙ্গভবনে নতুন প্রধান বিচারপতিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সিনিয়র সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, বিচারপতি, সিনিয়র আইনজীবীসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।


দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের পর ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়েছিলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ৪৭ মাস প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন শেষে ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর অবসরে যান তিনি। শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

১৯৮১ সালের ২১ আগস্ট জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি ১৯৮৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এবং ১৯৯৯ সালের ২৭ মে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, খুলনা সিটি কর্পোরেশন, কুষ্টিয়া পৌরসভা, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির আইন উপদেষ্টা ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল।

২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগের এবং ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ আপিল বিভাগে নিয়োগ পান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলার স্বামী ও কলকাতা বাংলা সিনেমার নন্দিত নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সৃজিত লেখেন, ‘আমি করোনায় আক্রান্ত হয়েছি। নিজেকে আইসোলেট করে রেখেছি। গত ৭২ ঘণ্টায় আমার সংস্পর্শে যারা এসেছে, দয়া করে নিজেদের করোনা পরীক্ষা করান।

এদিন প্রথমে করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর জানান সংগীত পরিচালক জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “আমি করোনা আক্রান্ত হয়েছি। এখনও পর্যন্ত আমার অল্প উপসর্গ রয়েছে। তেমন কিছু অসুবিধা হচ্ছে না। নিজেকে আইসোলেট করে রেখেছি। চিকিৎসকরা যা পরামর্শ দিয়েছেন তাই মেনে চলছে। 


বছরের শুরুতেই শনিবার ভোররাতে জম্মু ও কাশ্মীরের বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের । একইসঙ্গে আহত আরও প্রায় ১৫ জন। তবে এই দুর্ঘটনার কিছু আগেই মন্দির চত্বরে রেকর্ড করা একটি ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে মন্দির প্রাঙ্গণে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ।

হাজার হাজার পূণ্যার্থী মন্দির প্রাঙ্গণে ভিড় করেছিলেন। এরই পাশাপাশি বেশ কয়েক জন পূজো দেওয়ার জন্য মন্দিরের ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ফলে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় এবং অনেকে মাটিতে পড়ে যান।অন্ধকারের কারণে ঠিক কী হচ্ছে, তা বুঝে উঠতে পারেননি অনেকেই।



মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মনোভাবের জেরে চূড়ান্ত অব্যবস্থা এবং উপচে পড়া পূণ্যার্থীদের ভিড়— এই দুই কারণকেই ঘটনার জন্য দায়ী করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।


স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী হলে সরকার লকডাউন দেওয়ার চিন্তাভাবনা করতে পারে। তবে আমরা লকডাউন চাই না। করোনা নিয়ন্ত্রণে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সরকার আরো কঠোর হবেন।

তিনি বলেছেন, ওমিক্রনের হানা থেকে সারা পৃথিবীর চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা ভালো। ইতোমধ্যে প্রতিষেধক হিসেবে করোনার মুখে খাওয়ার ট্যাবলেট দেশের বাজারে এসেছে। তবে এ ট্যাবলেট টিকার বিকল্প নয়। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি যাদের সামান্য শারীরিক সমস্যা রয়েছে তারাও এ ট্যাবলেট সেবন করতে পারবেন।

শনিবার বিকালে মানিকগঞ্জ নার্সিং কলেজ মিলনায়তনে বুস্টার ডোজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ইতোমধ্যে ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জানুয়ারি মাসে অন্তত ৪ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে। দেশে টিকার কোনো অভাব নেই। ইতোমধ্যে টিকা দেওয়ার সব ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করা হয়েছে। টিকা দেওয়ার জন্য নতুন আরও ৬ কোটি সিরিঞ্জ চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে।


বুস্টার ডোজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে— স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. শামসুল হক, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহিউদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাফিজুর রহমান, পৌর মেয়র রমজান আলী, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরশাদ উল্লাহ, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. জাকির হোসেন, সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) লুৎফর রহমান, ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


ইংরেজি নতুন বছর উদযাপন করতে গিয়ে ওড়ানো ফানুসে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। সব স্থানে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা মো. রায়হান বলেন, ঢাকাসহ আশপাশে যেসব আগুন লেগেছিল সবগুলো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগুনগুলো বড় না হওয়ায় তেমন কোনো সমস্যা নেই। এছাড়া উত্তরা এলাকায় একটি গাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এর আগে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন জানান, মধ্যরাতে রাজধানীর তেজগাঁও, যাত্রাবাড়ী, ধানমন্ডি, মিরপুর রায়েরবাগসহ অন্তত ১০টি স্থানের বিভিন্ন জায়গায় বাসার ছাদ ও বিদ্যুতের তারে আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। প্রতিটি স্থানে ফায়ার সার্ভিসের ২টি করে ইউনিট পাঠানো হয়।

রাতে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম থেকে আরো বলা হয়, একাধিক স্থানে আগুন লাগার খবর পেয়েছি আমরা। সেগুলো আমরা তালিকাভুক্ত করছি। তালিকা না করে এ বিষয়ে বিস্তারিত এই মুহূর্তে বলা সম্ভব না। তালিকা সম্পন্ন করার পর আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবে।


করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর এ সময়ে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ৩৭০ জনের শরীরে।

এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৭৬ জনে। আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৯০৯ জন।

করোনাভাইরাস নিয়ে শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫ হাজার ২১৪টি। শনাক্তের হার ২.৪৩ শতাংশ।

আরো উল্লেখ করা হয়, এদিন সুস্থ হয়েছেন আরো ২০৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৩০৪ জন।

তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সবাই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও দুজন নারী।

এর আগে শুক্রবার দেশে করোনায় আক্রান্ত দুজনের মৃত্যু হয়। আর এদিন করোনা শনাক্ত হয় ৫১২ জনের শরীরে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা জানায় সরকার। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।


আপনার কাছে হুট করে বার্তা এলো আপনার অ্যাকাউন্টে লাখ লাখ টাকা খোদ ব্যাংক থেকেই পাঠানো হয়েছে। কাল্পনিক হলেও এমন সত্যি ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাজ্যের স্যান্টান্ডার ইউকে ব্যাংকে। 

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রযুক্তিগত ভুলের কারণে বড়দিনে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে চলে যায় প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার। দ্য টাইমস অব লন্ডনের প্রতিবেদনে সর্ব প্রথম এই খবর এসেছে।

ওই ব্যাংকের এক মুখপাত্র এ বিষয়ে বলেন, প্রায় দুই হাজার ব্যক্তিগত এবং বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ চলে যাওয়ার বিষয়টি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। প্রযুক্তিগত যে ত্রুটি হয়েছে তা চিহ্নিত করা গেছে। ফলে ভবিষ্যৎ-এ ধরনের ঘটনার আশঙ্কা কম।

খবরে বলা হয়েছে,  গ্রাহকরা টাকা ফেরত দিতে চাইছেন না বলে দাবি করেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ব্যাঙ্ক আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে,  যে ভাবেই হোক ওই টাকা গ্রাহকদের থেকে পুনরুদ্ধারের।

ব্রিটেনের আইন বলছে, যদি কোনও গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ভুলবশত টাকা ঢোকে তা হলে তা ব্যাঙ্ক ফেরত নিতে পারে। গ্রাহক যদি সেই টাকা দিতে অস্বীকার করেন তা হলে তার ১০ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।



চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। শনিবার (১ জানুয়ারি) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বাংলাদেশকে ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ’ সম্পর্কিত চূড়ান্ত সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় স্মারক অনুষ্ঠানের প্রি-ইভেন্ট প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বৃদ্ধির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা বাড়ালাম। আমি যখন পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলাম সেসময় আমি নিজে স্টাডি করেছি। সেসময় আমাদের রেমিট্যান্স যা অর্জন করার কথা, আমরা ৪৯ শতাংশ অর্জন করতাম ফরমাল চ্যানেলে আর ইনফরমাল চ্যানেলে বাকিটা আসতো। আমি চিন্তা করলাম এটাকে ফরমাল চ্যানেলে আনলে আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে এবং সবাই এটার বেনিফিটটা পাবে। সেই চিন্তা থেকে আমরা প্রথম ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া শুরু করি।

এরপর লক্ষ্য করলাম আমাদের যে উদ্দেশ্য সেটি সফল। আমাদের যে অ্যাভারেজ রেমিট্যান্স ছিল ১৪ শতাংশ, এই প্রণোদনা দেওয়ার পর প্রথম বছরে রেমিট্যান্স বেড়ে হলো ১৮ বিলিয়ন ডলার। এরপর আমাদের রেমিট্যান্স আরও বেড়ে যায় এবং ২০২০-২১ সালে আমাদের রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এই অর্জন আমি মনে করি একদিকে আমরা সহজ করেছি এবং পাশাপাশি ২ শতাংশ প্রণোদনা কাজে লেগেছে। কারণ রেমিট্যান্স পাঠাতে একটি খরচ করতে হয় সেটি কাভার করতে পারছে। এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার। সেটা করতে গেলে আমরা দেখলাম যদি ইনসেনটিভ আরেকটু বাড়িয়ে দেই তাহলে বর্ধিত যে খরচ তারা সেটি কাভার করতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘এই রেমিট্যান্সটা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক এলাকায় কত বড় ভূমিকা রাখে সেটি অর্থনীতিবিদরা বুঝবেন এবং তারা আমার সঙ্গে একমত পোষণ করবেন যে, এটি অসাধারণ ভালো কাজ হয়েছে। আমরা একদিকে এটাকে সঠিক চ্যানেলে আনার চেষ্টা করছি, তাহলে জানতে পারি কতটা আসা উচিত আর কতটা পেলাম। যেটা পাচ্ছিলাম না সেটা ইনফরমাল চ্যানেলে চলে যাচ্ছিল। আমরা সেই চ্যানেলটাকে অনুৎসাহিত করবো এবং ফরমাল চ্যানেলেই পুরোটা অর্জন করতে চাই। সেজন্যই প্রণোদনা ২ শতাংশ ছিল সেখানে থেকে বাড়িয়ে ২.৫ শতাংশ করা হয়েছে, আজ থেকে এটি কার্যকর হবে। আশা করি এই অর্থবছরে ২৬ বিলিয়ন অর্জন হবে।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন অসৎ ব্যবসায়ীরা ভিন্ন পথে টাকা পাচার করছেন এবং রেমিট্যান্স থেকে সেটা কাভার করা হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ থেকে টাকা পাচার হয় এটা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। আপনাদের (মিডিয়া) থেকে তথ্য নিয়েই আমরা ব্যবস্থা করছি।

কয়েকদিন আগেও কয়েকটি মামলার রায় হয়েছে, অনেকেই জেলে আছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় যেটি সম্ভব তা বাস্তবায়ন করছি। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কে দোষী বা নির্দোষ সেটি কীভাবে প্রমাণ করবো? আমার যে চিন্তা সেটি হলো এখন বিদেশে টাকা রাখলে কেউ সেই টাকার ওপর কোনো লাভ পাচ্ছে না বরং দেশে ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ দিতে হয়। এই টাকাগুলো আমাদের কষ্টার্জিত টাকা, আমাদের ভাইবোন যারা বিভিন্ন ব্যবসা ও পেশায় জড়িত তারাই এ অর্থটি পাঠায়। আমরা চাই এই অর্থ দেশের মানুষের কাজে আসুক। দেশের সরকারের কাছে আসুক। সরকার যদি এই অর্থটি সম্পর্কে জানতে পারে তাহলে সরকার অর্থবহভাবে এই অর্থ ব্যবহার করতে পারবে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইম্পোর্ট বাড়বে, ইম্পোর্ট বাড়া ভালো। ইম্পোর্ট বাড়লে এক্সপোর্টও বাড়বে। আমাদের এক্সপোর্টও বেড়েছে। আমরা যতই রপ্তানি করি তার সিংহ ভাগই ইম্পোর্ট খাতে চলে যায়। তবুও আমাদের এক্সপোর্ট বাড়াতে হবে, আমরা সেই কাজটি অব্যাহত রেখেছি। আমরা কয়েকটি খাতকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছি। এবং সেখানেও বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিয়ে থাকি। এগুলোর মূল কথাটা হলো একটু সাহায্য-সহযোগিতা করা। আমাদের উদ্দেশ্য হলো দেশের টাকা যারা যেখান থেকে অর্জন করুক দেশে আসুক। দেশে আনার জন্য যা যা বাস্তবায়ন করা দরকার আমরা করবো।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রবৃদ্ধির ফলে লাভবান হচ্ছেন মুষ্টিমেয় লোক, এমন একটি প্রবৃদ্ধি নিয়ে আমরা এসডিজি অর্জন কিংবা উন্নত বিশ্বের কাতারে গিয়ে সাসটেইন করতে পারবো কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ থেকে আমাদের যে স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে কিন্তু এ ধরনের প্রশ্ন ছিল না। আমাদের ইকোনমিক যে ইনডেস্ক সেটি বিবেচনা করা হয়েছে এবং সেই বিবেচনায় আমাদের মাথাপিছু আয়সহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করেই আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য তারা বিবেচনা করেছে। আমি মনে করি, আমাদের কাঙিক্ষত লক্ষ্যপথেই আমরা আছি। আমাদের জাতির পিতার দেখানো পথে প্রধানমন্ত্রী আমাদের নিয়ে যাচ্ছেন, সেই স্বপ্নের জায়গায়। আমরা জাতির কাছে কমিটেট ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করবো। সেটি করলে একটি ইক্যুয়িটেবল জাস্টিজ এনশিওর করে আমাদের অর্থনীতি আরেও কীভাবে বেগবান হতে পারে সেভাবে এগিয়ে যাবো। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের স্বপ্ন পূরণ করা, ২০৩১ সালে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত বিশ্বের কাতারে আমরা পৌঁছাবো। আমাদের স্বপ্ন হচ্ছে সেই সময় পৃথিবীর ২০টি উন্নত দেশের একটি হবে বাংলাদেশ। এ অর্জন আমরা করবোই করবো।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বক্তব্য দেন।

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget