২১শে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশের রাজনীতিকে কোথায় নিয়ে গেল |
ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১শে অগাস্টে আওয়ামী লীগের সমাবেশে দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে যখন গ্রেনেড বিস্ফোরণ শুরু হয় তখন মঞ্চের কাছেই ছিলেন নাসিমা ফেরদৌস। মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের সময়ে গুরুতর আহত হয়ে জ্ঞান হারিয়েছিলেন তিনি।
ওই সময়ের ঘটনা মনে করে বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "দেখলাম মানুষ পাখির মতো শুয়ে পড়লো। পড়ে গেলো। আমার পায়ের শক্তি নাই যে উঠে দাঁড়াবো। দ্বিতীয় শব্দ হলো, তখন মনে হলো পেটের মধ্যে কিছু ঢুকে গেলো। পেটিকোটের ফিতা ছিঁড়ে গেলো। পাগুলো টুকরো টুকরো হয়ে চলে যাচ্ছে। চারদিকে তাকিয়ে দেখি রক্ত আর রক্ত। লাশ আর লাশ।"
এ ঘটনার জন্য তিনি তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারকে দায়ী করেন।
ওই ঘটনায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন আর আহত হন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলটির বহু নেতাকর্মী। শুরু থেকেই এ হামলার জন্য তখনকার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকারকেই দায়ী করে আসছিলেন শেখ হাসিনা।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে এ ক্ষোভ নাসিমা ফেরদৌসের একার নয়। বরং শেখ হাসিনা নিজেও বহুবার এটি বলেছেন এবং তার দলের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মীই তা বিশ্বাস করেন।
দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলছেন, তার ভাষায়, ওই ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দেয়াল তৈরি করেছে যা পরে আরও পোক্ত হয়েছে নানা ঘটনায়।
"এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য যে তারা এটা করেছে। আদালতের রায়ে তা প্রমাণিত হয়েছে। এতগুলো ন্যক্কারজনক ঘটনার পরে কিন্তু বিএনপি নেত্রীর ছোটো ছেলে যখন মারা যান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু দরজা বন্ধ করে তারা রাজনীতির যে দেয়াল তারা তৈরি করেছিলো সেটি আরো পোক্ত করেছিলো। যারা প্রতিপক্ষকে খুন করে নিশ্চিহ্ন করতে চায় তাদের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা হবে আত্মঘাতী," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
অর্থাৎ ২১শে অগাস্টের ঘটনার জন্য কোন ভাবেই বিএনপিকে মেনে নিতে রাজী নয় আওয়ামী লীগের নেতারা। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও।
যদিও ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের অনেকে এই হামলার জন্য আওয়ামী লীগকে পাল্টা দায়ী করে যেসব বক্তব্য দিয়েছিলেন সেগুলোও দল দুটোর মধ্যে বৈরিতা বাড়িয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের ক্ষতি করেছিলো বলেও অনেকে মনে করেন।
এমনকি বিএনপি আমলে এ ঘটনায় করা মামলা নিয়েও নানা নাটকীয়তা গণমাধ্যমে এসেছিলো। তবে আওয়ামী লীগ আমলে ২০১৮ সালে মামলার যে রায় হয়েছে তাকেও প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ করেছিলো বিএনপি।
ওই মামলার রায়ে খালেদা জিয়ার মন্ত্রীসভার সদস্য লুৎফুজ্জমান বাবর ও আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও আরও ১১জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থ দণ্ড দেয়া হয়।
তবে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলছেন তারা এখনো মনে করেন ২১শে অগাস্টের ঘটনা রাজনৈতিক বিষয়ই নয় এবং এ ঘটনাকে ব্যক্তিগতভাবে নেয়ারও সুযোগ নেই।
"২১শে অগাস্টের ঘটনা নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। কিন্তু এটি অরাজনৈতিক। সবার নিন্দা করা উচিত। এটা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধের ঘটনা। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যত শক্তিশালী হবে তত এগুলো কমবে। অথচ অনেকেই এসব ঘটনাকে ভিত্তি করে গণতন্ত্রকে আরও দুর্বল করছে," বলছিলেন তিনি।
Post by bbc news
আরো পড়ুন:
- সাকিব: দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে খেলা সম্ভব নয়
- জয়নাল হত্যা মামলার সব আসামি খালাস; পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ
- ফেনীর দাগনভূঁঞায় মোটরসাইকেল চোরাই চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার
- ফেনীর ফুলগাজীতে দুই মহিলা ছিনতাইকারী গ্রেফতার
- বালিয়াডাঙ্গীতে এক পরিবারের চার সন্তানই প্রতিবন্ধী
- Afran Nisho: ভারতীয় ওয়েব সিরিজে আফরান নিশো
- পুতিনের বেপরোয়া পদক্ষেপ ইউরোপকে সরাসরি হুমকি দিচ্ছে
- Russia Ukrain: বাংলাদেশি জাহাজে হামলার জন্য ইউক্রেনকে দুষছে রাশিয়া
- সাড়ে ১২ কোটি মানুষ টিকার আওতায়
- নিয়ন্ত্রণহীন ভোজ্য তেলের বাজার
- ইউক্রেনে নাজুক অবস্থায় পড়ে গেছি: প্রতিমন্ত্রী
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন