Latest Post


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ‘অমর একুশে বইমেলা-২০২২’-এর উদ্বোধন করেছেন।


‘বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বইমেলা শুধু বইমেলা নয়, সকলের মিলনমেলা।’


সারাদেশে সংস্কৃতিচর্চা আরো বাড়ানোর পাশাপাশি সকলকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান ও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।


গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রাজধানীর বাংলা একাডেমির মেলা প্রাঙ্গণে সংযুক্ত হয়ে ভার্চুয়ালি মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।


মেলা উদ্বোধনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ প্রদান করেন। ১৫ জনকে বিশিষ্ট লেখক-কবি-সহিত্যিক এবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।



এবারের অমর একুশে বইমেলা-২০২২ এর মূল প্রতিপাদ্য- ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’।


বাংলা একাডেমির সভাপতি কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি সচিব মো: আবুল মনসুর। আরো বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন।


সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজয়ীদের হাতে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার -২০২১’ তুলে দেন।


ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার রীতি থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার কাঙ্ক্ষিত অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে মাসের মাঝামাঝিতে।

সোমবার বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে বইমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ৩৮তম এই বইমেলা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে মেলার মেয়াদ বাড়ানোর আভাস দিয়েছিলেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তার মেলা উদ্বোধনকালের ভাষণে সকলের সাথে আলোচনাসাপেক্ষ একে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চ পর্যন্ত চলার ইঙ্গিত দেন।


ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই বইমেলা খোলা থাকবে। রাত ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। এছাড়া, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গায় বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় মোট ৩৫টি প্যাভিলিয়নসহ একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিটসহ মোট ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

বইমেলায় প্রবেশ ও বাহির পথে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেলার এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকবে। প্রবেশ ও বাহির পথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ।

বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে চারটি প্রবেশপথ ও তিনটি বাহির পথ জনসাধারণের প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য থাকছে। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো ও রাষ্ট্রীয় সম্মানপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।


বরাবরের মতো বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভেলিয়ন, শিশুকিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য একটি এবং সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকার এর জন্য একটি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এবার শিশুচত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে রাখা হয়েছে। তবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে প্রথমদিকে ‘শিশু প্রহর’ থাকছে না।


অন্যদিকে, লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়ে উদ্যানের এম্ফিথিয়েটারের পূর্বদিকে মেলার মূল প্রাঙ্গণে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। মোট ১২৭টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।


বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটি একটি প্যাভিলিয়ন নিয়েছে। এই প্যাভেলিয়নটি ইতোমধ্যে অনন্যরূপে সাজানো হয়েছে।


বইমেলা আরো প্রাণবন্ত ও জমজমাট করতে এবং লেখকদের উৎসাহ দিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে। অমর একুশে বইমেলা-২০২২-এর প্রচার কার্যক্রমের জন্য একাডেমিতে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুটি তথ্যকেন্দ্র রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের অবাধ তথ্য আদান-প্রদানের সুবিধার্থে বইমেলায় মিডিয়া সেন্টার রয়েছে তথ্যকেন্দ্রের উত্তরপাশে।

বর্তমান সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ধারণার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এটুআই’ কর্তৃপক্ষ বইমেলায় তাদের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, তথ্য কেন্দ্রের সর্বশেষ খবরাখবর এবং মেলার মূল মঞ্চের সেমিনার প্রচারের ব্যবস্থা করবে। এছাড়া থাকছে সার্বক্ষণিক ওয়াই-ফাই সুবিধা।

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার

পুরস্কার বিজয়ীরা হচ্ছেন- আসাদ মান্নান, বিমল গুহ (কবিতা); ঝর্ণা রহমান, বিশ্বজিৎ চৌধুরী (কথা সাহিত্য); হোসেন উদ্দিন হোসেন (প্রবন্ধ/গবেষণা); আমিনুর রহমান, রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী (অনুবাদ); সাধনা আহমেদ (নাটক); রফিকুর রশীদ (শিশু সাহিত্য); পান্না কায়সার (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা); হারুন-উর-রশিদ (বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণা); শুভাগত চৌধুরী (সায়েন্স ফিকশন/এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স), সুফিয়া খাতুন, হায়দার আকবর খান রনো (আত্মজীবনী/ভ্রমণকাহিনী) এবং আমিনুর রহমান সুলতান (লোককাহিনী)।


নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ জমা দেওয়ার আগেও যদি কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নাম প্রস্তাব করে তাহলে সেটি বিবেচনায় নেবে সার্চ কমিটি। 

মঙ্গলবার বিকালে চারজন সিনিয়র সাংবাদিকের সঙ্গে বৈঠকে সার্চ কমিটির সদস্যরা তাদের এই অভিমত জানান।


আজকের সভায় যোগ দিতে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সার্চ কমিটির প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে বৈঠকে অংশ নেওয়া সাংবাদিকেরা হলেন- চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম ও দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ। 


বৈঠক শেষে বেরিয়ে মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ও নঈম নিজাম বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ জমা দিতে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সার্চ কমিটির সময় রয়েছে। তারা তাড়াহুড়া করবেন না। সময়মতো সুপারিশ জমা দেবেন। এর মধ্যে এখনো নাম প্রস্তাব না করা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেউ প্রস্তাব জমা দিলে- তা বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটির সদস্যরা আমাদের বলেছেন।

এর আগে গত শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দফায় বেলা সোয়া ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত বিশিষ্টজনদের মতামত নেয় সার্চ কমিটি। বিশিষ্টজনদের মতামত নিতে পরের দিন রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালেও বৈঠক হয়। 


দু’দিনের সভায় অধ্যাপক, গণমাধ্যমের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তি, সরকারি সাবেক কর্মকর্তা এবং সামরিক বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা, পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন।


‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুসারে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে সার্চ কমিটি গঠন হয়। ৫ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সার্চ কমিটির পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাধারণভাবে নাম প্রস্তাবের আহ্বান জানানো হয়।


গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৮৭২ জনের।

একই সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন চার হাজার ৭৪৬ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১০২ জন।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৪১৭ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৭ লাখ তিন হাজার ৩০৯ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৭৪টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩৪ হাজার ১৭৫টি এবং নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৪৫৮টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৫টি।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩৪ জনের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন পুরুষ এবং ১৩ জন নারী। মৃত ৩৪ জনের মধ্যে রয়েছেন ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে চারজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে নয়জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে নয়জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে দুইজন রয়েছেন।

এতে আরও বলা হয়, মৃত ৩৪ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২১ জন, রাজশাহী বিভাগের দুইজন, রাজশাহী বিভাগের একজন, খুলনা বিভাগের দুইজন, বরিশাল বিভাগের চারজন, সিলেট বিভাগের দুইজন এবং রংপুর বিভাগের দুইজন রয়েছেন। মৃত ৩৪ জনের মধ্যে ২৮ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ছয়জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৬৮১ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৩১১ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৩৭ হাজার ৪০৮ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন তিন লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৫৮ হাজার ৬৯ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।


ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের চলমান উত্তেজনার মধ্যে ক্রেমলিনকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখার জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। হুমকি-ধমকি দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে থামাতে চাইছেন জো বাইডেন। ইউক্রেনে হামলা হলে রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের এত মরিয়া প্রচেষ্টার কারণ কী, তা নিয়ে একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।

প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা হলে রাজনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বাইডেন। তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে তাঁর শক্তিমত্তা ও সাহস নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর সর্বোপরি দেশটির মধ্যবর্তী নির্বাচনের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান গত রোববার আশঙ্কা জানিয়েছেন, রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে। সিএনএনের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপক জ্যাক ট্যাপারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুলিভান বলেন, যেভাবে রাশিয়া তাদের বাহিনী মোতায়েন করেছে, মহড়া চালিয়েছে, তাতে বলা যায়, শিগগিরই বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে তারা।


সুলিভান জানান, ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা ছোড়ার মধ্য দিয়ে হামলা শুরু হতে পারে। আর তাতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

সুলিভান বলেন, ‘রাশিয়া যদি অগ্রসর হয়, তবে আমরা ন্যাটোভুক্ত অঞ্চলগুলোকে সুরক্ষা দেব। এর জন্য রাশিয়াকে মূল্য চুকাতে হবে। আমরা নিশ্চিতভাবেই তা করে দেখাব। কারণ, ৩০ বছর আগের তুলনায় পশ্চিমা বিশ্ব এখন অনেক শক্তিশালী, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং অনেক বেশি ফলপ্রসূ। সামরিক পদক্ষেপের জন্য রাশিয়াকে শেষ পর্যন্ত উল্লেখজনকভাবে কৌশলগত মূল্য চুকাতে হবে।’


ইউক্রেনকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য দেশটিতে সরাসরি সেনা পাঠাবে না যুক্তরাষ্ট্র। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ইউক্রেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য দেশ নয়। সুতরাং রাশিয়া ও মার্কিন সেনাদের মধ্যে সরাসরি সংঘাত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে প্রতিবেশী দেশ রোমানিয়া ও পোল্যান্ডে সেনা মোতায়েন রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। একসময় আয়রন কারটেনের (লোহার পর্দা) মধ্যে থাকা পোল্যান্ড ও রোমানিয়া এখন ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্র। আয়রন কারটেন হলো ইউরোপকে দুটি আলাদা অঞ্চলে বিভক্তকারী রাজনৈতিক সীমারেখার নাম। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি থেকে ১৯৯১ সালে স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত এ আয়রন কারটেন ছিল।

পররাষ্ট্রনীতির ওপর প্রভাব

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা হলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক নীতিমালার ওপর প্রভাব পড়তে পারে। জনগণ নিজেরাই নিজেদের নেতাকে বেছে নেবে, এমন নীতির ওপর ভিত্তি করেই দশকের পর দশক ধরে পররাষ্ট্র নীতিমালা পরিচালনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। সিএনএনের প্রতিবেদনে আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ঘটনা চীনকে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুপ্রাণিত করবে। আর চীন এমনটা করলে বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। আর তা হবে ইউক্রেনে রুশ অভিযানের চেয়ে বড় যুদ্ধ। তবে ইউক্রেনে রুশ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রকে দেশের অভ্যন্তরীণ ধাক্কা সামলাতে হবে সবার আগে। যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়বে। আর তাতে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মধ্যবর্তী নির্বাচনে বাইডেন ও তাঁর ডেমোক্রেটিক পার্টির ওপর এর প্রভাব পড়বে।


গত রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ রাশিয়াকে ‘দ্রুত ও সন্দেহাতীতভাবে’ সাজা দেবে। তবে এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে পাল্টে দিতে পারে। আর তা বাইডেনের জন্য আরেকটি সংকট তৈরি করবে।

৩০ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো দুই বড় পারমাণবিক শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি এ ক্ষেত্রে রুশদের শাস্তি কিংবা হত্যার মতো পদক্ষেপ নেয়, তবে উত্তেজনা আরও বাড়বে। কংগ্রেসে কেউ কেউ আহ্বান জানিয়েছেন, ১৯৮০–এর দশকে আফগানিস্তান থেকে মস্কোকে তাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে অর্থায়ন করেছিল, সেই একই কায়দায় ইউক্রেনের বিদ্রোহীদেরও অর্থায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে জবাব দেওয়ার ক্ষমতা রাশিয়ার রয়েছে। বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিতে ব্যাঘাত ঘটানোর সক্ষমতাও রয়েছে দেশটির।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা হলে তেলের মূল্য বেড়ে যেতে পারে। আর তা যুক্তরাষ্ট্রের গাড়িচালকদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক হবে। গ্যাসের উচ্চ মূল্যের কারণে ইতিমধ্যে বাইডেনের জনপ্রিয়তা কমতে দেখা গেছে। আমেরিকান অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গ্যাসের গড় মূল্য ৩ দশমিক ৪৮ ডলার। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ১৯৮২ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি মুদ্রাস্ফীতির হার এটি।

মধ্যবর্তী নির্বাচনের ওপর প্রভাব

রিপাবলিকানরা ইতিমধ্যে বাইডেনকে দুর্বল ব্যক্তি হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে। প্রমাণ করতে চাইছে, ইউক্রেনে রুশ হামলা ঠেকাতে পুতিনকে রাজি করাতে পারছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, আফগানিস্তান থেকে তাড়াহুড়ো করে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘটনা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানানোর অনুপ্রেরণা পেয়েছেন পুতিন। ট্রাম্পের দাবি, তিনি হলে এ ধরনের পদক্ষেপ থেকে পুতিনকে বিরত রাখতে পারতেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁকে ভালো করে চিনি। তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আমরা একে অপরকে শ্রদ্ধা করি।’


ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাঁর ক্ষমতাকালীন প্রশাসনের মতো করে অন্য কোনো মার্কিন প্রশাসনই রাশিয়ার বিরুদ্ধে এতটা কঠোর হতে পারেনি।

ট্রাম্পের এসব বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইউক্রেনে রাশিয়া অভিযান চালালে বাইডেনের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানরা কেমন প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে বাইডেনকে দুর্বল ও অযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করে নিজেদের পক্ষে প্রচার চালানোর সুযোগ পাবে রিপাবলিকান শিবির। তারা বোঝাতে চাইবে, ট্রাম্পের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে ফেলেছে বিশ্ব।

শনিবার পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের সময় তাঁকে সতর্ক করেছেন বাইডেন। রাশিয়া যদি ইউক্রেনে আক্রমণ করে, তাহলে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তবে সিএনএনের প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে, বারবার দেওয়া এসব সতর্কতার কারণে বাইডেনের জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, পুতিন যদি এসব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে দেন, তখন বিতর্কের মুখে পড়তে পারেন বাইডেন। কিছু করতে না পারার অভিযোগ উঠতে পারে তাঁর বিরুদ্ধে।

করোনা মহামারিকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাস ও মৌলিক প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পরিস্থিতিকে বাইডেনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা হিসেবে উপস্থাপন করতে চায় রিপাবলিকানরা। এমন অবস্থায় ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা হলে বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রচারণার সুযোগ পাবে তারা।

বাইডেনের জনপ্রিয়তার ওপর প্রভাব

গত সপ্তাহে প্রকাশিত সিএনএন/এসএসআরএস প্রকাশিত এক নতুন জরিপে দেখা গেছে, বাইডেনের জনপ্রিয়তা কমে ৪১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেনে রুশ হামলা হলে সংকট আরও বাড়তে পারে। মার্কিন ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, যেসব প্রেসিডেন্ট এ ধরনের সংকটে পড়েছেন, তাঁরা প্রথম মেয়াদের মধ্যবর্তী নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন।

জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে সিএনএন পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৪৫ শতাংশ ডেমোক্রেটিকপন্থী ও ডেমোক্রেটিক–সমর্থক ভোটার ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বাইডেনকে আবারও দেখতে চান। ৫১ শতাংশ চান, অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হোক।

ট্রাম্পের জন্য এর চেয়ে ভালো খবর আর হতে পারে না। ৫০ শতাংশ রিপাবলিকানপন্থী ও রিপাবলিকান–সমর্থক ভোটার চান, ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে দল থেকে মনোনয়ন পান। রিপাবলিকানদের মধ্যে বিকল্প প্রার্থী চান ৪৯ শতাংশ মানুষ।

এমন অবস্থায় এখন বাইডেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো মিত্রদের ঐক্যবদ্ধ করতে সফল প্রচেষ্টাও চালান এবং ইউক্রেন আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে কঠোর শাস্তিও দেন, তারপরও তিনি ভোটারদের খুব একটা আকর্ষণ করতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে না। বরং পুতিন যদি শেষ মুহূর্তে এসে হামলা না করেন এবং ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনাদের সরিয়ে নেন, তাহলে মধ্যবর্তী নির্বাচনে বাইডেন প্রচার করতে পারবেন যে শক্তিমত্তার কারণে রাশিয়া পিছু হটেছে। তবে পুরোদমে হামলা না করলেও ইউক্রেনের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে চাইবেন পুতিন। আর তাঁর এমন পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র ও বাইডেনের মাথাব্যথার কারণ হয়েই থাকবে।


শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে নারীদের অংশগ্রহণে সমতা অর্জন হয়ে গেছে বা হচ্ছে, এ খবর পুরোনো। কিন্তু শুধু শিক্ষায় অংশগ্রহণেই নয়, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলেও এখন ছাত্রীরা এগিয়ে থাকছেন। উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলেও ছাত্রদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন ছাত্রীরা। শুধু পাসের হারেই নয়, ফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রেও এবার মেয়েরা এগিয়ে আছেন।

২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল আজ রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। বেলা ১১টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল হস্তান্তরের পর তিনি ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। পরে সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন শুধু এইচএসসি পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫৭।

ছাত্রছাত্রীদের ফলাফলের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষায় ছাত্রীদের পাসের হার ৯৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, যা গড় পাসের হারের চেয়েও বেশি। অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ, যা গড় পাসের হারের চেয়ে কম।

এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট ১১ লাখ ১৫ হাজার ৭০৫ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। অংশগ্রহণের দিক দিয়েও ছাত্রীরা এগিয়ে ছিলেন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রী ছিলেন ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৪, বাকিরা ছাত্র। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে পাস করেছেন ১০ লাখ ৬৬ হাজার ২৪২ জন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রী ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫২৯, আর ছাত্র ৫ লাখ ২০ হাজার ৭১৩।

অন্যদিকে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২২ জন, যাঁদের গড় নম্বর প্রতিটি বিষয়ে ৮০ থেকে ১০০–এর মধ্যে। তাঁদের মধ্যে ছাত্রী ৯৮ হাজার ৪০৩, আর ছাত্র ৮০ হাজার ১১৯।

শুধু এবারই ছাত্রীরা ভালো করেছেন তা নয়। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, পাসের হারে ছাত্রীরা এগিয়ে থাকছেন। ছাত্রীদের ভালো করার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞেরা বলে আসছেন, এখন পরিবারগুলোর মধ্যে আগের চেয়ে সচেতনতা বেড়েছে। এখন আগের মতো মেয়েদের আলাদা চোখে দেখা হয় না। আবার বাল্যবিবাহ বন্ধে সরকারের উদ্যোগ যেমন আছে, তেমনি উপবৃত্তিসহ বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করার চেষ্টাও আছে। তুলনামূলকভাবে পড়াশোনায় ছাত্রীরা যত্নবান বেশি। সবকিছুর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে পরীক্ষার ফলে।


২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশের সাধারণ ৯ টি শিক্ষাবোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে যশোর শিক্ষাবোর্ড প্রথম এবং কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে।


যশোর শিক্ষাবোর্ডে সবচেয়ে বেশি ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ এবং কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে।

এবারের পরীক্ষায় যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে মোট ১ লাখ ৩১ হাজার ৫শ’ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং ৩ হাজার ৩৩৭ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকে। অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে।

পাসের হারের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড। পাশের হার ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

আরো পড়ুনঃ শুধু পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি

কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে মোট ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৬৬ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তার মধ্যে ছাত্র ৫৩ হাজার ৩১ জন এবং ছাত্রী ৬৪ হাজার ৪৩৫ জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৫৯ জন শিক্ষার্থী। এই বোর্ডের অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২ হাজার ৯০৭ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ১১ হাজার ৬৮০ শিক্ষার্থী পাশ করেছে।


এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২ হাজার ৬২১ টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

স্বাভাবিক সময়ে গত বছরের এপ্রিলে এ পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়।


সূত্র : বাসস


 এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় নয় হাজার ১১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধু পাঁচটি এমন রয়েছে—যেখানে কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। আর, এক হাজার ৯৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে।

চট্টগ্রাম বোর্ডের দুটি, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের দুটি ও ময়মনসিংহ বোর্ডের একটি—মোট পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারেনি বলে জানা গেছে।


এবার সারা দেশে দুই হাজার ৬২১টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে শতভাগ পাস এসেছে—ঢাকা বোর্ডের এক হাজার সাতটির মধ্যে ১৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, রাজশাহী বোর্ডের ৭৫৯টির মধ্যে ১৬২টিতে, কুমিল্লা বোর্ডে ৪০৭টির মধ্যে ৭৫টিতে, যশোর বোর্ডে ৫৭৪টির মধ্যে ১১৬টিতে, চট্টগ্রাম বোর্ডে ২৬৭টির মধ্যে ১৬টিতে, বরিশাল বোর্ডে ৩৩০টির মধ্যে ৫৬টিতে, সিলেট বোর্ডে ২৯৯টির মধ্যে ৫৩টিতে, দিনাজপুর বোর্ডে ৬৬৭টির মধ্যে ৫৩টিতে, ময়মনসিংহ বোর্ডে ২৭৫টির মধ্যে ২৯টিতে, মাদরাসা বোর্ডে দুই হাজার ৬৯১টির মধ্যে এক হাজার তিনটিতে এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এক হাজার ৮৩৫টির মধ্যে ১৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

আরো পড়ুনঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সেকেন্ড টাইম’ ভর্তির পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী

আজ রোববার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন।


উচ্চ শিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে দ্বিতীয়বার শিক্ষার্থীকে ভর্তি করার সুযোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।  


এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে রোববার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ বন্ধে ভর্তিচ্ছুদের দাবির মধ্যেই ইতিবাচক মত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।


দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আমরা যদি একেবারে বৈশ্বিক পরিস্থিতি, বিশ্বমানের কথা চিন্তা করি তাহলে আসলে কোনো ‘বার’ থাকার কথা না। কিন্তু আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক করেছে একবারের বেশি না, আগে দুবার দেওয়া যেতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একবার দেওয়ার পর আরও সুযোগ ছিল। এখন সেই সুযোগ রাখা হচ্ছে না। এটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তারা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। 

আরো পড়ুনঃ শাহজালালে ভিসির পদত্যাগ আন্দোলন প্রত্যাহার

আমরা বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি ও ইউজিসির সঙ্গে কথা বলেছি। ‘আমরা মনে করি শিক্ষার্থীদের সুযোগ যদি বাড়াই তাতে তো অসুবিধা নেই। আপনি যে মেধার শিক্ষার্থী নেবেন আপনি তো সেই মেধার শিক্ষার্থী নিচ্ছেন। আপনি তো তার থেকে মেধার মান কমিয়ে নিচ্ছেন না। আপনি যদি একাধিক সুযোগ দিয়ে একই মেধার শিক্ষার্থীকে নেন তাহলে সেই ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আপত্তি থাকা উচিত না। আমরা যেমন কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে বয়সের যে বাধা ছিল সেটাও তুলে দিয়েছি। ’


তিনি বলেন, আমরা যারা বিশ্বে বিভিন্ন জায়গায় পড়ার সুযোগ পেয়েছি, বিভিন্ন বয়সে পড়েছি। সেখানে কোথাও কখনও বয়স, কতদিন মাঝখানে ব্রেক অব স্ট্যাডি আছে- এগুলোর কোনোটাই কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াইনি। আমাদেরও এক সময় হয়তো সেই জায়গায় যেতে হবে। এখন সেটা কি এখনই যেতে পারবো নাকি আরও কিছু সময় লাগবে সেটা হয়তো আমাদের বিবেচনার বিষয়। শিক্ষাকে সবার জন্য যেন আমরা যে কোনো পর্যায় থেকে যে কেউ একটা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পায় সেই সুযোগটা আমাদের করে দিতে হবে।   


এর আগে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ফলাফলের বিস্তারিত পরিসংখ্যান প্রকাশ করেন।


নির্বাচন কমিশন গঠনে অনুসন্ধান কমিটিতে (সার্চ কমিটি) নাম  দেবে না বিএনপি। সোমবার রাতে সমকালকে এ কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


তিনি বলেন, ইসি গঠনে অনুসন্ধান কমিটিতে নাম দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। এমন ইসি গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমরা একমত নই। নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে রয়েছি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এই ইসি গঠন প্রক্রিয়া জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। ২০১৮ সালের মতো আরেকটি কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। 


এর আগে রোববার বিকেলে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারের প্রস্তাবিত নামের তালিকা জমা দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আরও একদিন সময় বাড়ানো হয়। একই সঙ্গে সার্চ কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বিএনপির কাছেও নাম চেয়েছেন। 

আরো পড়ুনঃ বড় দল’ বিএনপির কাছেও নাম চায় সার্চ কমিটি

সার্চ কমিটির সভাপতির এ আহ্বানে বিএনপি নাম দেবে কিনা জানতে চাইলে বিএনপির এ অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন দলটির মহাসচিব। বিশিষ্টজনদের সঙ্গে রোববারের বৈঠকের শুরুতে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সার্চ কমিটিতে নাম জমা না দিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও একদিন সময় দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন। 

সার্চ কমিটি প্রধানের ঘোষণা অনুযায়ী, এখন ৩৯টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে বাকি ১৫টি সোমবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত নাম প্রস্তাবের সুযোগ পাবে। 


গত শুক্রবার প্রস্তাবিত নাম জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ৩০৯ ব্যক্তির নাম জমা পড়ে সার্চ কমিটিতে। নিবন্ধিত দুই ডজন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি ছয় পেশাজীবী সংগঠন এবং ব্যক্তি পর্যায় থেকে এসব নাম প্রস্তাব করা হয়। এসব নামসহ সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত যেসব নাম প্রস্তাব করা হবে, সেসব নামের তালিকা সার্চ কমিটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। 


এদিকে মঙ্গলবার সাড়ে ৪টায় সার্চ কমিটির পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। 


সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারের প্রস্তাবিত নামের তালিকা জমা দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আরও একদিন সময় বাড়িয়ে সার্চ কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বিএনপির কাছেও নাম চেয়েছেন।

রোববার বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে তিনি নাম জমা না দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও একদিন সময় দেওয়ার বিষয়ে কথা বলছিলেন।


সার্চ কমিটির বেঁধে দেওয়া সময় ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ২৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নামের সুপারিশ করেছে।


সার্চ কমিটি প্রধানের ঘোষণা অনুযায়ী, এখন ৩৯টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে বাকি ১৫টি সোমবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত নাম প্রস্তাবের সুযোগ পাবে। এতে করে বিএনপি চাইলে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তাদের নাম প্রস্তাব করতে পারবে।

এর আগে বিএনপি সার্চ কমিটিতে নাম প্রস্তাব করবে না বলে জানিয়েছিল। দলটির নেতারা বলেছিলেন, এ সার্চ কমিটিতে নাম দেওয়া ‘অর্থহীন’, কারণ তাদের বিশ্বাস, সার্চ কমিটি সরকারের ‘মর্জি মতই’ নাম প্রস্তাব করবে।


রোববার বৈঠকের শুরুতে সার্চ কমিটির সভাপতি আপিল বিভাগের বিচারপিত ওবায়দুল হাসান বলেন, যেসব দল নাম জমা দেয়নি তারা চাইলে সোমবার বিকাল ৫টার মধ্যে দিতে পারবে।

বিএনপিকে দেশের একটি বড় দল হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, “বিএনপি, সিপিবি, বাসদ- তারা এখনও নাম জমা দেয়নি, তারা যদি দিতে চান আগামীকাল ৫টার মধ্যে তাদের জন্য সময়টা বর্ধিত করলাম। আশা করি, তারা পজেটিভ রেসপন্স করবে।”

আরো পড়ুনঃ সরকারের সুবিধাভোগীরা নির্বাচন কমিশনে নয়

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করতে সার্চ কমিটি প্রস্তাবিত ব্যক্তিদের নামের তালিকা সংগ্রহ করছে।    


গত ৫ ফেব্রুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন’ এর আলোকে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।আইন অনুযায়ী, ইসি গঠনে নামের সুপারিশ চূড়ান্তের জন্য সার্চ কমিটির জন্য সময় ১৫ দিন।


গত শুক্রবার প্রস্তাবিত নাম জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ৩০৯ ব্যক্তির নাম জমা পড়ে সার্চ কমিটিতে। নিবন্ধিত দুই ডজন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি ছয় পেশাজীবী সংগঠন এবং ব্যক্তি পর্যায় থেকে এসব নাম প্রস্তাব করা হয়।

সবার সঙ্গে আলোচনা শেষে আইন অনুযায়ী যোগ্য বিবেচিতদের মধ্যে ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করবে সার্চ কমিটি। তাদের মধ্যে থেকে পাঁচজনকে বেছে নিয়ে রাষ্ট্রপতি গঠন করবেন ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন।


সেই ইসির ওপরই থাকবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভার।


আইন প্রণয়ন ও সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে এবারও শুরু থেকেই সমালোচনা করে আসছে বিএনপি। এবার আমন্ত্রণ পেয়েও দলটি রাষ্ট্রপতির সংলাপে যায়নি, সার্চ কমিটিতে নাম জমা দেয়নি।

নতুন ইসি নিয়োগের জন্য গঠিত সার্চ কমিটির সুপারিশ জনগণ ‘ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


ইসি গঠনে সার্চ কমিটির নামে সরকার ‘আওয়ামী খাস কমিটি’ গঠন করেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।


দলটির আরেক নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন মন্তব্য করেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই সার্চ কমিটি গঠনের নামে সরকার ‘নাটক’ করছে।


সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিরসনে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চায় ইউক্রেন। ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে এবং সীমান্তে সেনা মোতায়েন বিষয়ে জানাতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা। 

রোববার রাতে এ আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। খবর- বিবিসি।


বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সীমান্তে সেনা মোতায়েন সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাখ্যা চাওয়া হলেও তা উপেক্ষা করেছে রাশিয়া। ফলে রাশিয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা পেতে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বৈঠকে বসার অনুরোধ জানানো হয়েছে।


দিমিত্র কুলেবা জানান, ইউরোপের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থার (ওএসসিই) সদস্যরা নিরাপত্তা ইস্যুতে ভিয়েনা চুক্তিতে সই করেছে। ওই সংস্থার সদস্য রাশিয়াও। সে জন্য ভিয়েনা চুক্তি অনুসারে ইউক্রেন শুক্রবার রাশিয়ার কাছে সীমান্তে সেনা মোতায়েন বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দাবি করেছে।


তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া যদি ওএসসিই এলাকায় নিরাপত্তা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে, তা হলে তাদের অবশ্যই উত্তেজনা নিরসনে সামরিক স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে এবং সবার নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।’


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখ সেনা মোতায়েন করে কার্যত দেশটির তিন দিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছে রাশিয়া। স্যাটেলাইটের চিত্রে দেখা গেছে, এরই মধ্যে ইউক্রেনের তিন দিকে অর্থাৎ বেলারুশ, ক্রিমিয়া ও পশ্চিম রাশিয়ায় ব্যাপক সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে মস্কো। তবে দেশটিতে হামলা চালানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়ে আসছে রাশিয়া।

আরো পড়ুনঃ উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়াকে যে হুঁশিয়ারি দিল যুক্তরাষ্ট্র

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনা করছে। যে কোনো মুহূর্তে রাশিয়া দেশটিতে হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে ১২টিরও বেশি দেশ তাদের নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ তাদের দূতাবাসকর্মীদেরও সরিয়ে নিয়েছে।


তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘ভীতি’ ছড়ানোর সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনা করছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই।


ইউক্রেন ইস্যুতে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়ার ওপর কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।  ইউক্রেনে হামলা চালালে রাশিয়ার ওপর ‘ধ্বংসাত্মক’ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার ফোনালাপ থেকে ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো সমাধান না আসায় শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা ডেরেক চোলেট এই হুঁশিয়ারি দেন।


তবে ইউক্রেন সংকট নিরসনে এখনো কূটনীতিক সমাধান সম্ভব বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। 


এদিকে, ইউক্রেন সীমান্তের তিন দিকেই ঘিরে রেখেছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা ও ইউক্রেন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা, ইউক্রেনে খুব দ্রুত সময়ে হামলা চালাবে রাশিয়া।


এর মধ্যে ক্রিমিয়ায়, দুই দেশের সীমান্তবর্তী রাশিয়ার অংশ এবং উত্তরে বেলারুশে সেনা শক্তি বাড়িয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।


ইউক্রেইন এবং পশ্চিমা গোয়েন্দারা এ তিন এলাকাকে রণক্ষেত্র হিসেবে নজরে রাখছেন। এর প্রত্যেকটি এলাকাতেই রুশ সামরিক বাহিনীর অবস্থান পরিবর্তন চিহ্নিত করা হয়েছে।


যদি ইউক্রেনে আক্রমণ করা হয়, সেটি কোথা থেকে শুরু হবে তা স্পষ্ট নয়। তবে রাশিয়া ইউক্রেনের তিনটি পয়েন্টে বেশ চাপ সৃষ্টি করেছে। ক্রিমিয়ার দক্ষিণে, দুদেশের সীমান্তের অংশে ও বেলারুশের দক্ষিণে।


২০১৪ সালে রাশিয়া তাদের ভূখণ্ডে উপদ্বীপ ক্রিমিয়াকে যুক্ত করে। এই দ্বীপ এখন ইউক্রেনে হামলার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। তবে এটি নিশ্চিত নয় যে, মস্কো ক্রিমিয়া থেকে আদৌ ইউক্রেনে হামলা করবে কিনা, তবে সম্ভাবনা রয়েছে।


বৃহস্পতিবার রাশিয়া ও বেলারুশ যৌথ সামরিক মহড়াও শুরু করেছিল। এটি ইউক্রেনে হামলার আরও সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিল।


ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা সমাবেশকে কেন্দ্র করে বৈশ্বিক উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি করেছে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো। অসমর্থিত সূত্রের বরাতে আসন্ন যুদ্ধের খবর দিয়ে বড় বড় সংবাদ করেছে তারা। সীমান্তে সেনা মোতায়েন মস্কোর নিয়মিত মহড়ার অংশ হলেও সম্ভাব্য আক্রমণের তারিখ ঘোষণা দিয়েছে পশ্চিমারা। অস্ত্রের ঝনঝনানিতে যত না মানুষ উত্তেজিত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি সংবাদের হেডলাইনে আতঙ্কিত হয়েছে বিশ্ব। তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই একের পর এক গুজব প্রচার করেছে তারা। সর্বশেষ শুক্রবার ভুয়া তথ্য দিয়ে যুদ্ধের তারিখ প্রচার করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। যদিও শুরু থেকেই এসব খবর মিথ্যা বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া।


শুক্রবার ব্লুমবার্গ অসমর্থিত তথ্যের ভিত্তিতে এক প্রতিবেদনে জানায়, আগামী মঙ্গলবার নাগাদ সামরিক অভিযান শুরু হতে পারে। ডনবাস অঞ্চলে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে কিয়েভে হামলা হতে পারে। যদিও সেনা মোতায়েনের শুরু থেকে রাশিয়া বলে আসছে, তাদের হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ থেকে মনে হচ্ছে যুদ্ধ আসন্ন। খবর আরটি ও সিএনএনের।

এ সংবাদের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাকারোভা ওই সংবাদমাধ্যমের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, ইউক্রেনে মস্কোর আসন্ন হামলার খবরই রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় গুজব প্রচারের অংশ।


টেলিগ্রাম চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, হোয়াইট হাউসের বায়বীয় অভিযোগ আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য এই অঞ্চলে যে কোনো মূল্যে তাদের একটি যুদ্ধ দরকার, সেটি উস্কানি, গুজব বা হুমকির মাধ্যমে হতে পারে। আমেরিকার সামরিক-বেসামরিক ব্যবস্থাপনা এখন বহু মানুষের জীবন নেওয়ার মধ্য দিয়ে যাবে। বিশ্ব দেখছে তাদের সামরিকায়ন, ব্লুমবার্গের মাধ্যমে এই প্রোপাগান্ডার সঙ্গে তার সংযোগ করছে তারা।


জাকারোভা বলেছেন, যা ঘটছে তার যথাযথ মূল্যায়ন ছাড়াই রাশিয়ার বিরুদ্ধে গুজব ছড়াতে ব্যস্ত রয়েছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা।


এর আগে শুক্রবার ব্লুমবার্গের ওই খবর প্রকাশিত হয়। ২৪ মিনিট ধরে চলার পর ওই সংবাদের শিরোনাম পরিবর্তন করে তারা। পরে সেখানে উল্লেখ করে, ইউক্রেনে আক্রমণ করতে যাচ্ছে রাশিয়া। যদিও শেষে ওই নিউজ প্রত্যাহার করে নেয় কর্তৃপক্ষ এবং বাধ্য হয়ে ক্ষমা চায় তারা।


এর আগে ডের স্পাইজেল ও পলিটিকোর ন্যাটসেক ডেইলির সংবাদেও হামলার তারিখ প্রকাশ করা হয়েছিল। মূলত জানুয়ারি থেকে কয়েক দফায় এই সংবাদমাধ্যমগুলো যুদ্ধ শুরুর তারিখ প্রকাশ করেছে। তবে তার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। তারা বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্রের বরাতে এসব খবর প্রকাশ করে।


গত বছরের শেষ দিকে ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা মোতায়েনের পর মস্কোর বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসনের পরিকল্পনার অভিযোগ তুলে আসছে পশ্চিমারা। তবে রাশিয়া শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার অনুমতি দেবে না তারা। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে কখনও ওই জোটের সদস্য হতে না পারে দেশটি তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের লিখিত প্রতিশ্রুতি চায় মস্কো। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র জানায়, যে কোনো মুহূর্তে রাশিয়া হামলা চালাতে পারে।


আইপিএল নিলামের (IPL 2022 Auction, Day 1) প্রথম দিনের শেষে ৭৪ জন ক্রিকেটার দল পেয়েছিলেন। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মিলিত খরচ হয়েছিল ৩৮৮ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। সবচেয়ে দামে বিক্রি হয়ে খবরে শিরোনামে এসেছিলেন কিশান (Ishan Kishan)। ১৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকায় তাঁকে ফের কিনে নিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। অন্যদিকে চেন্নাই সুপার কিংস নিলাম যুদ্ধে জিতে ফের দলে নিয়েছে দীপক চাহারকে (Deepak Chahar)।


চাহারকে চেন্নাই দিচ্ছে ১৪ কোটি টাকা। ঘটনাচক্রে তিনি ক্যাপ্টেন ও কিংবদন্তি এমএস ধোনির থেকে পাচ্ছেন ২ কোটি টাকা বেশি। অন্যদিকে ঈশান প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছেন আইপিএলের সবচেয়ে সফল ক্যাপ্টেন রোহিতকে। 'হিটম্যান'কে নীতা আম্বানির ফ্র্যাঞ্চাইজি ১৬ কোটি টাকায় রিটেইন করেছে। সেখানে 'ঘরের ছেলে' ঈশানকে ফেরাতে মুম্বই খরচ করল ১৫.২৫ কোটি! গতকাল সবচেয়ে দামি 'আনক্যাপড' (দেশের হয়ে যিনি খেলেননি) প্লেয়ার হয়েছেন আবেশ খান (Avesh Khan)। ১০ কোটি টাকায় দলে নিয়েছে লখনউ সুপার জায়ান্টস। 


মুস্তাফিজুর রহমানের দল দিল্লি ক্যাপিটালসে গেলেন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ইয়াশ ঢুল। ২০ লাখ ভিত্তিমূল্যের এ খেলোয়াড়েরর পেছনে তাদের খরচ করতে হয়েছে ৫০ লাখ রুপি।

কদিন আগেই ভারতকে যুবা বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন ঢুল। তিনিই এবার ফিজের সতীর্থ হলেন। ঢুলকে দিল্লি কিনলেও তার সঙ্গে বিশ্বকাপ জেতা ভিকি ওস্তওয়ালের প্রতি কেউ আগ্রহ দেখায়নি। ফলে নিলামে নাম উঠলেও অবিক্রীত রয়েছেন তিনি।


মুস্তাফিজুর রহমানের রাজস্থান রয়্যালস সতীর্থ চেতান সাকারিয়াকে কিনল দিল্লি ক্যাপিটালস। ৫০ লাখ ভিত্তিমূল্যের এ পেসারকে ৪ কোটি ২০ লাখ রুপি দিয়ে দলে নিয়েছে তারা। মুস্তাফিজও গিয়েছেন দিল্লিতে। ভিত্তিমূল্যে মুস্তাফিজুর রহমানকে কিনেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। তার দাম ধরা হয়েছিল ২ কোটি রুপি। সেই দামেই তাকে কিনেছে দিল্লি।

নিলামের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার এইডেন মারক্রামকে ২ কোটি ৬০ লাখ রুপিতে দলে নিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। প্রথম দিনের শুরুতেই নিলামে উঠেছিল শিখর ধাওয়ানের নাম। গত মৌসুমে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। এবার তাকে আর ধরে রাখেনি তারা। তাকে এ আসরে ৮ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে কিনেছে পাঞ্জাব কিংস। তার ভিত্তিমূল্য ছিল ২ কোটি রুপি।

দামি অলরাউন্ডারদের মধ্যে সবার শীর্ষে ইংল্যান্ডের লিয়াম লিভিংস্টোন। তাকে ১১ কোটি ৫০ লাখ রুপি দিয়ে কিনেছে পাঞ্জাব কিংস। নিলামের প্রথম দিন শ্রীলঙ্কার হাসারাঙ্গাকে ১০ কোটি ৭৫ লাখে কিনেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ভিত্তিমূল্যে শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার দাম ধরা হয়েছিল এক কোটি রুপি। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে কিনতে ১০ কোটি ৭৫ লাখ রুপি খসাতে হয় বেঙ্গালুরুকে।


মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রয় বিভাগের অনেক কর্মীর সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি মাস থেকে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি কার্যকর হবে।

সূত্রের বরাত দিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্লুমবার্গ। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের ২৭০টি স্টোর রয়েছে। স্টোরের অবস্থান ও ভূমিকা অনুযায়ী ২ থেকে ১০ ভাগ বেতন বাড়ানো হতে পারে। বিক্রয় বিভাগের কর্মচারীরা এ সুবিধা পাবে। এর মধ্যে জিনিয়াস বারের টেকনিক্যাল স্টাফরাও আছে। এছাড়া কর্মঘণ্টার ভিত্তিতে কাজ করা জ্যেষ্ঠ কর্মীরাও এ সুবিধা পাবেন। তবে তাসব কর্মীর ক্ষেত্রে এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।


অ্যাপল তাদের খুচরা বাজারের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করছে। গত বছর অ্যাপল স্টোরে দায়িত্বপালরত কর্মীদের এককালীন ভাতা দিয়েছিল বলে খবর বেরিয়েছিল।


কর্ণাটকে হেনস্তার শিকার হওয়া বোরকা ও হিজাব পরা মুসলিম ছাত্রীর প্রতিবাদী অবস্থান ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। মুসকান খান নামের ওই ছাত্রীর সাহসীকতায় মুগ্ধ হয়েছেন সবাই। 

সম্প্রতি হিজাব পরে কয়েকজন ছাত্রীকে স্কুলে ঢুকতে না দেওয়া নিয়ে সেখানে সৃষ্টি হয় বিক্ষুদ্ধ পরিস্থিতির। গত মঙ্গলবার উগ্র হিন্দত্ববাদীদের ভয় উপেক্ষা করে হিজাব পরে কর্ণাটকের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হন মুসকান নামের ওই ছাত্রী।  প্রতিষ্ঠানটিতে প্রবেশ করার পর ওই ছাত্ররা তাকে ভয়-ভীতি দেখানোর চেষ্টা করে। 


কিন্তু মুসকান একা থাকা স্বত্ত্বেও সেই ছাত্রদের সামনে প্রতিবাদ করে। উগ্রপন্থীরা নানা স্লোগানে তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ছাত্রী ভড়কে না গিয়ে উল্টো সাহসী এক প্রতিবাদ করেছেন। ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন তিনি।

বিবিসিকে মুসকান খান বলেন, আমার পরিবারের সবাই হিজাব পরে। ছোটবেলা থেকে হিজাব পরতে পরিবার থেকেই বলা হয়েছে। হিজাব আমার কাছে আত্মমর্যাদার প্রতীক।


সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে মুসকান বলেন, আমি তাদের ধর্মান্ধতায় বিস্মিত হয়েছিলাম। তারা অনেকজন ছিল। আক্রমণ করার মতো করে তারা আমাকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছিল। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম যেন আমাকে সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেন। সেই সময় আমার মুখ থেকে আল্লাহু আকবর শব্দটি বেরিয়ে আসে। আমি বললাম আল্লাহু আকবার। কারণ আমি ভয় পেয়েছিলাম। ভয় পেলে আমি আল্লাহর নাম নিই। আল্লাহর নাম নিলেই আমার সাহস বেড়ে যায়।


মুসকানের ওই ভিডিওটি বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে।  মুসকানের এ সাহসিকতায় সবাই মুগ্ধ হলেও এ স্লোগানের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে বলে কয়েকটি ভারতীয় মিডিয়ায় বলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে মুসকান বলেন, আমি কোনো সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে ‘আল্লাহু আকবর’ বলিনি। আমি হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছি না।


ঘটনার বিবরণ দিয়ে মুসকান জানান, ওই দিন প্রতিদিনের মতোই হিজাব ও বোরকা পরে তিনি কলেজে যান। তবে কলেজের প্রবেশপথে একদল ব্যক্তি তাকে থামায়। তারা বোরকা ও হিজাব খুলে তাকে কলেজে প্রবেশ করতে বলে।


তার ভাষায়, আমি রেগে তাদের পাশ কাটিয়ে কলেজের পার্কিং লটের দিকে চলে যাই। আমি রাগে লাল হয়ে গিয়েছিলাম। তারা আমাকে হিজাব খুলতে বলার সাহস করল কীভাবে।


সামনে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে কী করবেন জানতে চাইলে মুসকান বলেন, ‘আমি অবশ্যই ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’ বলব।’


১৯ বছর বয়সী মুসকান ব্যবসায় শিক্ষায় দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। মুসকান নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মতো পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চান।

তবে চারপাশে এমন অস্থিরতার মধ্যে মানসিক শান্তিতে থাকা কঠিন বলে জানান তিনি।


মুসকান বলেন, ভিডিওটি ছড়িয়ে যাওয়ার পর আমাকে শেরনি (বাঘিনী) ও আরও অনেক নামে ডাকা হয়েছে। সত্যি বলছি, আমি এর কিছুই চাই না। আমি শুধু পড়াশোনা করতে চাই। আমি মানুষের কাছে আমার অবস্থান স্পষ্ট করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। হিজাব আমার পরিচয়, আমি এটা পরতে পছন্দ করি, এটা আমার সম্মানের প্রতীক।


চালককে এক বছর আত্মগোপনে থাকার পরামর্শ দেন গাড়ির মালিক


কক্সবাজারের চকরিয়ায় বাবার শ্রাদ্ধের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেপরোয়া গতির পিকআপের চাপায় পাঁচ ভাই নিহত হওয়ার ঘটনায় চালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।


র‌্যাব জানায়, দুই বছর ধরে গাড়ি চালালেও পিকআপ ভ্যানের চালক সাইফুলের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। চার বছর ধরে গাড়িটিরও ফিটনেস এবং তিন বছর ধরে রুট পারমিট নেই।

ঘন কুয়াশার মধ্যে লাইসেন্সহীন চালক বেপরোয়া গতিতে পিকআপ চালানোয় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল তাঁদের বলেন, ঘটনার দিন চকরিয়া থেকে কক্সবাজারে সবজিবোঝাই পিকআপ নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। রাস্তায় ঘন কুয়াশা সত্ত্বেও তিনি দ্রুত সবজি পৌঁছে দিতে ৬৫-৭০ কিলোমিটার গতিতে পিকআপ চালাচ্ছিলেন। ঘন কুয়াশা ও অতিরিক্ত গতির কারণে মালুমঘাট বাজারের নার্সারি গেটের সামনে রাস্তা পার হওয়ার জন্য অপেক্ষারত পাঁচ ভাইকে চালক সাইফুল দূর থেকে দেখতে পাননি। কাছাকাছি এসে দেখলেও গতি বেশি থাকায় তিনি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। গতি এতই বেশি ছিল যে তিনি ব্রেক করলেও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি প্রায় ১০০ ফুট সামনে চলে যায়।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, দুর্ঘটনার সময় পিকআপ ভ্যানের মালিক মাহমুদুল করিমের ছেলে তারেক ও ভাগ্নে রবিউল গাড়িতে ছিলেন। চালক পিকআপ থেকে নেমে নিহতদের দেখতে এলেও মালিকের ছেলে তারেকের নির্দেশে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। ঘটনার পরপরই সাইফুলকে ডেকে তারেক বলেন, এখানে না থেকে পালানো উচিত। আহতদের হাসপাতালে না নিয়ে তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে একটি বাজারে এসে মালিক মাহমুদুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন সাইফুল। মালিক তাঁকে পিকআপটি কোনো স্টপেজে রেখে লোকাল বাসে করে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন।

খন্দকার মঈন বলেন, মালিকের নির্দেশনা অনুযায়ী সাইফুল ডুলাহাজারায় পিকআপ ভ্যান রেখে বাসে করে চকরিয়ায় গিয়ে মালিকের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় পিকআপের মালিক মাহমুদুল তাঁকে অন্তত এক বছর আত্মগোপনে থাকার পরামর্শ দেন। মালিকের পরামর্শে প্রথমে তিনি বান্দরবানের লামার রাবার বাগানে আত্মগোপনে যান। পরে জানাজানির ভয়ে ঢাকায় আসেন। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।


সাইফুলের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই জানিয়ে আল মঈন বলেন, লাইসেন্স ছাড়া দুই বছর ধরে তিনি পিকআপ ভ্যান, চাঁদের গাড়ি ও তিন টন ট্রাকসহ নানা ধরনের গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এর আগে তিনি বান্দরবানের লামায় রাবার বাগানে চাকরি করতেন। সর্বশেষ তিনি পিকআপ ভ্যানটি সাত দিন ধরে চালাচ্ছিলেন। এতে তিনি দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি পেতেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ২০১৬ সালে মাহমুদুল পিকআপ ভ্যানটি কেনেন। তিনি সবজি পরিবহনের ব্যবসা করেন। চকরিয়ার সবজির আড়ত থেকে কক্সবাজার সদর ও মহেশখালী এলাকায় সবজি সরবরাহ করতেন তিনি। তাঁর ছেলে তারেক সবজি সরবরাহ তদারক করেন, ভাগ্নে রবিউল তারেকের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। ঘটনাটি পরিকল্পিত কি না, জানতে চাইলে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে সাইফুল দাবি করেছেন, নিহত ব্যক্তিদের কেউ বা তাঁদের পরিবারের কোনো সদস্য তাঁর পূর্বপরিচিত নন। মালিকের সঙ্গে এই পরিবারের কোনো পরিচয় আছে কি না, সাইফুল বলতে পারেননি।

পিকআপের মালিক, তাঁর ছেলে তারেক ও ভাগ্নে পলাতক জানিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি যদি মনে করেন ঘটনায় আর কারো সংশ্লিষ্টতা বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে, তাহলে তিনি বিষয়টি দেখবেন।


প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিকআপের চালক সাইফুল পাঁচ ভাইকে গাড়িচাপা দেওয়ার সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা। তিনি বলেন, তাঁর কাছ থেকে পিকআপের চাবি উদ্ধার করা হয়েছে।










নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে দলীয় সরকারের সুবিধাভোগী ও রাজনৈতিক দলের চিহ্নিত ব্যক্তিদের বাদ রাখতে সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটিকে পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্টজন। তারা সবার কাছে আস্থাভাজন কমিশন গঠনের বিষয়ে জোর দিয়েছেন, যারা ভালো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির কাছে সার্চ কমিটির নামের তালিকা পাঠানোর আগে তা জনসমক্ষে প্রকাশের প্রস্তাব দিয়েছেন।


গতকাল শনিবার সুপ্রিম কোর্টের জাজেস মিলনায়তনে সার্চ কমিটির সঙ্গে দুই দফা বৈঠকে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন বিশিষ্টজন। নতুন ইসিতে নারী, সংখ্যালঘু ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের রাখার পরামর্শও এসেছে কয়েকজনের কাছ থেকে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন কমিশনার বাছাইয়ের লক্ষ্যে গতকাল দুই দফায় শিক্ষক, আইনজীবী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, অধিকারকর্মীসহ ২৫ জনের সঙ্গে বৈঠক করে সার্চ কমিটি।


প্রথম পর্বে সকাল সোয়া ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা এবং দ্বিতীয় পর্বে দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত বৈঠক হয়। সার্চ কমিটির প্রধান ও আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বিশিষ্টজন সার্চ কমিটির কাছে পাঁচটি বিষয় প্রাধান্য দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপিসহ যেসব রাজনৈতিক দল সার্চ কমিটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে এখনও মতামত দেয়নি, তাদের এ প্রক্রিয়ায় আনার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এই বিশিষ্টজন বলেছেন, নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করতে হলে সার্চ কমিটিকে যোগ্য এবং বিতর্কমুক্ত ব্যক্তিদের দিয়ে ইসি গঠন করতে হবে। প্রথম বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, ফিদা এম কামাল, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাবেক বিচারপতি মুনসুরুল হক চৌধুরী, ব্যরিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান, নির্বাচন কমিশন আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহ্‌দীন মালিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. মাকসুদ কামাল, অধ্যাপক ড. বোরহানউদ্দিন খান, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, এশিয়াটিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মাহফুজা খানম, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ ও ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান।


দ্বিতীয় বৈঠকে অংশ নেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ, জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী মোজাম্মেল বাবু, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, এনটিভির বার্তাপ্রধান জহিরুল আলম ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক স্বদেশ রায়। এ ছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।


সার্চ কমিটির সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সাচিবিক সহায়তা দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।


বৈঠক শেষে আলী ইমাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, দলীয় সরকারের সময় বিশেষভাবে সুবিধাভোগী কোনো ব্যক্তি যাতে নির্বাচন কমিশনে স্থান না পায়, সে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপি রাজপথে দাবি-দাওয়া আদায়ে আন্দোলন করবে, সেটা তাদের অধিকার। তবে তারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে না বসে ঠিক করেনি। এখন সার্চ কমিটির সঙ্গে তাদের বসা উচিত। আবার বিএনপির সঙ্গেও কথা বলতে হবে সার্চ কমিটিকে।


অধ্যাপক মাহফুজা খানম বলেন, সার্চ কমিটি যে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে, তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হতে হবে- তারা যেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হন। আমলা বা যে কোনো পেশা থেকে নাম আসতে পারে। তবে তাদের স্বচ্ছ ও সৎ থাকতে হবে। অর্থের মোহ যেন তাদের না থাকে।


বিচারপতি মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে তারা যেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন- এটিই সর্বাগ্রে আলোচনা হয়েছে। সবাই এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।


এ. কে. আজাদ বলেন, সার্চ কমিটিকে ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে হবে। রাষ্ট্রপতি সেখান থেকে ৫ জনকে নিয়ে ইসি গঠন করবেন। তাই সার্চ কমিটির দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের অবশ্যই যোগ্য ও বিতর্কমুক্তদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে হবে। এর আগে নামগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে।


অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বৈঠকে আমরা প্রত্যেকে আলাদাভাবে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। তার মধ্যে বেশিরভাগ বলেছেন, যারা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পাবেন তারা যেন আগের কোনো সরকারের আমলে বিশেষ সুবিধাভোগী না হন। বিশেষ করে এ নির্বাচন কমিশনে যারা আসবেন, তাদের যেন অবশ্যই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার মতো একটি মানসিকতা থাকে, সাহসিকতা থাকে, ব্যক্তিত্ব থাকে।


তিনি বলেন, 'অনুসন্ধান কমিটি মন দিয়ে সবার কথা শুনেছে। এখন আমাদের কথা কতটুকু রাখবে, সেটি নাম প্রকাশ করার পর বোঝা যাবে। তবে আমরা (প্রথম বৈঠক) কেউ কোনো নাম প্রস্তাব করিনি। আমরা শুধু বলেছি- কীসের ভিত্তিতে নেওয়া উচিত বা উচিত না।'


মোজাম্মেল বাবু বলেন, রাজনৈতিক বিভাজনের এই সময়ে শতভাগ বিতর্কমুক্ত নির্বাচন কমিশন গঠন কঠিন। তবুও চেষ্টা করতে হবে কোনো বিতর্কিত লোক যেন কমিশনে না আসে। যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে তাদের নাম যেন কয়েক দিন আগেই গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এতে নামগুলো নিয়ে জনগণের প্রতিক্রিয়া জানা যাবে।

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে সেটা যেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, সৎ এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হয়। নির্বাচন কমিশন গঠনে যারা থাকবেন; ব্যক্তি বাছাইয়ে যেন এ কাজগুলো তারা করেন।


সাইফুল আলম বলেন, 'সার্চ কমিটি যে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে, তারা যেন সাহসী, সৎ, যোগ্য এবং নির্লোভ ব্যক্তি হন। যারা আস্থার জায়গায় আছেন তাদের নাম যেন প্রস্তাব দেওয়া হয়। এমনভাবে নতুন কমিশন গঠন করা হোক, যেন কমিশন গঠন হওয়ার পর কমিশনারদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব না থাকে।'


ড. গোলাম রহমান বলেন, বিএনপি আলোচনায় না গিয়ে বাইরে থেকে সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করছে। কিন্তু বাইরে থেকে সমালোচনা করলে তা গ্রহণযোগ্য হয় না। তাই আমরা বলেছি, তাদের যেন এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, আমি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকেও বৈঠকে বলেছি, আপনি উদ্যোগ নেন তাদের (বিএনপি) নিয়ে আসার জন্য। তারা অন্তত এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হোক।


শ্যামল দত্ত বলেন, আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারে এমন একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দরকার। এ ক্ষেত্রে যে কোনো নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভিকটিম হয় সংখ্যালঘুরা। তাই আমরা বলেছি তাদের থেকে প্রতিনিধি নিতে; গণমাধ্যম এবং সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠী থেকে প্রতিনিধি নিতে।


আবেদ খান বলেন, বিভক্ত রাজনীতির পরিবেশে একতা তৈরি করা একেবারে মুশকিল। সমাজ ও রাজনীতির একটি অংশ যখন এ প্রক্রিয়ার বাইরে, তখন সার্চ কমিটির দায়িত্ব জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা তালিকা প্রকাশ করা। যাদের তালিকা করা হবে তাদের নাম যেন অন্তত কয়েক দিন আগে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ সেটা দেখতে পারে এবং তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে তা জানাতে পারবে।


পুলিশ ও প্রশাসনে না গিয়ে বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাহিত্যিক এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে ১০ জনের নাম রাখার জন্য সার্চ কমিটিকে আহ্বান জানিয়েছেন- উল্লেখ করে আবেদ খান বলেন, গণমাধ্যম থেকেও দু-একজনকে রাখার জন্য বলেছি। কারণ গণমাধ্যম নির্বাচন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত কাছ থেকে দেখে।


বৈঠক সূত্র জানায়, নাম প্রকাশের ব্যাপারে সার্চ কমিটিও ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে।

বৈঠকে যারা অংশ নেননি: আমন্ত্রণ পেলেও করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি, দেশের বাইরে থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ১১ জন বৈঠকে অংশগ্রহণ করেননি। তারা হলেন- (প্রথম বৈঠক) সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন।


দ্বিতীয় বৈঠকে আমন্ত্রিতদের মধ্যে ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন (দেশের বাইরে), চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন অংশ নেননি।


তালিকায় তিন শতাধিক নাম: মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, একই নাম একাধিক তালিকায় আছে। তবে প্রাথমিকভাবে ৩২৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ১৩৬টি, পেশাজীবীদের কাছ থেকে ৪০, ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে ৩৪ এবং ই-মেইলসহ অন্যান্য পর্যায় থেকে ৯৯টি নাম এসেছে।


বৈঠকেও তালিকা: ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বৈঠকে অংশ নিয়ে আটজনের নাম প্রস্তাব করেছেন। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেনের নাম প্রস্তাব করেছেন। আর নির্বাচন কমিশনার হিসেবে প্রস্তাব করেছেন সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া, সাবেক সচিব শওকাত আলী, খালেদ শামস, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও সাবেক আইন সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম। এ ছাড়াও বৈঠকে সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও সাংবাদিক স্বদেশ রায়ের নামও বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়েছে।


আজ দ্বিতীয় দিনের বৈঠক: পেশাজীবী ও বিশিষ্টজনের সঙ্গে আজ সার্চ কমিটির দ্বিতীয় দিনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আজ ২০ জনকে বৈঠকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে বিকেল সাড়ে ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস কনফারেন্স মিলনায়তনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।


আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব,) সাখাওয়াত হোসেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক, আব্দুল মোবারক, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, কবি মহাদেব সাহা ও প্রজন্ম একাত্তরের সভাপতি আসিফ মুনীর।


রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেন। পরদিন ওই কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যার ধারাবাহিকতায় কমিটির এ বৈঠক চলছে। 

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget