মো. তৌহিদ এলাহী : শনিবারের সংঘর্ষে পাঁচজনের নয়, মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। বিজিপির পাঁচজনের দাবি ঠিক নয়। সোমবার একথা জানালেন পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকে একহাত নিলেন বিধানসভা নিয়ে এত আগে থেকে জল্পনা করার জন্য। এনডি টিভি বাংলা
তৃণমূলনেত্রী বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন, গেরুয়া শিবির থেকে ভুল খবর ছড়ানো হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করলেন, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বিজেপি।
গত শনিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে বসিরহাট হাসপাতালে তিনটি মৃতদেহর সন্ধান মেলে। বিজেপির নেতারা দাবি করেন, তার মধ্যে দু’জন তাঁদের কর্মী। তৃণমূল জানায় তৃতীয় ব্যক্তি তাঁদের দলীয় কর্মী। দুই বিবদমান দলের পক্ষ থেকেই দাবি করা হয় তাদের একাধিক কর্মীদের ওই দিনের সংঘর্ষের পরে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
শনিবারের ঘটনা নিয়ে পুলিশ ও জেলা প্রসাসন মুখে কুলুপ এঁটেছে। কতজন মারা গিয়েছেন, সে ব্যাপারেও কিছু বলা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ওরা (বিজেপি) বলছে পাঁচজন মারা গিয়েছে। ওরা মিথ্যে বলছে। আমি দেখেছি এক বিজেপি নেতা টিভিতে বলছে, তিনজন নিখোঁজ। যদি তাই হয়, তাহলে তাঁদের নাম, ঠিকানা তোমরা বলছ না কেন?”
বিজেপির পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকেও একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। সন্দেশখালিতে কতজন মারা গিয়েছেন, এব্যাপারে বিজেপি তাদের মিথ্যে দাবি ছড়ানোর জন্য সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
সাংবাদিকদের সামনে এব্যাপারে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা যা বলছে আপনারা তাই লিখছেন। আপনার কী করে লিখলেন চার-পাঁচজন মারা গিয়েছে? আপনারা বিজেপি নেতাদের দাবিকে খতিয়ে দেখছেন না। আমি জানি বিজেপি আপনাদের বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আমি জানি রামদেবের কাছ থেকে কত লোক টাকাপয়সা পাচ্ছে। আমি সব জানি।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘নির্বাচনের পরে কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে রাজ্যে। এবং সেটাও ঘটেছে বিজেপির জন্যই। ওরা নিজেদের ভগবান ভাবতে শুরু করেছে। কিন্তু মনে রাখবেন, আমরা সবটা নিয়ন্ত্রণ করেছি।”
মমতা দাবি করেন, ‘‘আমাদের রাজ্য ভারতের সব রাজ্যের থেকে সেরা। জাতীয় পর্যায়ে আমাদের পারফরম্যান্স সেরা। এবং আমি শিউরে উঠি যখন দেখি কোনও কোনও জাতীয় চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে বাংলার মানুষ পাইপ গান ও স্টেন গান নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এসবই করা হচ্ছে বাংলার বদনাম করতে।”
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির উত্থানের পরে যেভাবে এখন থেকে বিধানসভা ভোট নিয়ে জল্পনা চলছে তার জন্য সংবাদমাধ্যমকে একহাত নেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘ভোট এখনও দু’বছর দূরে। লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। আপনারা ভুল খবর ছড়াচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গকে অপমান করবেন না। অন্যদেরও করতে দেবেন না। অন্য রাজ্যে এমনটা হয় না। তামিলনাডু, ওড়িশা, বিহার বা অন্য রাজ্যের সংবাদমাধ্যম এমন করে না।”
২০০৯ লোকসভায় বাম আমলে তৃণমূলের উত্থানের সঙ্গে অনেক এবারের লোকসভায় বিজেপির জয়কে তুলনা করছেন, এতে অসন্তুষ্ট মমতা বলেন, ‘‘তখনকার (২০০৯) আর এখনকার সময়ে অনেক ফারাক। ২০০৯ সালে নেতাই, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটছিল। কৃষক আন্দোলন হয়েছিল।”
(amadershomoy)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন