Latest Post



বিপর্যয়ের পরও মানবিকতার দৃষ্টান্ত দেখালেন স্মার্ট গ্রুপের মালিক মুজিবুর রহমান


কঠোর শ্রম-পরিশ্রম ও সময় দিয়ে তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপ।কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন শত শত বেকার যুবকের। কিন্তু হঠাৎ একটি দূর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেছে। এক নিমিষেই শত শত মানুষের আয় রোজগারের কর্মস্থলটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সর্বনাশা আগুনে কেড়ে নিয়েছে (আনুমানিক) ৪৯টি তরতাজা প্রাণ আর শত মানুষের স্বপ্ন। নিঃস্ব করে দিলো কয়েক'শ পরিবারকে। মানুষ পোড়ার গন্ধ আর দগ্ধদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে সীতাকুণ্ডের বাতাস। শোকে বিহ্বল স্বজনহার পরিবার। 

অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনায় নিজ কোম্পানির হাজার কোটি টাকার আর্থিক বিপর্যয় হওয়ার পরও ঢাকার রানা প্লাজা কিংবা আশুলিয়ার তাজরীন গার্মেন্টের মালিকের মতো না পালিয়ে হতাহতদের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ ও ক্ষতিগ্রস্থদের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে এবং চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করে পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে 'নৈতিকতা ও মানবিকতার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত দেখালেন বিএম কনটেইনার ডিপোর পরিচালক ও স্মার্ট গ্রুপের মালিক মুজিবুর রহমান। 

বলছিলাম গত শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায় বিস্ফোরণে ঘটে যাওয়া বিএম ডিপোর পরিচালক ও স্মার্ট গ্রুপের মালিক মুজিবুর রহমান সিআইপির কথা।

শনিবার রাতে তড়িৎ এক বিবৃতিতে বিএম কনটেইনার ডিপোর পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে, এমন সংকটে সবাইকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে পাশে থাকার আহ্বান জানান মুজিবুর রহমান। 

বিএম কনটেইনার ডিপোর পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘নৈতিকতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হতাহতদের পাশে থাকব। আহতরা যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা পায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় আমরা বহন করব। এ দুর্ঘটনায় যারাই হতাহত হয়েছে, তাদেরকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। পাশাপাশি সকল হতাহতের পরিবারের দায়িত্ব নেয়া হবে।’


ঘোষণা দিয়েছেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনে নিহত ফায়ার সার্ভিসের প্রত্যেক কর্মীর পরিবারকে ১৫ লাখ, অঙ্গহানি হওয়া ফায়ার সার্ভিসের প্রত্যেক কর্মীকে ১০ লাখ, যেসব ফায়ার ফাইটার আহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে ৭ লাখ টাকা এবং যেসব ডিপো কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন প্রত্যেককে ১০ লাখ, অঙ্গহানি হয়েছে এমন কর্মকর্তাদের ৬ লাখ ও আহত ডিপো কর্মকর্তাদেরকে ৪ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্মার্ট গ্রুপের মালিক মুজিবুর রহমান।

এদিকে আগামী রবি-সোমবারের মধ্যেই প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে ঘোষিত ক্ষতিপূরণের টাকা নিহত ও আহত পরিবারে পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন মুজিবুর রহমান সিআইপির পরিচালনাধীন বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ। 

দেশবাসীর প্রতি স্মার্ট গ্রুপের মালিক মুজিবুর রহমান শুধু একটাই আহবান জানান, এমন সংকটে সবাইকে 'মানবিক দৃষ্টিকোণ' থেকে পাশে থাকার।


আরো পড়ুন:

 




এশিয়ার সর্ববৃহৎ গাছে থোকায় থোকায় সুর্যপরী আম, ২ লাখ টাকা বিক্রির আশা ! 


জেলার পাঁচটি উপজেলায় ছড়িয়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী অসংখ্য দর্শনীয় বিষয়। এর মধ্যে রয়েছে আলোচিত ঐতিহ্যবাহী ২৩০ বছরের পুরোনো সূর্যপুরী আমগাছ। ফলে এটি এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় আমগাছের স্বীকৃতি পেয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর সেই আম গাছ থেকে ৮০ থেকে ১০০ মণ আম সংগ্রহের আশা করা হচ্ছে। সুর্যপুরী জাতের এই আম গাছের আম প্রতি কেজি সর্বনিম্ন ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। সে হিসাবে ৮০ থেকে ১০০ মণ আম ২ লাখ টাকার বেশি বিক্রি করা যাবে। 

ভারতের সীমান্তবর্তী উপজেলা বালিয়াডাঙ্গীর হরিণমারী (নয়াপাড়া) গ্রামে বিশাল এ আমগাছটির অবস্থান। প্রায় ২ দশমিক ৫ বিঘাজুড়ে বিস্তৃত সূর্যপুরী গাছটি। প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ফুট উঁচু এ গাছের পরিধি প্রায় ৩৫ ফুট।

গাছটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকা লোকজন, গাছের মালিক ও দেখতে আসা দর্শনার্থীদের মতে গত ২০ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি আম ধরেছে গাছটিতে। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার না হলে প্রায় ৮০-১০০ মণ আম ফলন পাওয়া বলে আশা করছেন গাছটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা লোকজন। 



সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, প্রকৃতির আপন খেয়ালে বেড়ে ওঠা ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে আজও। গাছটির বিশালাকৃতির কারণে দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটি বিশাল একটি ঝাউগাছ। কিন্তু কাছে গেলে ধারণা বদলে যায় সবার। দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এই আমগাছ দেখার জন্য এখানে ভিড় জমায়।


বর্তমানে থোকায় থোকায় আম ধরেছে গাছটির ডালে ডালে। আমগুলো রক্ষণাবেক্ষণের ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছটি লিজ গ্রহণকারী সলেমান আলী নামে স্থানীয় এক আম ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলে। 

স্থানীয়রা গাছটির সঠিক কোনো তথ্য দিতে না পারলেও তাদের মতে, সূর্যপুরী জাতের এত বড় আমগাছ বাংলাদেশের আর কোথাও নেই। তাই প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন গাছটি একনজর দেখার জন্য। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি থাকে বেশি। জনপ্রতি দর্শনার্থীদের কাছে নেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা করে টিকিট। টিকিট বিক্রি থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে গাছটির পরিচর্যা করা হয়।



আম ব্যবসায়ী সলেমান আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩ বছরের জন্য আম গাছটি তিনি লিজ নিয়েছেন দেড় লাখ টাকায়। চলতি মৌসুমেই লিজের মেয়াদ শেষ হবে। গেল দু বছরে গাছে ভালো আম না আসায় বেশি লাভ করতে পারেনি। তবে এ বছর পুরো গাছে আম ধরায় আশায় বুক বেঁধেছেন তিনি। 


গাছে থাকা শেষ পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার না হলে কমপক্ষে ৮০ থেকে ১০০ মণ আম পাওয়া যাবে। বাজারে এই আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সব খরচ বাদ দিয়ে দুই লাখ টাকা বেশি আম বিক্রি করতে পারব।’ 


সূর্যপুরী গাছের মালিক সাইদুর রহমান বলেন, গাছটি আমার বাবার দাদার (প্রপিতামহ) লাগানো। এরপর থেকে আমাদের পরিবারের লোকজনই পরম্পরা এটাকে দেখাশোনা করে। ধীরে ধীরে গাছটি আকারে বাড়তে শুরু করে। গাছটির অদ্ভুত দিক হলো এর ডালগুলো। মূল কাণ্ড থেকে ডাল বেরিয়ে একটু ওপরে উঠে আবারও তা মাঠিতে নেমে গেছে। তারপর আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওপরে উঠেছে। দেখতে অনেকটা নদীর ঢেউয়ের মতো উঁচু-নিচু।

গাছের মূল কাণ্ড থেকে বেরিয়েছে ২০টির মতো শাখা। গাছটির শাখাগুলোর দৈর্ঘ্য আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ ফুটের মতন। গাছের প্রতিটি ডালে চাইলে অনায়াসে হাঁটাচলা ও বসা যায়।

দিনাজপুর থেকে পরিবারসহ গাছটি দেখতে এসেছেন জয়নুদ্দিন নামের এক দর্শনার্থী। তিনি বলেন, অনেকের মুখে শুনেছি এই গাছটির কথা। আজ পরিবারসহ এলাম। আসলেই গাছটি অনেক সুন্দর। গাছটির ডালপালা অনেক বড়। অনেক ভালো লাগল গাছটি দেখে। 



সূর্যপুরী জাতের এই গাছটির আম খুবই সুস্বাদু, মিষ্টি ও দেশের ব্যাপক পরিচিতি হওয়ায় বেশ চাহিদা রয়েছে রয়েছে এই গাছের আমের। গাছ থেকে আম ভাঙার আগেই অনেকেই অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকেন লিজ নেওয়া ব্যক্তিকে। তা ছাড়া স্থানীয় সরকারি অফিসে কর্মরত অফিসারগণ নিজ নিজ এলাকায় এই আম কিনে পাঠান। 


বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) যোবায়ের হোসেন জানান, সুর্যপুরী আমের উপজেলা হিসেবে পরিচিত বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা। আর এই উপজেলাতেই রয়েছে প্রায় ২৩০ বছরের পুরোনো এশিয়ার সর্ববৃহৎ সুর্যপুরী আমগাছটি। স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী বয়স হলেও গাছটিতে এবার তুলনামূলক ভাবে বেশি আম ধরেছে। যা সবাইকে অবাক করেছে। 

ইউএনও আরও জানান, গাছটির পাশেই একই আঙ্গিকে আরও একটি সুর্যাপুরী আমগাছ বড় হচ্ছে। যেহেতু বড় গাছটির বয়স হয়ে গেছে। তাই ছোট গাছটিকেও যত্নসহকারে বড় করে তোলে বড় গাছটির যে সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য তা ধরে রাখে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে গাছের মালিক ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা লোকজনকে।

যেভাবে যাবেন...

ঠাকুরগাঁও শহর থেকে বালিয়াডাঙ্গীর দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। রাণীশংকৈল থেকে ৩০ কিলোমিটার আর বালিয়াডাঙ্গী থেকে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে হানিফ,শ্যামলি,নাবিল , তাজ সহ বিভিন্ন পরিবহনে ঠাকুরগাঁও যেতে পারবেন। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁও থেকে বালিয়াডাঙ্গী যেতে লোকাল বাস সার্ভিস আছে। লালমনিরহাট বা ঠাকুরগাঁও রুটে চলাচলকারী ট্রেনেও যেতে পারেন। বাসভেদে ভাড়া পড়বে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। আর ট্রেনে ৬৫০ থেকে ১৬০০ টাকা। আর বিমানযোগে যেতে চাইলে ৩৬০০ টাকা সৈয়দপুর পর্যন্ত (টিকিটের দর ওঠানামা করে)। তারপর সৈয়দপুর থেকে বাসে ১০০ টাকা ভাড়া পড়বে। সবশেষ গাছটি দেখতে আপনাকে ২০ টাকায় টিকিট কাটতে হবে।


আরো পড়ুন:




 



নিজ কার্যালয়ে বন্ধুর গুলিতে প্রাণ হারালেন ডমিনিকানের পরিবেশমন্ত্রী


ডমিনিকান রিপাবলিকের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদবিষয়ক মন্ত্রী অরলান্দো হর্গে মেরা নিজ কার্যালয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। তাঁকে গুলি করেছেন তাঁরই এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ডমিনিকান রিপাবলিক সরকারের কর্মকর্তাদের বরাতে বিবিসি এসব তথ্য জানিয়েছে।


হামলার সময় ৫৫ বছর বয়সী মন্ত্রী হর্গে মেরা একটি বৈঠক করছিলেন। এ সময় কমপক্ষে ছয়টি গুলির শব্দ শোনা যায়। প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র বলেছেন, হত্যাকারীর নাম মিগুয়েল ক্রুজ। তিনি মন্ত্রীর বাল্যবন্ধু। তাঁকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। মন্ত্রীকে গুলি করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।

মন্ত্রী হর্গে মেরার পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, যে ব্যক্তি তাঁকে (অরলান্দো হর্গে মেরা) গুলি করেছেন, তিনি তাঁর বাল্যবন্ধু। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যে ব্যক্তি এ কাজ করেছেন, তাঁকে আমাদের পরিবার ক্ষমা করে দিচ্ছে। হর্গে মেরার একটি বড় গুণ ছিল তিনি ক্ষোভ পুষে রাখতেন না।’


২০২০ সালের জুলাই থেকে প্রেসিডেন্ট লুইস আবিনাদের প্রশাসনে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন হর্গে মেরা। এক টুইটার পোস্টে হর্গে মেরার শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবিনাদের। একজন ভালো বন্ধুকে হারিয়েছেন উল্লেখ করে আক্ষেপ জানান তিনি।

সরকারের উদ্ভাবনবিষয়ক মন্ত্রিপরিষদের পরিচালক বার্তোলোম পুজালস হর্গে মেরার মৃত্যুকে ট্র্যাজেডি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শান্তি বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ডমিনিকান রিপাবলিকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সালভাদর হর্গে ব্লানকোর ছেলে হর্গে মেরা। ক্ষমতাসীন মডার্ন রেভল্যুশনারি পার্টির (পিআরএম) প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যও তিনি। হর্গে মেরার স্ত্রী ব্রাজিলে ডমিনিকান রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত।


এ দম্পতির দুই ছেলে। তাঁদের একজনও মডার্ন রেভল্যুশনারি পার্টির (পিআরএম) আইনপ্রণেতা।


আরো পড়ুন:

 


বালিয়াডাঙ্গীতে মরা গরুর মাংস বিক্রির দায়ে ২ কসাইয়ের কারাদণ্ড 


ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মরা ব্রয়লার মুরগি ও মরা ছাগলের মাংস বিক্রির ঘটনার ১ মাস যেতে না যেতেই এবার মরা গরু জবাই করে মাংস বিক্রির সময় দুজনকে আটক করে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।

রবিবার (৫ জুন) রাত সাড়ে ১১টায় ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও বালিয়াডাঙ্গী ইউএনও যোবায়ের হোসেন 

এ রায় প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের শাহাপাড়া গ্রামের সলিম উদ্দীনের ছেলে রমজান আলী (৪৬) ও বিশ্রামপুর গ্রামের আব্দুল আলীর ছেলে পয়জার আলী (৪০)।


সহযোগী স্যানেটারী ইন্সপেক্টর আব্দুল গফুর জানান, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মটরা হাট থেকে একটি মরা গরু জবাই করার পর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের কাঁচকালী বাজারে ইজিবাইকে নিয়ে এসে গভীর রাতে কেটে মাংস বিক্রির চেষ্টাকালে স্থানীয়রা ইউএনওকে মুঠোফোনে অবগত করে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশসহ ইউএনও দুজনকে আটক করলেও মোস্তফা নামে একজন পালিয়ে যায়। তিনিই ওই গরুর মালিক ছিলেন বলে জানা গেছে।  

ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক যোবায়ের হোসেন জানান, জবাই করা পর গরুটি ইজিবাইকে নিয়ে এসে মাংস বিক্রির জন্য চেষ্টাকালে পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় দুজনকে আটক করা হয়। পরে তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করলে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

বালিয়াডাঙ্গী থানা পরিদর্শক (ওসি) খায়রুল আনাম ডন বলেন, আজ সোমবার (৬ জুন) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন কসাইকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


এর আগেও গত ২০ মে মরা ছাগল জবাই করে মাংস বিক্রির দায়ের নজরুল ইসলাম (৪৮) ওরফে ইদু নামে এক কসাই জেলে পাঠানো হয় এবং গত ১০ মে মরা মুরগির মাংস রান্না করে বিক্রি ও বিক্রির দায়ে হোটেল মালিক সেলিম উদ্দীনকে ৫ হাজার টাকা ও মাংস বিক্রেতা আব্দুলকে ১০ হাজার অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।


আরো পড়ুন:



ভ্যান চালকের মেয়ে কাকলী ফুটবল প্রশিক্ষণে যাচ্ছে পর্তুগাল! 


ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাঙাটুঙ্গী ইউনাইটেড মহিলা ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড় কাকলী আক্তার দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তিন মাস উন্নত ফুটবল প্রশিক্ষণের জন্য পর্তুগাল যাচ্ছেন কাকলী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙাটুঙ্গি ইউনাইটেড মহিলা ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক তাজুল ইসলাম।

রাণীশংকৈল উপজেলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাশেম ও বানেসার মেয়ে কাকলী আক্তার (১৬)। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট কাকলী। নিজস্ব বসতভিটা ছাড়া আবাদি কোনো জমি নেই কাকলীদের। ঋণের টাকায় একটি ভ্যান কেনেন তার বাবা। সেই ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে ভরণপোষণ। সামান্য আয় দিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব ছিলনা বলে অভাব অনটন লেগেই থাকতো সংসারে। কষ্ট করে সংসার চালিয়ে নিতেন কাকলীর মা বানেসা। দিন আনে দিন খায়, এমন পরিবারে অভাবের সাথে অশান্তি যোগ হয় যখন কাকলীর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে বসেন। সে মুহূর্তে আকাশ ভেঙ্গে পড়ে পরিবারটির ওপর। অভাবের সাথে অশান্তি যোগ হয়ে পরিবারের পরিবেশ বিষময় হয়ে ওঠে কাকলীর কাছে। এ অবস্থায় সংসারের হাল ধরতে এগিয়ে আসেন কাকলীর মা বানেসা বেগম। তিনি নিজের কাছে জমানো কিছু টাকা দিয়ে শুরু করেন চা বিক্রি। রাস্তার ধারে ছোট একটি দোকানে চা বিক্রি করেই পরিবার ও কাকলীর খরচের জোগান দিয়েছেন তিনি।

কয়েক বছর পর কাকলীর বাবা নিজ ভুল বুঝতে পেরে দ্বিতীয় সংসার ছেড়ে আবার ফিরে আসেন তাদের কাছে। পরে সব মেনে নিয়ে নতুন করে আবার সংসার চলা শুরু হয় তাদের। বর্তমানে অসুস্থ বয়োবৃদ্ধ বাবা চালান ভ্যান আর মা করছেন চা বিক্রি। তবে মেয়ের ভিনদেশে যাওয়ার কথা যেন সব কষ্ট ভুলিয়ে রেখেছে তাদের।

কাকলীর মা বানেসা বলেন, ‘মোর বেটি ফুটবল খেলে। তাতে নানান জনে নানা ধরনের খারাপ কথা কহে। খারাপ লাগিলে কান্নাকাটি করেছে ফের খেলিবা যাছে’। তিনি আরো বলেন “হামার থাকিবার জায়গা ছাড়া আর কিছু নাই। স্বামী ভ্যান চালায় আর মুই চা বিক্রি করু। এখন হামার বেটি বিদেশত যাছে, এইডা খুবে ভালো লাগেছে। সবাই মোর বেটির তানে দোয়া করিবেন”।


কাকলীর বাবা আবুল কাশেম বলেন, ‘আমি দিনমজুরি করে সংসার চালাতাম। পরে একটা ভ্যান চালানো শুরু করি। এখনো ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। আর কাকলীর মা চা বিক্রি করে। আমি বয়সের কারণে নানা রোগে ভুগছি। পায়ের সমস্যা লেগেই আছে। মেয়েটা বিদেশে যাচ্ছে প্রশিক্ষণে, এটি আমার কাছে অনেক আনন্দের।
যেখানে যাই সেখানকার লোকজন খোঁজখবর নেয়। চা খাওয়ায় আর কাকলীর গল্প করে। তখন বুকটা আনন্দে ভরে উঠে। আমার মেয়ের জন্য সকলে দোয়া রাখবেন।’


কাকলী আক্তার বলেন, ‘স্কুল পর্যায়ে যে বঙ্গমাতা ফুটবল খেলাগুলো হতো, সেখান থেকেই আমার শুরু। পরে আমার এক স্যার বললেন, আমি ফুটবলার হবো কি না। আমি বলেছিলাম, যদি ভালো সুযোগ পাওয়া যায় তাহলে হব। পরে তিনি আমাকে রাঙাটুঙ্গিতে যোগাযোগ করিয়ে দেন। আমি বাবা-মাকে বিষয়টি বলি। তারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন এবং ফুটবল কিনে দিয়েছেন। এখন দেশের বাইরে যাচ্ছি আরও উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য। এটি আসলে অনেক বড় আনন্দের খবর আমার কাছে। তবে এ আনন্দের পেছনে অনেক পরিশ্রম রয়েছে।


মেয়ে মানুষের কিসের ফুটবল খেলা। তাও আবার ছোট প্যান্ট আর গেন্জি পরিয়া। লাজ লজ্জা সব উঠে গেল। এইরকম নানা জনের নানা কটু কথা প্রতিনিয়ত শুনার লাগতো।’ সঙ্গে আড় চোখে মানুষের তাকানো, আড়ালের কটু কথা। ‘কেউ কেউ আবার মুখের সামনেই-কি দরকার মেয়ে হয়ে ফুটবল খেলার’ -এভাবে বলে বিব্রত অবস্থায় ফেলে দিত। মানুষের যেন নিত্য দিনের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এটি। তবে থেমে থাকেনি আমি। মানুষের কটু কথা থামাতে পারেনি আমার সফলতার পথচলা
মেয়ে হিসেবে ফুটবল খেলতে এসে নানা ধরনের কটু কথা শুনতে হয়েছে।’


কিছুদিন আগেও যারা কটু কথা বলতো এখন তাদের কথার ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। যারা বলেছিল তারাই এখন নিজের সন্তানদের মেয়ে ফুটবলার বানানোর স্বপ্ন দেখছেন। একসময় যারা অপমান করতো তারা এখন আসেন পরামর্শ নেওয়ার জন্য। কিভাবে আমার মত তাদের মেয়েও ফুটবলার হতে পারে।


এ প্রসঙ্গে রাঙাটুঙ্গি ইউনাইটেড মহিলা ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১১ জন ছেলে
ব্রাজিলে ও ১১ জন মেয়ে পর্তুগালে ফুটবল প্রশিক্ষণের জন্য যাচ্ছে। সেরা এগারোর মধ্যে আমাদের ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে একজন নির্বাচিত হয়েছেন। সে রাণীশংকৈল
রাঙাটুঙ্গি ইউনাইটেড মহিলা ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড়। কাকলী নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তার বাবা বৃদ্ধ মানুষ, ভ্যান চালান। কিন্তু এ বয়সে ঠিকমতো চালাতে পারেন না। ভ্যানই একমাত্র আয়ের উৎস তাদের। আর তার মা চা বিক্রি করেন।

একজন কাকলী, যে একটি হতদরিদ্র পরিবারে সংঘাতময় পরিবেশে বেড়ে উঠেও নিজ লক্ষ্যে অবিচল থেকেছেন। তার দৃঢ় মনোবোল, ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম, আর আত্মবিশ্বাস অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে সহায়তা করেছে। কাকলী প্রান্তিক মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে আগামী দিনগুলোতে।

এমন খুশির খবর শুনে রাণীশংকৈল পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ‘আমার পৌরসভার এক হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান কাকলী।
তার মা চা বিক্রি করে তাদের সংসারের খরচ চালিয়েছে। আজ সে ফুটবলের উচ্চ প্রশিক্ষণের জন্য পর্তুগাল যাচ্ছে, বিষয়টি আমাদের পৌরসভার জন্য খুবই খুশির সংবাদ।


আরো পড়ুন:


 


সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ যা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পেছনে ‘কিছু একটা ঘটেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন,‘নিশ্চয়ই কিছু একটা ঘটেছে, এটা আমার বিশ্বাস। না হলে এতগুলো প্রাণ যায় না।’


আজ মঙ্গলবার পুরান ঢাকায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে অগ্নিনির্বাপককর্মী শাকিল তরফদারের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।


কীভাবে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কার গাফিলতি , স্যাবোট্যাজ বা উদ্দেশ্যমূলক কি না জানতে এনকোয়ারি করতে হবে।’


এই দুর্ঘটনার পেছনে ‘পাওয়ারফুল’ কেউ থাকলে শাস্তি হবে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পাল্টা প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোনোদিন কাউকে ছাড় দিয়েছেন? যারই সংশ্লিষ্টতা থাকুক শাস্তি পেতে হবে।’ 


সীতাকুণ্ডে এতজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীর প্রাণহানির পর ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়ন, আরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলে মনে করেন কি না এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, ‘এখনকার ফায়ার সার্ভিস আগের মতো নয়। এখন তারা আর ঘন্টিবাজানো বাহিনী নয়, একটি অত্যাধুনিক বাহিনী। আগে আগুন নেভার পর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে হাজির হতো। এই বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে সরকার। সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও কাজ চলছে।’


ডিপোতে আগুন নিয়ন্ত্রণে অগ্নিনির্বাপকবাহিনীর সাহসিকতার প্রশংসা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অকুতোভয় বলেন তিনি। সিলেটে জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযান ও এফ আর টাওয়ারে ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তাঁরা জীবনের পরোয়া করেন না, ডাক আসলে এক মুহূর্ত দেরি করেন না।’

গত শনিবার রাতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার ৬১ ঘণ্টা পর আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানান ঘটনাস্থলে উপস্থিত সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম। 

এই অগ্নিকাণ্ডে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।

এর আগে কলকারখানায় আগুন লাগলেও এবারই প্রথম ফায়ার সার্ভিসের এত কর্মীর প্রাণহানি ঘটল। এখন পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যুর খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বাহিনীটি।

মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন তিনজন। তা ছাড়া মুমূর্ষু অবস্থায় আরও দুজন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

আরো পড়ুন:

  1. ফেনীর ফুলগাজীতে দুই মহিলা ছিনতাইকারী গ্রেফতার
  2. Afran Nisho: ভারতীয় ওয়েব সিরিজে আফরান নিশো
  3. জয়নাল হত্যা মামলার সব আসামি খালাস; পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ
  4. ফেনীর দাগনভূঁঞায় মোটরসাইকেল চোরাই চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার 
  5. বালিয়াডাঙ্গীতে এক পরিবারের চার সন্তানই প্রতিবন্ধী
  6. পুতিনের বেপরোয়া পদক্ষেপ ইউরোপকে সরাসরি হুমকি দিচ্ছে 
  7. Russia Ukrain: বাংলাদেশি জাহাজে হামলার জন্য ইউক্রেনকে দুষছে রাশিয়া 
  8. সাড়ে ১২ কোটি মানুষ টিকার আওতায়
  9. নিয়ন্ত্রণহীন ভোজ্য তেলের বাজার
  10. ইউক্রেনে নাজুক অবস্থায় পড়ে গেছি: প্রতিমন্ত্রী

Holy Foods ads

Holy Foods ads

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget