Latest Post


বৈধ আয়ের পাশাপাশি অবৈধ অর্থের গন্তব্য হিসেবেও সুইস ব্যাংকের পরিচিতি বিশ্বজোড়া। বড় বড় ব্যাংক কঠোরভাবে তাদের গ্রাহকদের তথ্য গোপন রাখে। এবার প্রকাশ পেল বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতা ও সাবেক সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের জমানো ‘গোপন সম্পদ’-এর তথ্য। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংক ‘ক্রেডিট সুইস’-এর ফাঁস হওয়া নথি এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এনেছে।

সুইস ব্যাংকটিতে গোপনে অর্থ-সম্পদ জমাকারী ব্যক্তিদের তালিকায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের নাম রয়েছে। এর মধ্যে আছেন পাকিস্তানের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সাবেক প্রধান আখতার আবদুর রহমান, ইয়েমেনের রাজনৈতিক নিরাপত্তা সংস্থার (পিএসও) সাবেক প্রধান গালিব আল-কামিশ, জর্দানের জেনারেল ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টরেটের (জিইডি) সাবেক কর্মকর্তা সাদ আল-খাইর। তালিকায় রয়েছেন জর্দানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, তাঁর দুই ছেলে এবং মিসরের সাবেক একনায়ক প্রয়াত হোসনি মুবারকও। প্রতিবেদনে বলা হয়, মুবারকের ছয় ব্যাংক হিসাবের একটিতে ২২ কোটি ৪০ লাখ ডলারেরও বেশি জমা ছিল।


বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা ‘বিভিন্ন অনৈতিক পন্থা অবলম্বন’ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভূ-কৌশলগত ভূমিকা কাজে লাগিয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমিয়েছিলেন।

সুইস ব্যাংকের ৩০ হাজার ব্যক্তির ব্যক্তিগত, যৌথ ও করপোরেট ১৮ হাজার অ্যাকাউন্টের তথ্য ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হওয়া অ্যাকাউন্টে সম্পদের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। এসব অ্যাকাউন্ট চল্লিশের দশকের পর, ২০০০ সালের পর এবং বেশ কিছু গত দশকে খোলা হয়। এমনকি বেশ কিছু এখনো সচল রয়েছে।


জার্মান সংবাদমাধ্যম ‘সুইটডয়চে সেইটুং’কে একজন অজানা ‘তথ্য ফাঁসকারী (হুইসেলব্লোয়ার)’ এসব তথ্য সরবরাহ করেন। বিশ্বের অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন অর্গানাইজিং ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) এবং দ্য গার্ডিয়ান, নিউ ইয়র্ক টাইমসসহ বিশ্বের ৫০টি সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা এসব তথ্য পর্যবেক্ষণ করে ‘সুইস সিক্রেটস’ শিরোনামে একযোগে প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমগুলো এসব ব্যক্তির সম্পদ অর্জনের কৌশলও প্রকাশ করে।


প্রতিবেদন প্রকাশের পর জার্মান সংবাদমাধ্যমটির পক্ষে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সুইস ব্যাংকিংয়ের গোপনীয়তা আইন অনৈতিক। গোপনীয়তা রক্ষার অজুহাত অনৈতিক কাজ ঢেকে রাখার কৌশল, যা অপরাধীদের সহযোগী হিসেবে সুইস ব্যাংকের লজ্জাজনক ভূমিকা আড়াল করে রাখে। ’

তবে ক্রেডিট সুইস গণমাধ্যমের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়ে বলেছে, পর্যালোচনা করা অ্যাকাউন্টগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ এখন বন্ধ অথবা গণমাধ্যমের অনুসন্ধানের আগে বন্ধ হওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিল, যার মধ্যে ২০১৫ সালের আগে ৬০ শতাংশ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারা আরো বলে, এই প্রতিবেদনগুলো শুধু ব্যাংকই নয়, সামগ্রিকভাবে সুইস আর্থিক বাজারকে অবমূল্যায়ন করার সমন্বিত চেষ্টা বলে মনে হচ্ছে, যা গত কয়েক বছর ধরে চলছে।


প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার প্রক্রিয়ারও বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তানে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন বাহিনীর দখলদারির সময় মার্কিন বাহিনী মুজাহিদদের মদদ দিয়ে ছায়াযুদ্ধ চালিয়েছিল। সে প্রক্রিয়ায় পাকিস্তান, জর্দান, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন মিত্র দেশ কিভাবে ওয়াশিংটনকে সহযোগিতা করেছে তার বিশদ বিবরণ উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। নেপথ্যের শীর্ষ ব্যক্তিরা কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হন, আছে তার বর্ণনাও।


আইএসআইয়ের সাবেক প্রধান আখতার আব্দুর রহমান


সত্তরের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সাতটি মুজাহিদ গোষ্ঠীকে মদদ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ সময় সুইস ব্যাংকের মাধ্যমে মার্কিন বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ) ও সৌদি আরবের মধ্যে আর্থিক লেনদেন হতো। এসব অর্থ শেষমেশ আখতার আব্দুর রহমানের অ্যাকাউন্টে জমা হতো। তাঁর দুই ছেলে আকবর ও হারুন খানের ক্রেডিট সুইসের অ্যাকাউন্টে ৩৭ লাখ ডলার জমা হয়েছিল।


ইয়েমেনের পিএসওপ্রধান গালিব আল-কামিশ


প্রতিবেদনে বলা হয়, সোভিয়েতবিরোধী যুদ্ধে মুজাহিদদের মদদ দিতে আইএসআইয়ের আখতার আব্দুর রহমানের যে ভূূমকা ছিল ইয়েমেনে আলি-কামিশের ভূমিকা ছিল তার অনুরূপ। ইয়েমেনের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহের ‘ব্ল্যাক বক্স’ অর্থাৎ গোপন খবরের ভাণ্ডার ছিলেন আল-কামিশ। পরে তাঁদের সম্পর্ক খারাপের দিকে যায়। রাজনৈতিক নিরাপত্তা সংস্থায় (পিএসও) কাজ করা পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দাদের ভাষ্য, ‘লাখ  লাখ ডলারের খোলা বাজেট’ ছিল কামিশের জন্য, যা দিয়ে তিনি যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারতেন। সিআইএর হয়ে তিনি ইয়েমেনে সন্দেহভাজন আটক ব্যক্তিদের গোপন কারাগার বানিয়েছিলেন। বিনিময়ে পেয়েছিলেন বিপুল অর্থ। বর্তমানে তুরস্কে বাস করছেন আলি-কামিশ।

জিআইডিপ্রধান সাদ আল-খাইর


হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একবার দাবি করেছিল, সাদ আল খায়েরের নেতৃত্বাধীন জর্দানের গোয়েন্দা সংস্থা জিআইডি সিআইএর ‘প্রক্সি জেলার’ হিসেবে কাজ করেছে। সিআইএ যেসব সন্দেহভাজনকে প্রচারের আলোয় আসতে দিতে চাইত না, তাদের জিআইডির কারাগারে পাঠানো হতো। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪ জন বন্দির তথ্য নথিভুক্ত হয়েছে, যাদের সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্র জিআইডির কাছে পাঠিয়েছিল। সুইস ব্যাংকে সাদ খাইরের একটি অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল দুই কোটি ১৬ লাখ ডলার। জিআইডি কমপক্ষে ১০০ জনের কাছ থেকে নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে।


এর বাইরেও সাংবাদিকরা বেশ কয়েকটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করা আরো কমপক্ষে ৪০ জনের নাম পেয়েছেন, যাঁদের সুইস ব্যাংকে অর্থ ছিল। এর মধ্যে আছেন ভেনিজুয়েলার সাবেক সেনাপ্রধান ক্যাপ্টেন কার্লোস লুই অ্যাগুলেরা বোর্হেস (হুগো শাভেজের সাবেক দেহরক্ষী), ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান ভ্যালেরি খোরশকোভস্কি (বর্তমানে ধনকুবের) এবং জার্মানি, নাইজেরিয়া, উজবেকিস্তান ও ইরাকের অনেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা। মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট জামাল আবদেল নাসেরের এক জামাতার কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। 


সূত্র : বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, ওসিসিআরপি



করোনা মহামারির কারণে মানুষের চলাচলের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ প্রায় দেড় মাস পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে তুলে নিচ্ছে সরকার। এ দিন থেকেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে।

তবে যে শিক্ষার্থীরা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে তারাই কেবল শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে পারবে।


বিধিনিষেধ তুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও করোনা সংক্রমণ রোধে ঘরের বাইরে গেলে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরতে গুরুত্বারোপ করা হবে।


চলতি বছরের শুরুর দিকে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ১১ দফা দিয়ে ১৩ জানুয়ারি থেকে সরকারি বিধিনিষেধ শুরু হয়। সেই বিধিনিষেধ বাড়ানো হয় ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

বিধিনিষেধগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল-হোটেল-রেস্তোরাঁয় টিকা সনদ নিয়ে খাবার গ্রহণ, গণপরিবহনের চালক-সহকারীদের টিকা সনদ প্রদর্শন, সভা-সমাবেশ বন্ধ ইত্যাদি।


আর সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ২১ জানুয়ারি থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।


টানা এক মাস বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) খুলছে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলবে ২ মার্চ। কিন্তু প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এখনই খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুয়ার।

চলমান বিধিনিষেধ তোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাস্ক সর্বাবস্থায় পরতে নির্দেশনা দেন।


বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, স্কুল (মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়) খোলা হবে। সবাই যেন মাস্ক পরে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেখানে যাবে, যে অনুষ্ঠানে যাবে সবাই যেন মাস্ক পরে, এটা বার বার অনুরোধ করা হয়েছে। কেবিনেট মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, সবাইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমরা যেন আয়েসী না হই।


এদিকে, মধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল-কলেজ খোলার আগে ২০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।



নির্দেশনাসমূহ:

১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে সকল শিক্ষার্থী কোভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছে সে সকল শিক্ষার্থী সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখসহ অন্যান্য স্থানে কোডিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়সমূহ ব্যানার বা অন্য কোন উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা।

৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে সকল শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা করা।

৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফরমে শিখন-শেখানো কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

৫. শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণকৃত অ্যাসাইনমেন্টসমূহের কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে।

৬. শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন ইতোপূর্বে পাঠানো নির্দেশনা মোতাবেক প্রণয়ন করতে হবে।

৭. শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সবগুলো প্রবেশ/প্রস্থান মুখ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা। যদি কেবল একটি প্রবেশ/প্রস্থান মুখ থাকে সেক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশ/প্রস্থান মুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা।

৮. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা।

৯. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া আসা করবে সেই বিষয়ে তাদেরকে শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিং প্রদান করার ব্যবস্থা করা।

১০. প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখা।

১১. প্রতিষ্ঠানের সকল ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ এবং আঙ্গিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করা।

১২. প্রতিষ্ঠানের সকল ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখা।

১৩. প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কেউ প্রবেশ/অবস্থান/প্রস্থানের সময় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা।

১৪. প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং অন্য কেউ সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা।

১৫. প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা।

১৬. শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা। এক্ষেত্রে পারস্পরিক তিন ফুট শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা।

১৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা এবং কোথাও পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।

১৮. প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরুপণ করা।

১৯. প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত করা।

২০. প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সাথে সভা করে এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ বিতরণ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছেন, বন্ধের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেভাবে সংক্ষিপ্ত ক্লাল চলছিল, সেভাবেই শুরু হবে।

টানা এক মাস পর শুরু হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে পাঠদান। করোনা পরিস্থিতি নিম্নমুখী হওয়ায় স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে আনন্দমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও সন্তোষজনক। গড়ে প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।


তবে কেবল করোনা টিকার দুটি ডোজ নেওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকে নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত হচ্ছে। টানা একমাস বন্ধ থাকায় প্রথমদিনের ক্লাসে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন শিক্ষকরা।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শাখা প্রধান মুসতারি আহমেদ মঙ্গলবার সকালে জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। কোনো ছাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকলে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদের টিকার দুটি ডোজ দেওয়া হয়েছে তাদের শুধু ক্লাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান শুরু করা হয়েছে। ক্লাসে ছাত্রীদের উপস্থিতি প্রায় ৯০ শতাংশ।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রীদের মধ্যে যারা করোনার দুটি ডোজ নিয়েছে শুধু তারা যেন ক্লাসে উপস্থিত হয় এ ধরনের নির্দেশনা নোটিশ বোর্ডসহ অভিভাবকদের এসএমএসে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের অনলাইনে জুম ক্লাসে যুক্ত হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল থেকে পাঠদান শুরু হয়েছে।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে মঙ্গলবার সকাল থেকে পাঠদান শুরু করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি প্রায় ৮০ শতাংশ। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ক্লাস কার্যক্রম চলছে।

তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক যেসব শিক্ষার্থীর করোনার দুটি ডোজ নেওয়া হয়েছে শুধু তাদের স্কুলে আসতে নোটিশ দেওয়া হয়। যাদের দুটি টিকা নেওয়া হয়নি তাদের জুম ক্লাসে যুক্ত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ায় সরকারের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে সারাদেশে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে।

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও শিক্ষার্থীদের সশরীরে শ্রেণিকক্ষে পাঠগ্রহণের ক্ষেত্রে শর্ত আরোপ রয়েছে। যে শিক্ষার্থীরা করোনা প্রতিরোধী টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে শুধুমাত্র তারাই শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থেকে ক্লাস করতে পারবে। এক্ষেত্রে অন্য শিক্ষার্থীদের বাসায় থেকে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত থাকতে হবে।

সারাদেশে ওমিক্রনসহ করোনাভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের মুখে গত ২১ জানুয়ারি দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। আজ মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলবে আগামী ২ মার্চ। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কবে ক্লাসে ফিরতে পারবে, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

এদিকে করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর তা কীভাবে চলবে, এ বিষয়ে ২০ দফার গাইডলাইন দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এসব নির্দেশনা দিয়ে একটি আদেশ জারি করেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে পূর্বের গাইডলাইনও অনুসরণ করতে হবে। এর ওপর নতুন করে আরও ২০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি।


করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রার্দুভাব মোকাবিলায় গত ১০ জানুয়ারি সারাদেশে বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। নতুন বছরের প্রথম ওই বিধিনিষেধে ১১টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।


অমর একুশে বইমেলার সপ্তম দিন ছিল গতকাল। মেলা চলে সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বইমেলায় গতকাল নতুন বই আসে ২২৪টি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমি বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে।

বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে বক্তৃতা ২০২২। স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। ফিরে দেখা : আমাদের ভাষা আন্দোলন শীর্ষক অমর একুশে বক্তৃতা ২০২২ প্রদান করেন কবি আসাদ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।


কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, অমর একুশের সত্তর বছর পূর্ণ হলো। তবে বাঙালির ভাষা আন্দোলন কেবল সত্তর বছরের বিষয় নয়; হাজার বছর ধরে বাঙালি আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকারের জন্য লড়াই করে এসেছে। এ লড়াই কেবল সাংস্কৃতিক লড়াই ছিল না, এ লড়াই ছিল অর্থনৈতিক-সামাজিক এবং অবশ্যই রাজনৈতিক।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, অমর একুশের সত্তর বছর পূর্তি বাঙালি জাতির জন্য পরম গৌরবের বিষয়। ভাষাসংগ্রামের মধ্য দিয়ে ভাষাভিত্তিক বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।


গতকাল লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন, ইমদাদুল হক মিলন ও আনিসুল হক। কবিতা পাঠ করেন কবি মাকিদ হায়দার, বিমল গুহ ও আবদুস সামাদ ফারুক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন দেওয়ান সাইদুল হাসান, জয়ন্ত রায় ও শাহাদৎ হোসেন নিপু।

গতকাল সকাল ৮টায় শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ। স্বরচিত কবিতাপাঠে অংশ নেন অর্ধশতাধিক কবি। সভাপতিত্ব করেন কবি অসীম সাহা।


আজ মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলার অষ্টম দিন। মেলা চলবে দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ : লেখক বঙ্গবন্ধু শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মোহাম্মদ সেলিম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ঝর্না রহমান ও তানভীর আহমেদ সিডনী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।



একুশে বইমেলার সপ্তম দিন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় বইমেলা শুরু হওয়ার পর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে লোক সমাগম। বিকাল হতেই ‘জনসমুদ্রের’ ঢল নামে। এ সময় টিএসসি, দোয়েল চত্বর, শাহবাগ এলাকায় ছিল তীব্র যানজট।


মেলার প্রবেশপথ ও বের হওয়ার পথেও ছিল লোকজনের উপচে পড়া ভিড়। মেলার ভেতরের প্রাঙ্গণেও ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই। আজ  সব স্টলেই ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। ভিড় সামাল দিতে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছিলেন বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশকরা। একইসঙ্গে বিক্রি বাড়ায় তাদের চোখমুখে ছিল খুশির আমেজ।

প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা জানান, ২১ ফেব্রুয়ারির দিনটি সব বছরই বইমেলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এদিন ভিড় যেমন বেশি হয়, তেমনই বই বিক্রিও বেশি হয়।  তবে এই জনসমুদ্রে অনেকেই সাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না। মাস্ক ছাড়াই  দিব্যি ঘোরাফেরা করছেন অনেক পাঠক ও দর্শনার্থী।

তবে সরেজমিনে অনেক স্টলের বিক্রয়কর্মীকেও মাস্ক ছাড়া কেনাবেচা করতে দেখা গেছে।



সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ এ বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অমর একুশে বইমেলার একুশে ফেব্রুয়ারি সবসময়ই বিশেষ একটি দিন। এই দিনে লোকসমাগম বেশি হয়, বই বিক্রিও বেশি হয়। এবারের একুশে ফেব্রুয়ারিও লোকজন উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে এসেছে এবং বই কিনেছে। এবারের মেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম দিন আজ।  গতবছর মেলাটা পুরোপুরি করোনাক্রান্ত ছিল। সেই হিসাবে এবারের মেলাও ব্যতিক্রম নয়। লোকসান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আরও দুই-একবছর লাগতে পারে।’

আবিষ্কার প্রকাশের মালিক দেলোয়ার হাসান বলেন, ‘ভিড়ের তুলনায় বিক্রি বেশি না হলেও,বলা যায় বিক্রি বেশ ভালো। লোকসমাগম যেভাবে দেখা যাচ্ছে, আশা করি, প্রকাশকরা  গত দুবছরের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন।’


নবযুগ প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী জাহিদ তানজিম বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের মতো বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশকদের জন্য বিশেষ দিন। এদিন সবসময় আমাদের ব্যস্ততার মধ্যে কাটে। বিক্রি বেশি হওয়ায় বেশ ভালোই লাগছে।’



মুক্তচিন্তা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী নাহিদ হোসেন সৌরভ বলেন,‘এবারের বইমেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম দিন আজ।  সকাল থেকেই লোকজন বাড়তে শুরু করে। বিকাল থেকেই স্টলে লোকজনের ভিড়। ক্রেতাদের সামাল দিতে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছি।’

পুরান ঢাকা থেকে আগত  সামিয়া তাসনিম  বলেন, ‘একুশের বিশেষ দিনটিতে প্রিয়জনের সঙ্গে প্রভাত ফেরিতে এসেছি। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘুরেছি। বিকালে বইমেলায় আসলাম।  তিনি বলেন,  ‘এত লোক যে, তিল ধারণের জায়গা নেই। বইয়ের দোকানগুলোতেও ভীষণ ভিড়। আধা ঘণ্টা সিরিয়ালে দাঁড়ানোর পর বই কিনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। '



মেলায় ঘুরে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না অনেকে। মেলায় প্রবেশের সময় সবার মুখে মাস্ক থাকলেও প্রবেশের পর অধিকাংশ মাস্ক খুলে ফেলছেন। মাস্ক খুলে বসে, দাঁড়িয়ে যত্রতত্র আড্ডা দিচ্ছেন।  জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে একজন বলেন, ‘দেখেন, এত লোক যে এমনিতেই শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তারপর মাস্ক পরলে আরও দম বন্ধ হয়ে আসে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকাশক বলেন, ‘আসলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি আইনের চেয়ে নৈতিকতার সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত। সবারই উচিত নীতি নৈতিকতার জায়গা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। যারা  মাস্ক না পরে ঘোরাঘুরি করছেন, তাদের বেশির ভাগই আসেন সময় কাটাতে, বই কিনতে নয়। তাই আমার মনে হয়, মেলায় প্রবেশ মূল্য করা উচিত।’



বইমেলার আলোচনা সভা


বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় ‘ফিরে দেখা: আমাদের ভাষা আন্দোলন’ শীর্ষক অমর একুশে বক্তৃতা-২০২২। এতে  মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি আসাদ চৌধুরী। স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।


এদিন মেলায় নতুন বই এসেছে ২২৪টি।


ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট ডিগ্রী কলেজে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজে লোহার রডের পরিবর্তে বাঁশের বাতা ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সোমবার সকালে কলেজের শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর ওয়াশ ব্লক নির্মান কাজ পরিদর্শনকালে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি ধরা পড়ে।


কলেজের সহকারি অধ্যাপক তৈয়ব আলী জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে প্রায় ৭ লাখ টাকায় তাদের কলেজে একটি ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মান কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সোমবার সকালে অধ্যক্ষ করিমুল ইসলাম সহ শিক্ষক-কর্মচারীরা কলেজের শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য যান। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কলেজ মাঠে নির্মানাধীন ওয়াস ব্লকের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে যান তারা।


এ সময় তারা দেখতে পান ওয়াশ ব্লকের জন্য সদ্য তৈরী করা স্লাবের (ঢাকনা) এক প্রান্তে বাঁশের বাতার অংশ বিশেষ বের হয়ে আছে। পরে স্লাব ভেঙ্গে দেখেন, সেখানে লোহার রডের পরিবর্তে বাঁশের বাতা ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি তাৎক্ষনিক উপজেলা প্রকৌলীকে মোবাইল ফোনে জানান তারা। নির্মান কাজে রডের পরিবর্র্তে বাঁশের বাতা ব্যবহার করার বিষয়টি মহুর্তেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।



কলেজের দাতা সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর জানান, করোনার কারণে কলেজ বন্ধ ছিল। এসময় ওয়াশ ব্লকের ভবন নির্মাণ কাজ তাদের সেভাবে তদারকি করা সম্ভব হয়নি। এখন স্লাবে রড়ের পরিবর্তে বাঁশ পাওয়া যাচ্ছে, তাহলে ভবন নির্মাণ কাজে কি ব্যবহার করা হয়েছে। তা আল্লাহই জানেন। এটা যাচাই করা জরুরী।


এ বিষয়ে নির্মাণ কাজের ঠিকাদার ফারুক হোসেন বলেন, তাকে না সাইডের জানিয়েই মিস্ত্রি এ কাজ করেছে। তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।


উপজেলা প্রকৌশলী শামীম হোসেন বলেন, তিনি শুনেছেন এবং তদারকি কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন।


উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম বলেন, ইঞ্জিনিয়ারকে বলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।


চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থি অঞ্চলকে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে মস্কো। এমনকি স্বীকৃতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে সেখানে সেনা পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে জরুরি বৈঠকে বসে নিরাপত্তা পরিষদ।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ে সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নতুন ঘোষণা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘন। এর আগে পশ্চিমা দেশগুলো বারবার এ বিষয়ে সতর্ক করে আসছিল। তারা চাইছিল, রাশিয়া যেন রুশপন্থি অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি না দেয়।

এর আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছিল, ইউক্রেন ইস্যুতে বেশ কয়েকটি দেশ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠকে বসার অনুরোধ করে। এমনকি একটি চিঠির মাধ্যমে ইউক্রেনও তাদের এক প্রতিনিধিকে বৈঠকে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে দাবি জানায়। যদিও পরিষদের ১৫টি সদস্য দেশের মধ্যে বর্তমানে ইউক্রেন নেই।



নিরাপত্তা পরিষদের অন্য চার স্থায়ী সদস্য দেশের মতো জাতিসংঘে রাশিয়ার ভোটো ক্ষমতা রয়েছে। জরুরি এই বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাবনা সামনে আনা হলেও রাশিয়া সেটি আটকাতে ভোটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে।

বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায় চীন। দেশটির রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেন, সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে হবে। উত্তেজনা বাড়াতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। আমরা কূটনৈতিক সমাধানের জন্য প্রতিটি প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই।

একই বৈঠকে রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, কূটনৈতিক সমাধানের জন্য আমরা উন্মুক্ত আছি। রক্তস্রোত বইয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই রাশিয়ার।


ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বিবিসি বলছে, এর মাধ্যমে সেখানে কার্যকরভাবে শান্তি আলোচনার ইতি ঘটলো।


স্বঘোষিত গণপ্রজাতন্ত্র দোনেস্ক ও লুহানস্ক রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহীদের এলাকা। এই বিদ্রোহীরা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেইনের বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে।


এই দুটি অঞ্চলে রাশিয়ার সেনাদের ‘শান্তিরক্ষা কার্যক্রম’ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


পুতিন বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সেনাদের ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে প্রবেশের পথ প্রশস্ত করে দিলেন, এমন আশঙ্কা করছে পশ্চিমা শক্তিগুলো।


বিবিসি জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে দোনেস্ক ও লুহানস্কের বিপুল সংখ্যক লোককে রাশিয়ার পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে, এখন নিজেদের নাগরিকদের রক্ষার ভান করে রাশিয়া সামরিক ইউনিটগুলোকে সেখানে পাঠাবে বলে আশঙ্কা পশ্চিমা দেশগুলোর।


সোমবার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেইনের দুটি অঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর টেলিভিশনে দেওয়া এক ঘণ্টার এক ভাষণে নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দেন পুতিন। .

তিনি বলেন, আধুনিক ইউক্রেইনকে ‘সৃষ্টি’ করেছে সোভিয়েত ইউনিয়ন, দেশটিকে ‘প্রাচীন রুশ ভূমি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।



১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়া ‘লুণ্ঠিত’ হয়েছে বলে অনুযোগ করেছেন তিনি। পুতুল সরকার দ্বারা পরিচালিত ইউক্রেইন একটি ‘যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশে’ পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দেশটির বর্তমান নেতৃত্বের অধীনে জনগণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।


২০১৪ সালের যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ইউক্রেইনের রাশিয়াপন্থি নেতার পতন ঘটেছিল তাকে অবৈধ ক্ষমতাদখল বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।


এর প্রতিক্রিয়ায় গভীর রাতে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে তার দেশের সার্বভৌমত্ব লংঘন করছে।


ইউক্রেইন ‘শান্তি চায়’, এমনটি জানিয়ে তিনি ঘোষণা করেন, “আমরা ভীত নই। আমরা কাউকে কিছু দেবো না। ইউক্রেইনের এখন দরকার আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কার্যকরী পদক্ষেপ ও পরিষ্কার সমর্থন।


তিনি বলেন, “কারা আমাদের প্রকৃত বন্ধু ও অংশীদার আর কে শুধু কথা দিয়ে রাশিয়াকে ভয় দেখানো অব্যাহত রাখবে, তা দেখা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” 

ত্বরিত প্রতিক্রিয়ায় পুতিনের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানায় যু্ক্তরাষ্ট্র এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেইনের বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলগুলোতে আমেরিকানদের নতুন বিনিয়োগ, বাণিজ্য বা অর্থায়নে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন।


হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ‘রাশিয়া যদি এরপরও ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালায়’ তাহলে পশ্চিমা দেশগুলো বিস্তৃত যেসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে এসব পদক্ষেপ সেগুলো থেকে আলাদা।



যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রাশিয়ার পদক্ষেপকে ‘ইউক্রেইনের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার নিদারুণ লংঘন’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন এবং এটি আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন। যুক্তরাজ্য মঙ্গলবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।          


‘ঐক্য, দৃঢ়তা ও ইউক্রেইনের সঙ্গে সংহতির সংকল্প নিয়ে’ প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।


ইউক্রেইনের সীমান্তের চারদিকে রাশিয়ার দেড় লাখেরও বেশি সেনা সমর প্রস্তুতিসহ অবস্থান নিয়ে আছে। রাশিয়া কী করতে যাচ্ছে, তা নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে ভ্লাদিমির পুতিনের এ পদক্ষেপ চলমান সংকটকে আরও গভীর করে তুলল বলে মত বিশ্লেষকদের।


ইউক্রেইনে রাশিয়া আগ্রাসন আসন্ন বলে বিশ্বাস যুক্তরাষ্ট্রের। অপরদিকে এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই বলে দাবি মস্কোর।  


ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়ায় হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে আলুসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কায় কৃষক পরিবার। সোমবার ২১ (ফ্রেরুয়ারী) বিকেল সাড়ে চার'টার সময় এ অঞ্চলে হঠাৎ মাঝারি আকারের শিলাবৃষ্টি শুরু হয়।


জেলার রুহিয়া থানার রাজাগাঁও, সেনুয়া বড়গাঁওসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে দমকা হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এতে আম গাছের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 



জানা গেছে, ফাল্গুন মাসে পিয়াজ, রসুন, আলু, সরিষা, গম ও আলু উত্তোলনের মৌসুম শুরু হয় সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। এ সময় পিয়াজ, রসুন, আলু, গম, সরিষা, শীম, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টাসহ নানান রবি শস্যে ডুবে থাকে চাষাবাদের জমি। বর্তমানে এসব ফসল ঘরে তোলা শুরু করেছেন কৃষকরা। এমন সময় সোমবার বিকেলে হঠাৎ জেলার আকাশ কালো মেঘে ছেঁয়ে যায়। শুরু হয় মেঘের গর্জন। এরপর মাঝারি আকারের শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। চলে দীর্ঘ সময়।

তবে জেলার রাণীশংকৈল ও পীরগঞ্জ

উপজেলায় শিলাবৃষ্টি হয়নি। রুহিয়া থানার কয়েকটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি করেছে শিলাবৃষ্টি।  ফসল ঘরে তোলার এ মৌসুমে শিলাবৃষ্টিতে আলু, গম, সরিষা, মিষ্টিকুমড়া, শিম, ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা করছেন চাষিরা। 



 ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়া, ভুল্লি, ঢোলারহাটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে শিলা বৃষ্টিপাত হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানান কৃষকেরা। এ অঞ্চলে শিলাবৃষ্টির আকার ও স্থায়ীত্ব ছিল তুলনামূলক দীর্ঘ।



কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের রুহিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তপন কুমার বলেন, ক্ষেত পরিদর্শন না করে ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ করা কষ্টকর। তবে ফাল্গুন মাসে শিলাবৃষ্টিতে আলু, সরিষা, গমসহ মাঠে থাকা নানান জাতের সবজির ক্ষতির আশংকা রয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সবজি, সরিষা আর গম ক্ষেত। আলু ক্ষেতে পানি জমে গেলে তা দ্রুত নিস্কাশনের পরামর্শ দেন তিনি



দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৯৮৭ জনের। আজ রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।


এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৬৫ জনে।

মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৩৩ হাজার ২৯১ জনে। শনাক্তের হার ৭.৮২ শতাংশ।

এর আগে গতকাল শনিবার ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং শনাক্ত হয়েছিল দুই হাজার ১৫০ জন। শনাক্তের হার ছিল ৮.৭১ শতাংশ।  



আজ (রোববার) বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে ৯ হাজার ২৫২ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১৭ লাখ ৫৪ হাজার ৫৮৪ জন।


২৪ ঘণ্টায় ২৫ হাজার ৪১১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ২৫ হাজার ৪০৫টি নমুনা। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৭.৮২ শতাংশ। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৪.৬৪ শতাংশ।



গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ, সাতজন নারী। ঢাকা বিভাগে মারা গেছে ১২ জন। চট্টগ্রামে চারজন, রংপুরে দুজন এবং বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহীতে একজন করে মারা গেছে।


২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম  তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। গেল বছরের ৫ ও ১০ আগস্ট দুই দিন সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যায়। 


ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করার পর পশ্চিমা নেতাদের ভাষায় "যে কোনো সময়" সামরিক অভিযানের শঙ্কার মধ্যেই বেলারুশ কর্তৃপক্ষ বলেছে, রুশ সেনাদের সাথে তাদের যে যৌথ সামরিক মহড়া চলছিল, ইউক্রেন ইস্যুতে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে তার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।


রোববার ওই মহড়া শেষ করে প্রায় ৩০ হাজার রুশ সৈন্যের নিজ দেশে ফিরে যাবার কথা ছিল।

কিন্তু বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি ও তাদের ভাষায় পূর্ব ইউক্রেনের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে এ মহড়ার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। বেলারুশের এ ঘোষণা অবশ্য মস্কোর দিক থেকে নিশ্চিত করা হয়নি।



পশ্চিমা নেতারা আশঙ্কা করছেন, মহড়ায় অংশ নেয়া এ রুশ সেনাদের ইউক্রেন অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে, তবে রাশিয়া তা অস্বীকার করেছে।


মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালাবে। পশ্চিমা নেতারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন যে তারা ইউক্রেনে অভিযান চালানোর অজুহাত হিসেবে একটি ভুয়া কারণ খাড়া করার চেষ্টা করছে। তবে রাশিয়া বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।


এ পরিস্থিতির মধ্যে আজ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যে আরেক দফা ফোনালাপ হয়েছে।


পূর্ব ইউক্রেনে সঙ্ঘাত তীব্রতর হচ্ছে


ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ-সমর্থিত বিদ্রোহীরা গত কয়েক দিন ধরে আক্রমণ বাড়াচ্ছে। এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তারা কোনো উস্কানিতে সাড়া দেবেন না। তবে জেলেনস্কি বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, রাশিয়া কোনো অভিযান চালালে আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ নেয়া হবে।



পূর্ব ইউক্রেনে সরকারি বাহিনী ও রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষের তৃতীয় দিনে দু‘জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গত রাতে একাধিকবার গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলছে - তারা ডনবাস এলাকায় যাবার একটি চেকপয়েন্ট ব্যবহার স্থগিত করেছে কারণ বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বলছে, তা্রা ইউক্রেনীয়দের গোলাবর্ষণের জবাব দিচ্ছে।


ইউরোপে 'দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় যুদ্ধ?’


ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া ইউরোপে ১৯৪৫ সালের পর সবচেয়ে বড় যুদ্ধের পরিকল্পনা করছে, এবং বিভিন্ন আলামত দেখে মনে হচ্ছে যে এক অর্থে ইতোমধ্যেই তা শুরু হয়ে গেছে ।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সূত্রে আভাস মিলছে যে রাশিয়া এমন এক অভিযান চালাতে চায় যাতে কিয়েভ শহরকে ঘিরে ফেলা হবে। জনসন হুঁশিয়ার করে দেন যে এ ধরনের কোনো যুদ্ধ হলে তা হবে "রক্তাক্ত এবং দীর্ঘ।"


তিনি আরো বলেন, ইউক্রেনে রুশ অভিযান হলে - রুশ কোম্পানিগুলোকে ডলার ও পাউন্ডে কোনো লেনদেন করতে দেবে না যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ।


রাশিয়া কী চাইছে?


পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে রাশিয়া নিশ্চয়তা চাইছে যে ইউক্রেনকে কখনো নেটো সদস্য করা হবে না এবং পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সামরিক উপস্থিতি কমাতে হবে - যদিও মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোট এমন কোনো নিশ্চয়তা দিতে রাজি নয়।


রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যদি ন্যাটোতে যোগ দেয় এবং আট বছর আগে রাশিয়ার দখল করে নেয়া ক্রিমিয়া পুনর্দখল করার চেষ্টা করে - তাহলে পুরো ইউরোপ একটা বড় আকারের সঙ্ঘাতে জড়িয়ে যাবে।



ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেছেন প্রয়োজন হলে ইইউ তাদের নিজ অর্থনীতির ক্ষতি করে হলেও রুশ সামরিক আগ্রাসনের পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। মিউনিখে এক নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি বলেন, ইইউ রাশিয়ার ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য প্রস্তুত আছে।


সূত্র : বিবিসি


ভ্যালেন্টাইন’স ডে মানেই বর্তমানে নাটকের একটি বড় উৎসব। প্রতিবারের মতো এবারও এ দিনটিকে ঘিরে বেশ আয়োজন চোখে পড়েছে। তার ভিড়ে সবচেয়ে আলোচিত ও প্রশংসিত নাটকের তালিকায় আছে ‘উড়ছি তোমার প্রেমে’। এ নাটক দিয়ে দীর্ঘদিন পর আবারও রোমান্টিক ইমেজে হিট নাটক উপহার দিলেন দর্শকনন্দিত অভিনেতা অপূর্ব।


এখানে তাকে দেখা গেছে প্রাক্তন  প্রেমিকের চরিত্রে। যার প্রেমিকা বর্তমানে বিবাহিত। ট্রেনে হঠাৎ দেখা হয় দুই প্রাক্তনের। সেই দেখা দুজনেক চমকে দেয়। দর্শককে নিয়ে যায় নস্টালজিয়ায়। এমন চমৎকার শুরুর মধ্য দিয়ে নাটকটি এগিয়ে চলে উপভোগ্য এক গল্পের দিকে। নাটকে অপূর্বের প্রাক্তন প্রেমিকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন কেয়া পায়েল। তিনিও তার চরিত্রে ছিলেন সাবলীল।

জাকারিয়া শৌখিনের পরিচালনায় এ নাটকটি ভালোবাসা দিবসের সেরা নাটক হিসেবেই অভিহিত হচ্ছে। সুলতান এন্টারটেইনমেন্টের ইউটিউব চ্যানেলে নাটকটি উন্মুক্ত হয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি। মুক্তির তিনদিনেই এটি দেখেছেন ১৩ লাখেরও বেশি দর্শক। পাশাপাশি করছেন ইতিবাচক সব মন্তব্য। যার বেশিরভাগই অপূর্বকে কেন্দ্র করে। বহুদিন পর এমন পিউর রোমান্টিক ইমেজে প্রিয় অভিনেতাকে পেয়ে যেন আনন্দের বাঁধ ভেঙেছে তার ভক্ত-অনুরাগীদের।



অনেকে কেয়া পায়েলের সঙ্গে অপূর্বর জুটিকেও স্বাগত জানাচ্ছেন। সাধারণ মেহজাবীন চৌধুরী, তানজিন তিশার সঙ্গেই বেশি নাটক করতে দেখা যায় অপূর্বকে। মাঝেমধ্যে সাবিলা নূর, তাসনিয়া ফারিনকে নিয়েও সুপারহিট নাটক উপহার দেন অপূর্ব। এবার তিনি কেয়া পায়েলের নায়ক হয়ে মুগ্ধতা ছড়ালেন। ‘উড়ছি তোমার প্রেমে’ নাটকে দুজনের রসায়ন দেখে অনেক প্রযোজক ও পরিচালকই আগ্রহী হচ্ছেন তাদের নিয়ে।


অপূর্ব এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আসলে গল্প ও নির্মাণশৈলীর উপর নির্ভর করে নাটকটি দর্শকের কাছে কতোটা সমাদৃত হবে। জাকারিয়া শৌখিন বরাবরই ইউনিক গল্প নিয়ে গুছিয়ে কাজ করেন। তার গল্পে প্রতিটি চরিত্রই যত্ন পায়। ‘উড়ছি তোমার প্রেমে’ নাটকটিও ছিল তেমন আয়োজনের। কাজ করতে করতেই মনে হচ্ছিল ভালো কিছু হবে। আর কেয়া পায়েল খুব পরিশ্রমী ও মেধাবী। নিজের কাজের প্রতি খুব মনযোগী ও। কেয়ার জন্য ভালোবাসা। ওর সঙ্গে কাজ করে আমারও খুব ভালো লেগেছে।’



নাটকটি নিয়ে পরিচালক জাকারিয়া শৌখিন বলেন, ‘যেহেতু ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে নাটকটি তৈরি করেছি তাই রোমান্টিকতাকেই প্রাধান্য দিয়েছি। সংলাপ ও দক্ষ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তা দারুণভাবে উপভোগ্য হয়েছে। দর্শক এমনটাই বলছেন। আর দর্শকের এই প্রশংসাই আমার আনন্দ, তৃপ্তি। অপূর্ব এবং কেয়া পায়েলকে জুটি করে একটি চ্যালেঞ্জ নেয়ার চেষ্টা করেছিলাম। আমার মনে হয় সেই চ্যালেঞ্জে আমি জয়ী হয়েছি। অনেকেই এই দুজনকে নিয়ে নাটক নির্মাণের কথা ভাবছেন এখন।’


অপূর্ব ও কেয়া পায়েল ছাড়াও নাটকে বাবার চরিত্রে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন আবুল হায়াত। তাদে দেখা গেছে কেয়ার বাবার চরিত্রে। একজন নেতার চরিত্রে স্বল্প সময়েও নিজের অভিনয়ের জাদু দেখাতে ভুলেননি তিনি।


‘উড়ছি তোমার প্রেমে’ নাটকে ‘সেই আমি আমি নেই, বদলে গেছে ভাগ্য রাশি/সেই প্রথম দেখাতে ঐ চোখে ডুবি, ভাসি/এতো কেন ভালো যে লাগছে/ভালো লাগতে লাগতে ভালোবাসা এ মনে জাগছে/এই আমি উড়ছি, তুমি আছো থেমে/দেখো আমি পুড়ছি প্রথম কোন প্রেমে’ কথায় সাজানো গানটিও দর্শকের মন ছুঁয়েছে। গানটিতে সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন তাহসিন আহমেদ।


নাটকটি যৌথভাবে রচনা করেছেন ইফফাত আরা ইয়াসমিন ও জাকারিয়া শৌখিন।

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget