মে 2025

 


জয় দাবি করার মতো মানুষের অভাব হয় না, কিন্তু পরাজয় কেউ মেনে নিতে চায় না। পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাময়িক সংঘাতের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গেছে। দুই পক্ষই নিজেদের সফলতার গল্পগুলো জোরেশোরে প্রকাশ করছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তারা অনেকটাই নিশ্চুপ।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শনিবার নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পর ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের শিরোনাম ছিল, ‘পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করেছে।’ 

পরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, গত মাসে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত যে সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ‘সন্ত্রাসীদের’ একটি শক্ত বার্তা দিয়েছে।

অন্যদিকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর পাকিস্তান বাহিনীর ‘সফলতা’ উদ্‌যাপন করতে রাজপথে নেমে আসেন দেশটির মানুষ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমাদের যুদ্ধবিমানগুলো ভারতের বন্দুকগুলোকে যেভাবে থামিয়ে দিয়েছে, তা ইতিহাস থেকে শিগগিরই মুছে যাবে না।’

দুই দেশের পক্ষ থেকে যত সফলতা দাবি করা হোক না কেন, তাদের কারোরই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা একেবারেই কম নয়। 

ইসলামাবাদ এ নিয়ে উল্লাস করছে যে তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান। তবে ভারতের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে এখনো একটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের কথাও স্বীকার করা হয়নি।

যদিও এর আগে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, পাকিস্তান যখন ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছিল, তখন ভারতের ভূখণ্ডে দেশটির দুটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। ফরাসি গোয়েন্দাদের একটি সূত্রও সিএনএনকে জানিয়েছে যে তাদের তৈরি অন্তত একটি রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী।

এরই মধ্যে স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা নতুন কিছু ছবি প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। তাতে দেখা গেছে, একাধিক রানওয়ে ও রাডারব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষাবিষয়ক কর্মকর্তাদের দাবি, ক্ষয়ক্ষতির এই চিত্র পাকিস্তানের একাধিক সামরিক ঘাঁটির। সেখানে ব্যাপক হারে বিমান হামলা চালিয়েছিল ভারতের সামরিক বাহিনী।

ভারতের এমন বক্তব্যের পেছনে সম্ভবত তাদের জাতিগত আত্মমর্যাদা একটি কারণ। তারা এমনটি স্বীকার করতে চাইছে না যে যুদ্ধবিরতিটা তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র চাপিয়ে দিয়েছে। 

এ ছাড়া কাশ্মীর নিয়ে ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দ্বন্দ্ব সমাধানেও আগ্রহ দেখিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন পরিকল্পনাকে ইসলামাবাদ স্বাগত জানালেও, চুপ রয়েছে নয়াদিল্লি।


 


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে প্রথমবারের মতো নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়ল দেশের প্রাচীনতম এ দলটি।

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

সোমবার (১২ মে) রাতে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই দিনের আন্দোলনের মুখে গত শনিবার (১০ মে) জরুরি বৈঠকে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (১১ মে) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্তের গেজেট পেলেই আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব। ’

সোমবার সকালে কমিশন সভায় বসেন সিইসি। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সূর্য উঠলে পরিষ্কার হয়ে যাবে। গেজেট এখনো পাইনি। পেলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’

বিকেলে সরকার আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপর চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক করে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। সিইসির সঙ্গে ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম, রহমানেল মাসউদ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদ অংশ নেন।

পরে রাতে সাড়ে নয়টার দিকে ইসি সচিব আখতার আহমেদ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিতের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ’

এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ এর সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, “সরকার যুক্তিসঙ্গতভাবে মনে করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা-১৮(১) অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ | 

এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা দরকার। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। ”

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নির্বাচনমুখী দলগুলোর মাঝে নিবন্ধন প্রথা চালু করে ইসি। সে বছর ৩ নভেম্বর ছয় নম্বর দল হিসেবে নিবন্ধন পায় দেশের প্রাচীনতম এ দলটি। এর আগে কখনো নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়ার মতো অবস্থায় পড়েনি আওয়ামী লীগ।

এ পর্যন্ত ৫৫টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তী সময়ে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। দলগুলো হলো- জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। 

এবার সরকারের আদেশে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় নির্বাচনে নিজ দলের প্রতীকে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকলো ৪৯টি দলের।

সূত্র : বাংলা নিউজ ২৪


 

ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে সবচেয়ে বেশিদিন ধরে অস্বস্তির কারণ হয়ে থেকেছে যে বিষয়টি, সেটি নি:সন্দেহে ফারাক্কা বাঁধ। ভারতে এটির পোশাকি নাম 'ফারাক্কা ব্যারাজ প্রজেক্ট', এবং বহু আলোচনা ও বিতর্ক পেরিয়ে চলতি বছরের এই মে মাসে প্রকল্পটি পঞ্চাশ বছর পূর্ণ করছে।

বিগত অর্ধশতাব্দী ধরে ফারাক্কা নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান অভিযোগ ছিল এই ফারাক্কার ফলেই প্রমত্তা পদ্মা শুকিয়ে গেছে। অন্য দিকে ভারত বরাবর যুক্তি দিয়ে এসেছে কলকাতা বন্দরকে রক্ষা করার জন্য ফারাক্কা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না!

ফারাক্কা চালু হওয়ার দু'দশকেরও বেশি সময় পর ১৯৯৬তে ভারত ও বাংলাদেশ যে ঐতিহাসিক গঙ্গা জলচুক্তি স্বাক্ষর করে, তাতে অবশ্য ভাগীরথী ও পদ্মায় গঙ্গার জল ভাগাভাগি নিয়ে একটা ফর্মুলায় দুই দেশ একমত হতে পেরেছিল।

তিরিশ বছর মেয়াদি সেই চুক্তির কার্যকালও প্রায় শেষের পথে, চুক্তির নবায়ন নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে। তবে ফারাক্কা নিয়ে বিতর্ক, বিরোধ বা দোষারোপের পালা কিন্তু কখনওই থামেনি।

তবে ফারাক্কার জন্যই পদ্মার দু'কূলে মানুষের জীবন-জীবিকা আজ বিপন্ন বলে যেমন বাংলাদেশের অভিযোগ – তেমনি ভারতেও কিন্তু ফারাক্কার সমালোচনা কম নয়।

যেমন মাত্র কয়েক বছর আগেই ফারাক্কা ব্যারাজ ভেঙে দেওয়ারও দাবি তুলেছিল বিহার সরকার, যে রাজ্যটির অভিযোগ প্রতি বছর ফারাক্কার কারণেই তাদের বন্যায় ভুবতে হয়। ফারাক্কার উজানে ও ভাঁটিতে গঙ্গার ভাঙনও ওই এলাকার মানুষের জন্য খুব বড় সমস্যা।

তা ছাড়া অনেক বিশেষজ্ঞই মানেন কলকাতা বন্দরকেও সেভাবে বাঁচাতে পারেনি ফারাক্কা – যে কারণে উপকূলের কাছে তৈরি করতে হয়েছিল আর একটি স্যাটেলাইট বন্দর হলদিয়া।

তাহলে আজ ৫০ বছর পরে এসে ফারাক্কার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভারত ঠিক কী ভাবছে? পাশাপাশি, ফারাক্কা প্রকল্পটাতেই বা তখন ঠিক কী করা হয়েছিল এবং সেগুলো কী ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি করেছে?

ফারাক্কা ব্যারাজ প্রোজেক্ট বা এফবিপি-র সার্ধশর্তবর্ষপূর্তিতে সরেজমিনে ফারাক্কা ও আশেপাশের এলাকায় এবং কলকাতা বন্দরে গিয়ে ঠিক এই বিষয়গুলোতেই নজর দিয়েছে বিবিসি বাংলা – এই প্রতিবেদনে থাকছে তারই সারাংশ।

ফারাক্কা থেকে খাল কাটলে দৈর্ঘ্য অনেক কম হবে বলে অবশেষে ফারাক্কাকেই এই কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয়।

স্বাধীন ভারতে ১৯৬১ সালে অবশেষে সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়, আর ১৯৭৫ সালে এসে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন ফারাক্কা ব্যারাজ।

প্রকল্পের কাজ অবশ্য তারও বছরকয়েক আগেই প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু একাত্তরে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম ফারাক্কার কমিশনিং পিছিয়ে দিয়েছিল বলে অনেকেই মানেন।

ফারাক্কার কাজ যখন শুরু হয়, তখন গঙ্গার ভাঁটিতে ছিল 'শত্রু দেশ' পূর্ব পাকিস্তান – কিন্তু রাতারাতি সেখানে একটি 'বন্ধু দেশ' চলে আসার ফলে ফারাক্কায় একতরফাভাবে গঙ্গা থেকে জল প্রত্যাহার ভারতের জন্য বিড়ম্বনার কারণ হয়ে উঠেছিল।

যদিও অবশেষে ১৯৭৫-এর গোড়ায় এসে ইন্দিরা গান্ধী শেখ মুজিবের সঙ্গে একটা বোঝাপড়ায় আসতে সক্ষম হন – ঠিক হয় এপ্রিল-মে মাসে প্রতি দশদিন অন্তর গঙ্গা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল সরানো হবে। সেই 'পরীক্ষা' অবশ্য পরেও আরও বহু বছর ধরে চলতে থাকে।

সে বছরের মে মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে ফারাক্কার উদ্বোধন করেন দেশের সেচমন্ত্রী জগজীবন রাম, পরবর্তী পঞ্চাশ বছরে যা কয়েক কোটি কিউসেক বাড়তি জল কলকাতায় এনে ফেলেছে!

ভূতাত্ত্বিক ও নদী গবেষক ড: পার্থসারথি চক্রবর্তী বলছিলেন, "কলকাতা বন্দরে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত কিন্তু আমাদের নাব্যতা (নেভিগেবিলিটি) ছিল, ২৬ ফুট ড্রাফট ছিল। এবং তাতে ২৯১ দিন এই বন্দরে জাহাজ ঢুকত, মানে ওই ২৬ ফুট ড্রাফটের জাহাজ ঢুকত। ১৯৬০ সালের পর থেকে কিন্তু মারাত্মক অবস্থা হয়।"

"এখন এই ফারাক্কা অঞ্চল কেন? ফারাক্কা অঞ্চলকে ব্যারাজ করার জন্য বাছা হলো, তার কারণ সেখানে একশো বছরের মধ্যে নদী নড়াচড়া করেনি, তার ব্যাঙ্কের মধ্যেই ছিল। এবং ওই ব্যারাজটা ওইখানে করলে, জলটা, ব্যারাজটার ঠিকমতো স্টেবিলিটি থাকবে।"

তিনি আরও জানাচ্ছেন, ফারাক্কায় এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, যাতে কলকাতায় সম্পূর্ণ 'সিল্ট-ফ্রি' বা পলিমুক্ত জল সরবরাহ করা যায়।

"তার জন্য ওখানে 'ছাঁকনি' দেওয়া আছে, যে কারণে ফারাক্কার জল কলকাতায় পানীয় জল হিসেবেও সাপ্লাই দেওয়া হয়", বলছিলেন মি চক্রবর্তী।


 


ভারত এবং পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে গত কয়েকদিনের সংঘর্ষ আর সংঘাতে তুরস্ক খোলাখুলিভাবেই পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে, আর ইসরায়েল সমর্থন দিয়েছে ভারতকে।

তবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পর তুরস্ক এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বলেছে দুই দেশের উচিত এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সমস্যা সমাধানে সুস্থ ও সরাসরি আলোচনা শুরু করা।

কিন্তু পাক-ভারত সংঘর্ষ চলাকালে যখন বিশ্বের প্রায় সব দেশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে, সেসময় তুরস্ক এবং ইসরায়েল নিজেদের ইচ্ছামতন পক্ষ অবলম্বন করেছে।

অন্যদিকে, পাকিস্তান বলেছে, ভারত ইসরায়েলি ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালাচ্ছে

চলতি সপ্তাহে তুরস্কের বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০ জেট পাকিস্তানে অবতরণ করেছে। তুরস্ক বলেছে, সেটি জ্বালানি তেল নেয়ার জন্য এসেছে।

এর আগে তুরস্কের একটি যুদ্ধ জাহাজ করাচি বন্দরে নোঙর করেছে, যা বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে পাঠানো হয়েছে বলে তুরস্ক জানিয়েছে।

শুক্রবার ভারতের সেনাবাহিনী বলেছে, বৃহস্পতিবার পাকিস্তান ৩০০ থেকে ৪০০ তুর্কি ড্রোন ব্যবহার করে ভারতের বিভিন্ন শহরে হামলা চালিয়েছে।

ভারতের সাথে তুরস্কের সম্পর্কের অস্বস্তি আরো বোঝা যায় এ থেকে যে ক্ষমতা গ্রহণের পর এ পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কখনো তুরস্ক সফর করেননি।

সৌদি আরবে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত তালমিজ আহমেদের কাছে বিবিসি প্রশ্ন রেখেছিল, তুরস্ক কেন রাখঢাক ছাড়াই পাকিস্তানকে সমর্থন দিচ্ছে?

তালমিজ আহমেদ বলেছেন, "পাকিস্তানের সাথে তুরস্কের মতাদর্শিক মিত্রতা রয়েছে। তাছাড়া স্নায়ুযুদ্ধের সময় তুরস্ক এবং পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল।''

তাদের নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতাও খুবই গভীর ও পরীক্ষিত। পাকিস্তানের অনেক জেনারেলের তুরস্কের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেড়েছে।"

"আমার মনে হয়, এরদোয়ান পাকিস্তানের সাথে তার পুরনো বন্ধুত্ব ঝালাই করছেন। আর এরদোয়ান নিজেকে একজন ইসলামিস্ট নেতা হিসেবে গড়ে তুলেছেন এবং ইসলামি ইস্যুগুলোকে গুরুত্ব দেন তিনি।

এরদোয়ান প্রায়ই কাশ্মীর নিয়ে কথা বলেন এবং একে একটি ইসলামি ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেন। পাকিস্তানের পক্ষ তুরস্ক নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছে।"

তালমিজ আহমেদ আরো বলেন, "এরদোয়ান তুরস্কের ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধর্মের বিষয়টি গুরুত্ব পায়।

যদিও ১৯৫০ সাল থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক, কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে সে সম্পর্ক গভীরতা পায় এরদোয়ানের সময়ই এবং এখন এ সম্পর্ক বেশ দৃঢ়।"

দুই দেশের সম্পর্ক এখনো পর্যন্ত আদর্শিক। তবে, কোন রকম পারস্পরিক সুযোগসুবিধার আদানপ্রদান ছাড়া দুই দেশের এ সম্পর্ক কি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে?

সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরে ভারতের রাষ্ট্রদূত নভোদ্বীপ সুরিকে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "তুরস্ক আর পাকিস্তানের মধ্যে কেবল মতাদর্শিক নৈকট্যই নয়, বরং পাকিস্তানের সামরিক অস্ত্রশস্ত্রের পুরো বাজার দখলে নিতে চাইছে তুরস্ক।"

তাছাড়া তুরস্ক দীর্ঘদিন ধরে ইসলামি বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী, যা সৌদি আরবের বাধার মুখে সম্ভব হয়নি।

ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র দুইটি মসজিদ - মসজিদ আল-হারাম বা কাবা শরীফ এবং আন-নাবাওয়ি বা মসজিদে নববির অবস্থান সৌদি আরবে।

অন্যদিকে, অটোমান সাম্রাজ্যের বিপুল ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন রয়েছে তুরস্কে।

সৌদি আরব ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসিকে নিয়ন্ত্রণ করে, এর বিপরীতে একটি সংগঠন করতে চেয়েছিলেন এরদোয়ান, যা শেষ বিচারে সফল হয়নি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়িপ এরদোয়ান বৃহস্পতিবার বলেছেন, পাকিস্তানের মানুষ তার ভাইয়ের মত এবং তিনি তাদের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।


 


লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এস.এইচ. পানাগ 'দ্য প্রিন্ট'-এর এক প্রবন্ধে লিখেছিলেন, পাকিস্তান একটি পরমাণু অস্ত্রসমৃদ্ধ দেশ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর সীমিত সামরিক পদক্ষেপের জবাব দেওয়ার জন্য তাদের যথেষ্ট প্রচলিত সামরিক শক্তি রয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেছিলেন, "ভারতের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন বা বিমানবাহিনীর ক্ষেত্রে যতই সক্ষমতা থাকুক, প্রযুক্তিগতভাবে ভারত এখনো এতটা এগিয়ে নেই যে কোনো পাল্টা ক্ষতি ছাড়াই পাল্টা সার্জিকাল স্ট্রাইক চালাতে পারবে। পাকিস্তানের পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এবং আমাদের সে প্রস্তুতি থাকা উচিত।"

ভারতের বিমানবাহিনীর বহরে সবচেয়ে বড় সংযোজন ফ্রান্স থেকে আনা রাফাল যুদ্ধবিমান। ভারত এর আগে ৩৬টি রাফাল বিমান কেনার কথা জানিয়েছিলো।

সবশেষ পহেলগাম হামলার পর নৌবাহিনীর জন্য আরও ২৬টি রাফাল বিমান কেনার চুক্তি হয়েছে যেগুলো ২০২৮ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে সরবরাহ করার কথা।

এই চুক্তি ৬৪ হাজার কোটি রুপির অর্থাৎ প্রায় ৭৫০ কোটি ডলার মূল্যের বলে জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি বিমানের জন্য গড়ে ২৮.৮৫ কোটি ডলার খরচ করতে হবে ভারতকে।

২০১৬ সালের চুক্তির ৩৬টি বিমান নিয়েও ভারতে বেশ বিতর্ক হয়েছিল। বিদেশি কোম্পানিগুলোকে সাধারণত ভারতে ব্যবসা করতে ভারতীয় কোম্পানির সাথে অন্তত ৩০% বিনিয়োগ করে পার্টনারশিপে যেতে হয়।

২০১৮ সালে তৎকালীন ফ্রেঞ্চ প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে নরেন্দ্র মোদী ফ্রান্সের ডিসল্ট এভিয়েশনকে ভারতের অনিল আমবানির রিলায়েন্স ডিফেন্স কোম্পানির সাথে পার্টনারশিপে চাপ দিয়েছেন। ডিসল্ট তৎকালীন প্রায় ৮৭০ কোটি ডলারের ৫০% বিনিয়োগে সম্মত হয়।

সেসময় দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও আদালত তা খারিজ করে দেয়।

সক্ষমতার দিকে দেখলে আকাশে ১৫০ কি.মি. দূরত্বে এবং আকাশ থেকে ভূমিতে ৩০০ কি.মি দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে সক্ষম রাফাল। দুই ইঞ্জিনের এই বিমান পারমাণবিক অস্ত্রও বহন করতে পারে।

রাফাল মূলত একই কোম্পানির তৈরি মিরাজ ২০০০-এর আধুনিক সংস্করণ এবং বর্তমানে ভারতের কাছে ৫১টি মিরাজ ২০০০ বিমান রয়েছে।

এই বিমানগুলো ৫ থেকে ৬ টন পর্যন্ত অস্ত্র বহন করতে পারে। ভারতে যে ড্রপ ট্যাংকের একটি টুকরোর ছবি প্রকাশিত হয়েছে সেটি মিরাজ ২০০০-এরও হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। মিরাজ সিরিজের কিছু বিমান পাকিস্তানেরও আছে বলে জানা যায়, যদিও সেগুলো প্রায় অকেজো।

ভারতের বিমানবাহিনীর অধীনে রয়েছে ৩১টি স্কোয়াড্রন, যেখানে প্রতিটি স্কোয়াড্রনে ১৭ থেকে ১৮টি যুদ্ধবিমান থাকে। অপরদিকে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর রয়েছে ১১টি স্কোয়াড্রন।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের কাছে মোট ২ হাজার ২২৯টি বিমান রয়েছে, যেখানে পাকিস্তানের আছে ১ হাজার ৩৯৯টি।


 


বাংলাদেশে গত বছরের জুলাই অগাস্টের আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে 'শাহবাগ ব্লকেড ও গণজমায়েত' কর্মসূচি পালন করছে সদ্যগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি সহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যে ক্ষমতাচ্যুত করার নয়মাস পরে এই দাবি নিয়ে তারা রাস্তায় নেমেছে কেন?

জুলাই গণ অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনের পতন হয় গত বছরের পাঁচই অগাস্ট। পরে সেই অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্ব গঠন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি নামের রাজনৈতিক দল।

শুরু থেকেই তারা ছাত্র জনতার আন্দােলনে হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধের বিচার ও তার দায়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছে। 

সেই দাবিতেই বৃহস্পতিবার অনেকটা আকস্মিকভাবে বৃহস্পতিবার থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে তাদের লাগাতার কর্মসূচি পালনের প্রেক্ষাপটে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন।

পরবর্তীতে যমুনার সামনে থেকে সরে গেলেও ঢাকার শাহবাগে জমায়েতের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।

তাদের কর্মসূচি শুরুর আগের দিন বুধবার মধ্যরাতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সময়ের সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ থাইল্যান্ড যান। তার দেশ ছাড়ার ঘটনার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার দিনভর সামাজিক মাধ্যমে নানা রকম বক্তব্য তুলে ধরতে দেখা যায় এনসিপি'র নেতাদের।

এরপর বৃহস্পতিবার মধ্য রাতেই এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে কয়েকশাে নেতা-কর্মী নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়। পরে গভীর রাতে সেই অবস্থান কর্মসূচিতে এনসিপির শীর্ষ নেতারা এবংইসলামপন্থী বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা যােগ দেন।

বৃহস্পতিবার রাতেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপােরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা সেলিনা হায়াত আইভীকে গ্রেফতারের জন্য তার বাসায় পুলিশ যায়। শুক্রবার ভোরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

একইসঙ্গে এনসিপিসহ বিভিন্ন দল যখন অবস্থান বা জমায়েত অব্যাহত রেখেছে, এ পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকেএকটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তাাতে বলা হয়,আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

আবার দাবি পূরণে রাস্তায় নেমে আসতে যারা আহবান করেছেন তারা সরকারেরই ঘনিষ্ঠ হিসেবে জনমনে পরিচিত, এমনকি সরকারে অন্তত দুজন উপদেষ্টা আছেন যারা জুলাই অগাস্টের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়াদেরই অংশ ছিলেন। বাকীরাও সেই আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থন যুগিয়েছিলেন। এনসিপির প্রধান নেতাও কিছুদিন আগে সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।


 

আগস্টে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা ভারতের। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রোহিত শর্মা–বিরাট কোহলিদের সফরটি আটকে যেতে পারে। স্থগিত হয়ে যেতে পারে সেপ্টেম্বর সূচিতে থাকা এশিয়া কাপও।

ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বাংলাদেশ সফর ও এশিয়া কাপের বিষয়ে নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে বিসিসিআই। দুটি ক্রিকেট ইভেন্টেই ভারত অংশ নেবে না। ওই সময়ে স্থগিত হয়ে যাওয়া আইপিএলের বাকি ম্যাচ আয়োজন করা হতে পারে।

ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে আইপিএলের ১৮তম আসর স্থগিত করা হয়েছে আজ। ভারতের ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে, এই স্থগিতাদেশ এক সপ্তাহের জন্য। 

তবে শিগগিরই ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্টটি চালুর সম্ভাবনা ক্ষীণ। বৃহস্পতিবার রাতে ধর্মশালায় পাঞ্জাব–দিল্লি ম্যাচের সময়ের ঘটনায় ক্রিকেটাররা অস্বস্তির মধ্যে আছেন।

গত মাসে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলার জেরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে—এমন শঙ্কার মধ্যে বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় আইপিএলের ম্যাচ খেলতে নামে পাঞ্জাব কিংস–দিল্লি ক্যাপিটালস।

 আরো পড়ুন :


 


ভারতের কতজন সেনা নিহত হয়েছে, তা নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যেই দ্বিমত তৈরি হয়েছে।

এর আগে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এই সপ্তাহের শুরুতে দাবি করেন, ৪০ থেকে ৫০ জন সৈন্য নিহত হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত প্রায় ২৫ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে তিনি ধারণা করেন।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী এখন সাম্প্রতিক দিনগুলিতে নিহত ভারতীয় সৈন্যের সংখ্যা সম্পর্কে সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া মন্তব্যের বিরোধিতা করছে।

সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র এখন বলছেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে গুলি চালানোর ফলে কত ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে, তার কোনো আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান তাদের কাছে নেই এবং মন্ত্রীরা গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘কথাবার্তা’র উপর ভিত্তি করে তাদের পরিসংখ্যানের ধারণা দিচ্ছেন।

তিনি ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআরটিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি সাক্ষাৎকারের বক্তব্যেরও বিরোধিতা করেছেন তিনি।


 


দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বিশ্বের প্রথম ড্রোন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় ভূখণ্ড এবং ভারত-শাসিত কাশ্মীরে তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে। এই অভিযোগ ইসলামাবাদ দ্রুত অস্বীকার করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরস্পরের বিরুদ্ধে আক্রমণগুলো কয়েক দশক ধরে চলা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একটি বিপজ্জনক নতুন পর্যায়কে তুলে ধরে। কারণ, উভয় পক্ষই অস্থিতিশীল সীমান্তজুড়ে কেবল কামান নয়, 'চালকবিহীন অস্ত্র' দিয়ে হামলা করছে।

ওয়াশিংটন এবং অন্যান্য বিশ্বশক্তি যখন সংযমের আহ্বান জানাচ্ছে, তখন এই অঞ্চলটি উত্তেজনার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। নীরব, দূরবর্তী এবং অস্বীকারযোগ্য ড্রোনের মাধ্যমে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হচ্ছে।

মার্কিন নৌ-যুদ্ধ কলেজের অধ্যাপক জাহারা মাতিসেক বিবিসিকে বলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত একটি নতুন ড্রোন যুগে প্রবেশ করছে - যেখানে 'অদৃশ্য চোখ' এবং ড্রোনগুলো 'নির্ভুলতা বৃদ্ধি' বা 'সংযম নির্ধারণ' করতে পারে।

বুধবার সকাল থেকে পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতীয় বিমান হামলা এবং সীমান্তের ওপার থেকে গুলিবর্ষণে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ৩৬ জন নিহত এবং ৫৭ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে পাকিস্তানের গোলাগুলিতে কমপক্ষে ১৬ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। 

ভারত দাবি করেছে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ছিল গত মাসে পহেলগামে ভারতীয় পর্যটকদের ওপর একটি মারাত্মক সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ। তবে এই হামলায় ইসলামাবাদ কোনো ভূমিকা অস্বীকার করেছে। একই সঙ্গে ভারতের হামলাকে 'সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন' ও 'যুদ্ধের কর্মকাণ্ড' উল্লেখ করে প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে, তারা করাচি, লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডিসহ বিভিন্ন শহরে ২৫টি ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

ইসরায়েলি-তৈরি 'হারোপ' ড্রোনগুলো - প্রযুক্তিগত এবং অস্ত্র-ভিত্তিক পাল্টা ব্যবস্থা উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করে ধ্বংস দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। ভারত দাবি করেছে, তারা বেশ কয়েকটি পাকিস্তানি বিমান প্রতিরক্ষা রাডার এবং সিস্টেমকে নিষ্ক্রিয় করেছে, যার মধ্যে লাহোরে একটিও রয়েছে। তবে ইসলামাবাদ এটি অস্বীকার করেছে।

লেজার-নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা, ড্রোন এবং মনুষ্যবিহীন বিমানবাহী যান (UAV) আধুনিক যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এটি সামরিক অভিযানের নির্ভুলতা এবং দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে। এগুলো বিমান হামলার জন্য সমন্বয় সাধন করতে পারে অথবা, যদি সজ্জিত থাকে তাহলে সরাসরি লেজার-নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করতে পারে এবং তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধে সহায়তা করতে পারে।

ড্রোনগুলোকে শত্রুর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ছদ্মবেশ তৈরি বা দমন করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, শত্রুর রাডার ধ্বংস করতে বিতর্কিত আকাশসীমায় উড়ে যেতে পারে। অধ্যাপক মাতিসেক বলেন, ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয়ই তাদের যুদ্ধে এটি এভাবেই করে। 

লক্ষ্যবস্তু তৈরি এবং ট্রিগার করা - এই দ্বৈত ভূমিকা - মানববাহী বিমান ঝুঁকি না নিয়ে শত্রুর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অবনমিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের ড্রোন বহর মূলত ইসরায়েলি-নির্মিত গোয়েন্দা ড্রোন। যেমন: আইএআই সার্চার এবং হেরন, এর সঙ্গে হার্পি এবং হারোপ যুদ্ধাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। ড্রোনগুলো ক্ষেপণাস্ত্র হিসাবে কাজ করে, স্বায়ত্তশাসিত গোয়েন্দা এবং নির্ভুল আঘাত করতেও সক্ষম।


Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget