সিলেটে ৩ প্রবাসীর মৃত্যু জেনারেটরের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে

 



সিলেটে ৩ প্রবাসীর মৃত্যু জেনারেটরের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে 


সিলেটে যুক্তরাজ্য-প্রবাসী তিনজনের মৃত্যু বিষক্রিয়ায় হয়নি, বরং তারা আবদ্ধ ঘরে জেনারেটরের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, নিহত ওই তিনজনের ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা প্রতিবেদন, কেমিক্যাল এনালাইসিস রিপোর্ট ও প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা পর্যালোচনা করে যে রিপোর্ট দিয়েছেন সেটা তাদের হাতে এসেছে।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে তাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে ঘটনাটি একটি দুর্ঘটনা। প্রবাসী পরিবারটি সেখানে ভাড়া থাকত ও তারা ব্যক্তিগত জেনারেটর ব্যবহার করতো।


সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘সাধারণত সবাই জেনারেটর বাইরে রাখে। কিন্তু ওই পরিবারটি যে ফ্ল্যাটে ছিল, জেনারেটরটি সেখানেই ছিল। এর ধোঁয়া তারা যে কক্ষে অবস্থান করছিল সেখানে প্রবেশ করাতেই দম বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।’


সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার ধিরারাই গ্রামের রফিকুল ইসলাম তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ থেকে গত ১২ জুলাই বাংলাদেশে এসেছিলেন।

এর এক সপ্তাহ পর পরিবারের পাঁচজন সদস্য নিয়ে ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর স্কুল রোডে একটি চারতলা বাড়ির দোতলায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি।

২৫ জুলাই রাতের খাবারের পর রফিকুল ইসলাম তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে মোট পাঁচজন একটি কক্ষে আর ফ্ল্যাটের অন্য দুটি কক্ষে তার শ্বশুর-শাশুড়িসহ অন্য স্বজনরা ঘুমিয়েছিলেন।

কিন্তু সকালে প্রবাসী পাঁচজন ঘুম থেকে না ওঠায় পুলিশে খবর দেয়া হয়। পুলিশ দরজা ভেঙ্গে অচেতন অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়


হাসপাতালে নেয়ার পর রফিকুল ইসলাম ও তার ছোট ছেলেকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। বাকি তিনজনকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। কিন্তু এর কয়েকদিন পর রফিকুল ইসলামের মেয়েও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।


পুলিশ বলছে, ওই পরিবারটির সাথে কারো কোনো বিরোধ বা অর্থনৈতিক লেনদেনের কোনো তথ্য তারা পায়নি। আবার লাশে রাসায়নিক বা বিষক্রিয়ার কোনো আলামতও পাওয়া যায়নি।


‘এ ঘটনায় জেনারেটরের ধোঁয়া ছাড়া আর কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। দীর্ঘক্ষণ জেনারেটর চালু থাকায় ধোঁয়ায় কক্ষটির মধ্যে অক্সিজেনের স্বল্পতা তৈরি হয়। ফলে নিঃশ্বাস নিতে না পেরেই রফিকুল ইসলাম ও ছোটে ছেলের মৃত্যু হয়েছিল,’ স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন পুলিশ সুপার।

কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ঘটনা তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ সদস্যদের ওই কক্ষে রেখে জেনারেটর ছেড়েও দেখা হয়েছিল এবং ধোঁয়ায় তারাও বেশিক্ষণ সেখানে থাকতে পারেননি।

পরিবারটির পরিচয়

রফিকুল ইসলাম ছিলেন একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার। তার জন্ম বাংলাদেশের সিলেটে।বাবার ব্রিটিশ নাগরিকত্বের সূত্র ধরে ১৯৮০’র দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি যুক্তরাজ্যে চলে আসেন

এই পরিবারটি ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফের রিভারসাইড এলাকায় বসবাস করে। রফিকুল ইসলামের দুই ভাই, এক বোন এবং মা-ও থাকেন কার্ডিফ শহরে। পরিবারটির এই অবস্থার পর তাদের সবাই সিলেটে ছুটে গেছেন।

কার্ডিফে রফিকুল ইসলামের আত্মীয়রা জানিয়েছেন, ১২ জুলাই এই পরিবারটি দুই মাসের জন্য বাংলাদেশে যায়।

তার আগে পরিবারটিকে বিদায় জানাতে তারা সবাই কার্ডিফে একত্রিত হয়েছিলেন।

নিহত রফিকুল ইসলামের বোনের স্বামী আব্দুল মুমিন খান কার্ডিফ থেকে বিবিসি বাংলাকে জানান, মূলত পরিবারের বড় ছেলের চিকিৎসার জন্যই তারা বাংলাদেশে গিয়েছিলেন।

‘বড় ছেলের নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা আছে। ইংল্যান্ডে বহু বছর ধরে চিকিৎসা করিয়েও কোনো উন্নতি হয়নি। লন্ডনের প্রাইভেট হাসপাতালেও তার চিকিৎসা করানো হয়েছে। তাই পরিবারটি তাদের ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে ডাক্তার দেখানোর জন্য বাংলাদেশে যান,’ বলেন তিনি।

আব্দুল মুমিন খান জানান, পরিবারটি সপ্তাহখানেক ঢাকার একটি হোটেলে অবস্থান করে। এসময় বড় ছেলেকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তারা চলে যান সিলেটে।


posted by bbc 


আরো পড়ুন:

  1. সাকিব: দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে খেলা সম্ভব নয়
  2. জয়নাল হত্যা মামলার সব আসামি খালাস; পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ
  3. ফেনীর দাগনভূঁঞায় মোটরসাইকেল চোরাই চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার 
  4. ফেনীর ফুলগাজীতে দুই মহিলা ছিনতাইকারী গ্রেফতার
  5. বালিয়াডাঙ্গীতে এক পরিবারের চার সন্তানই প্রতিবন্ধী
  6. Afran Nisho: ভারতীয় ওয়েব সিরিজে আফরান নিশো
  7. পুতিনের বেপরোয়া পদক্ষেপ ইউরোপকে সরাসরি হুমকি দিচ্ছে 
  8. Russia Ukrain: বাংলাদেশি জাহাজে হামলার জন্য ইউক্রেনকে দুষছে রাশিয়া 
  9. সাড়ে ১২ কোটি মানুষ টিকার আওতায়
  10. নিয়ন্ত্রণহীন ভোজ্য তেলের বাজার
  11. ইউক্রেনে নাজুক অবস্থায় পড়ে গেছি: প্রতিমন্ত্রী


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget